স্ত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০১:১৯

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
নিহত মিরাজুল ইসলাম

স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বগুড়া সদরে মিরাজুল ইসলাম কাবিলা (২৮) নামে এক যুবককে মসজিদে ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বখাটেরা।

শুক্রবার ভোরে উপজেলার জিলাদারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মিরাজুল ওই এলাকার মৃত সাবদুল জিলাদারের ছেলে। তিনি পেশায় একজন মাংস ব্যবসায়ী ছিলেন।

নিহতের স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, দুই বছর আগে সুরাই খাতুনকে বিয়ে করেন মিরাজুল। তাদের বাড়ির পাশে সাগর ইসলামের মুদি দোকানে বসে বখাটেরা আড্ডা দেয়। প্রতিবেশী সোলেমান আলীর ছেলে আরিফুল ইসলাম ও সাগর ইসলাম, ইয়াছিন আলীর ছেলে থাই মিস্ত্রি আল-আমিন, আব্দুর রশিদের ছেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মো. রাব্বিসহ সাত-আটজন দীর্ঘদিন সুরাই খাতুনকে উত্ত্যক্ত করে আসছে। তাদের পরিবারকে জানানোর পর স্থানীয় সালিশে বখাটেরা আর উত্ত্যক্ত করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। গত বুধবার মিরাজুলের অনুপস্থিতিতে তারা সুরাইরার পথ আটকে শ্লীলতাহানি করে।

মিরাজুল বাড়িতে আসার পর বিষয়টি জানতে পেরে বখাটেদের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে সদর থানায় অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও বখাটেদের খোঁজ করে। এতে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়। শুক্রবার ভোরে সদরের গোদাপাড়া এলাকায় দোকানে যাওয়ার সময় বখাটেরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে মিরাজুলকে ধাওয়া করে। দৌড়ে তিনি স্থানীয় মসজিদে আশ্রয় নিলে সেখানে রামদা দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।

ওই মসজিদের মুয়াজ্জিন আসলাম হোসেন জানান, ফজরের নামাজের সময় মসজিদে এসে গোঙানির শব্দ ও মেঝেতে রক্ত দেখতে পান তিনি। এর পর মসজিদের মাইকে সহায়তা চাইলে মুসল্লি ও প্রতিবেশীরা মিরাজুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।

নিহতের স্ত্রী বলেন, এলাকার আরিফুল, সাগর, আল-আমিন, রাব্বিসহ সাত-আট যুবক প্রায় আমাকে উত্ত্যক্ত করত। আগে স্থানীয়ভাবে সালিশে বিষয়টি মীমাংসা হলেও, তারা দমেনি। বুধবার বাড়ির পাশে গেলে ওত পেতে থাকা ওই যুবকরা আমার পথ আটকে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। চিৎকার করতে গেলে মুখ চেপে ধরে শ্লীলতাহানি করে। স্বামীকে জানানোর পর সে থানায় অভিযোগ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই।

স্থানীয় এরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মিরাজুলের স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করা নিয়ে আগেই বখাটেদের সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তারা সংশোধন হয়নি। মিরাজুল হত্যায় তারা জড়িত থাকলে, বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহীনুজ্জামান জানান, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বখাটেদের ধরতে পুলিশ মাঠে নেমেছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

(ঢাকাটাইমস/০৩আগস্ট/পিএস)