চট্টগ্রামে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু
প্রকাশ | ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৩৪ | আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৩৬
চট্টগ্রামে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তি হলেন স্থানীয় মুদি দোকানদার মো. শহীদ (৪৫)।
শনিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। চান্দগাঁও থানাধীন বহদ্দারহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ রাত ১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সর্তক অবস্থানে আছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৮টায় আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পার্কভিউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টায় তিনি মারা যান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গুলিবিদ্ধ হয়েই তিনি নিহত হয়েছেন।
তবে, কী ধরনের বুলেটে তিনি বিদ্ধ হয়েছেন, সেটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার অপরাধ অভিযান আব্দুল মান্নান মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বহদ্দারহাটে পুলিশ কোনো গুলি ছোড়েনি। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে এবং লাঠিচার্জ করেছে। ওই ব্যক্তি কীভাবে মারা গেলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
এর আগে সন্ধ্যায় নগরীর ষোলশহর এলাকায় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাসভবনে হামলা চালানো হয়। সেসময় মন্ত্রীর বাসভবনে থাকা কয়েকটি গাড়ি ও বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুর করা হয়। এরপর রাত পৌনে ৮টার দিকে নগরীর বহদ্দারহাট মোড় এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনেও হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেই সময় তারা ওই এলাকায় গুলির শব্দ পান। ধারণা করা হচ্ছে, তখনই গুলিবিদ্ধ হন শহীদ। একই সময়ে মেয়রের বাসার আশেপাশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অবস্থান নিয়ে ছিলেন।
তারা আরও জানান, রাত ৮টায় বহদ্দারহাট মোড় এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেই সময় পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের।
তবে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর কবিরের দাবি, ‘কোনো ধরনের গুলি চালানো হয়নি। লাঠিচার্জ করে ও টিয়ারশেল ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে শিক্ষামন্ত্রী ও মেয়রের বাসায় হামলার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন এবং মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর বাসায়ও হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রামের লোহাগড়া থানায়ও হামলা হয়েছে। সেই সময় কয়েক শতাধিক মানুষ থানার কম্পাউন্ডে ঢুকে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে এবং ভবনের জানালার কাঁচ ভেঙে দেয়।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার বলেন, ‘হামলাকারীরা থানায় প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকা গুলি চালায়।’
সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
(ঢাকাটাইমস/০৪আগস্ট/এসআইএস)