ইউনিসেফ ৩২ শিশু মৃত্যুর তালিকা দিলে ব্যবস্থা নেবে সরকার: তথ্য মন্ত্রণালয়
প্রকাশ | ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১৮:৩৭
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতায় অন্তত ৩২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা—ইউনিসেফ। এর প্রতিক্রিয়া সরকার বলছে,
ইউনিসেফের পক্ষ থেকে নির্ভরযোগ্য তথ্য সূত্রের উল্লেখসহ কোটা আন্দোলনের ৩২ জন শিশু মৃত্যুর তালিকা সরবরাহ করা হলে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শনিবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে শুক্রবার জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা (ইউনিসেফ)-এর দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক সঞ্জয় উইজেসেকেরার দেওয়া বিবৃতি বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
সঞ্জয় উইজেসেকেরার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জুলাই মাসে বিক্ষোভের সময় অন্তত ৩২ শিশু নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে ইউনিসেফ। এছাড়া অনেক শিশু আহত হয়েছে এবং অনেককে আটক করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের কাছে ৩২ জন শিশু নিহত হওয়ার এ মুহূর্তে কোনো তথ্য নেই। তাছাড়া ইউনিসেফের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালকের এ বিবৃতিতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য সূত্রের উল্লেখ নেই এবং নিহতদের নাম, পরিচয়, প্রোফাইল বা তালিকা উল্লেখ নেই। ইউনিসেফের পক্ষ থেকে নির্ভরযোগ্য তথ্য সূত্রের উল্লেখসহ ৩২ জন শিশু মৃত্যুর তালিকা সরবরাহ করা হলে বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিশুসহ বাংলাদেশের মানুষের অনাকাঙ্ক্ষিত একটি মৃত্যুও কোনোভাবেই সরকারের কাম্য নয় এবং কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনা স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে সরকার এর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।
এতে আরও বলা হয়, ইউনিসেফের বিবৃতিতে শিশু বেআইনিভাবে আটকের বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সরকারের সুস্পষ্ট বক্তব্য হলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জ্ঞাতসারে কোনো শিশুকে বেআইনিভাবে আটক করেনি। তদুপরি কোথাও এ সংক্রান্ত ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকলে তা জানা মাত্রই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, কোটা আন্দোলনের সহিংসতায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ সদস্য গিয়াস উদ্দিন হত্যা মামলায় ১৭ বছর তিন মাস আট দিন বয়সী এক কিশোরকে আইনের আওতায় নেওয়ার যে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে, সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বক্তব্য হলো, এই কিশোর সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মাতুয়াইল হাসপাতালের বিপরীত পাশে এক পুলিশ সদস্যকে মেরে ঝুলিয়ে রাখার মামলায় ১৭ জন আসামির মধ্যে ১৬ নম্বর আসামি। সর্বশেষ তার রিমান্ডের আবেদন বাতিলপূর্বক শিশু আইন অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে তাকে গাজীপুরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকার সব সময় শিশুদের ব্যাপারে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং শিশুদের অধিকার সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর। শিশুদের নিয়ে যে কোনো আন্তর্জাতিক আইন, সনদ বা ঘোষণা মেনে চলতেও বাংলাদেশ সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কয়েকজন শিশু নিহত হওয়ায় ঘটনায় সরকার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি শিশুদের হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। একইসঙ্গে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে যে কোনো অপপ্রচার বা গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সরকার আহ্বান জানাচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/০৩আগস্ট/এমআর)