উত্তরায় এরা কারা? কী পরিচয় এই অস্ত্রধারীদের?
প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:০৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি ঘিরে শুক্রবার রণক্ষেত্র হয় রাজধানীর উত্তরা এলাকা। পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বেশ কজন অস্ত্রধারীকে দেখা গেছে গুলি ছুড়তে। এদের অনেকের মাথায় ছিল হেলমেট। প্রশ্ন উঠেছে এসব অস্ত্রধারী কারা?
স্থানীয়রা জানান, জুমার পর সাধারণ মুসল্লি ও ছাত্রছাত্রীরা সরকারের কাছে দেওয়া তাদের নয় দফা দাবিতে মিছিল বের করেন। এসময় পুলিশ এসে তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে। কিছুক্ষণ পর পুলিশের সাথে যোগ দেন সরকার দলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
ছাত্র আন্দোলনের গণমিছিল কর্মসূচি সামনে রেখে এদিন দুপুর থেকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের জমজম টাওয়ারের সামনে অবস্থান নেন। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা মাইলস্টোন কলেজের সামনে অবস্থান নেন। এক পর্যায় আওয়ামী লীগ সমর্থকরা মাইলস্টোন কলেজের দিকে থাকা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন। এ সময় পুলিশও শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় এবং সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে ১০ ও ১১ নম্বর সেক্টরে। ওই সময় সাধারণ পোশাকে অস্ত্র হাতে অনেককে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। যাদের দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মনে হয়নি। স্থানীয় মানুষ ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, এরা সবাই সরকার দলীয় সংগঠনের নেতাকর্মী।
বাসাবাড়ি ভাঙচুর
আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে আশ্রয় নেন। এ সময় বেশির ভাগ বাসা-বাড়িতে ছাত্রছাত্রীদের না পেয়ে গেট, জানালা ও দরজা ভাঙচুর করা হয়। উত্তরার বাসা-বাড়ি ভাঙচুরের শিকার ভুক্তভোগীরা জানান, এসময় সবার হাতে ধারালো অস্ত্র ও মাথায় হেলমেট ছিল। কারো কারো হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। ফলে ভয়ে তারা কেউ বাধা দেননি।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, অন্তত তিন ব্যক্তির হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। এদের মধ্যে লাল হেলমেট ও কালো গেঞ্জি পরা এক যুবক পিস্তল তাক করে গুলি ছুড়ছেন। হেলমেট থাকার কারণে তার চেহারা দেখা যায়নি।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ওই যুবকের নাম হাফিজ উর রহমান। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-মানবাধিকার সম্পাদক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ সেশনের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। তবে ঢাকা টাইমসের পক্ষ থেকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
এছাড়া কালো পোলো-শার্ট ও জিন্স পরিহিত এক যুবককে শটগান থেকে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে। অপর আরেকজনকে হেলমেট পরা অবস্থায় পিস্তল হাতে দেখা গেছে। সাদা-নীল ফ্লোরাল শার্ট ও সাদা পোলো-শার্ট গায়ে দুই যুবককেও পিস্তল হাতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা অস্ত্রধারীদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেননি।
উত্তরায় সংঘর্ষের সময় অবৈধ অস্ত্র হাতে কেউ সেখানে ছিল কি না জানতে চাইলে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) লিটন কুমার সাহা গণমাধ্যমকে বলেন, এমন হওয়ার কথা না। যাচাই করতে পারেন, পুলিশ এখন এসব কাজে নেই, পুলিশ এখন এ রকম কোনো কাজ আর করছে না। পুলিশ আসামি ধরার জন্য, কাউকে হয়রানি করছে না। অবৈধ অস্ত্র হাতে কেউ সেখানে ছিল কি না বা গুলির ঘটনা ঘটলে সেটাও জানা যাবে। সত্যতা মিললে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(ঢাকাটাইমস/০৩আগস্ট/ইএস)