নাশকতাকারীদের বিন্দুমাত্র ছাড় নয়: ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, আমাদের ব্যবস্থা গ্রহণ কোনো ছাত্রের বিরুদ্ধে নয়, কোনো ছাত্রীর বিরুদ্ধে নয়। আমাদের ব্যবস্থা গ্রহণ সন্ত্রাসী, নাশকতাকারী, অগ্নিসংযোগকারী ও পুলিশ হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে। তাদেরকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসেনা। একইসঙ্গে ঢাকা মহানগর বাসীকে কারফিউ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, কারফিউর সময় অপ্রয়োজনে কেউ যেন ঘর থেকে বের না হন। যারা হবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রবিবার রাতে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বলেন ডিএমপি কমিশনার।
হাবিবুর রহমান বলেন, 'আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল সেখানে আন্দোলনকারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দুর্বৃত্তরা ঢাকা শহর সাধারণ সারাদেশে নজিরবিহীন অরাজকতা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে। এ সহিংসতায় চরম জনদুর্ভোগের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ও হতাহতের মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। এতে সম্পদের অবর্ণনীয় ক্ষতি সহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে।
তিনি বলেন, 'সরকার সহানুভূতিশীল হয়ে আটক শিক্ষার্থীদের ইতিমধ্যে মুক্তি দিয়েছে। তারপরও শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বিএনপি, জামাত, শিবির নাশকতকারী চক্র গতকাল থেকে আবারো ভয়াবহ নাশকতা এবং সন্ত্রাস করছে। আজ ঢাকা মহানগর এর বিভিন্ন স্থানে তারা ভয়াবহ তাণ্ডব চালায়। ধানমণ্ডি, সাইন্স ল্যাব, শাহবাগ, প্রেসক্লাব, বাংলা মোটর, মোহাম্মদ, কাজলা এবং উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে নজিরবিহীন অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতা চালায়। রাজধানী বিভিন্ন পয়েন্টে অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র, ককটেলসহ সমাবেত হয়ে নিরহ জনগণ ও পুলিশের উপর আক্রমণ চালায়। তাদের তান্ডব থেকে রক্ষা পায়নি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালও। তারা মেডিকেল বিশব্বিদ্যালয় ভাংচুরসহ ভেতরে থাকা এম্বুলেন্স, গাড়ি ও মোটরসাইকেলে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে৷ তারা মেট্রোপলিটন আদালতে ভাঙচুর এবং সংযোগ করে। খিলগাও, যাত্রাবাড়ী ও শাহবাগ থানায় আক্রমণ করে এবং ঢাকার দশটি পুলিশ বক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। কয়েকটি পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। গুলি বর্ষণে তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। ওয়ারি বিভাগে ডিসি সহ মোটা করার জন্য পুলিশ সদস্য আহত হয়। তাদের নাশকতামূলক এ সমস্ত কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে তারা কেউই ছাত্র না, সন্ত্রাসী, তারা জঙ্গী তারা আইনবিরোধী।'
ডিএমপি কমিশনার বলেন, 'কোটা আন্দোলনের শুরু থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ চরম ধৈর্য ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। মানুষের নিরাপদে চলাচলের জন্য এ সময় ঢাকা পুলিশের মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। এই পরিস্থিতিতে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রায় সাড়ে তিনশ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে এবং তিনজন সদস্য নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। আজকেও সিরাজগঞ্জ জেলার ১৩ জন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। গতকাল মেট্রোপলিটনের একজন পুলিশ সদস্যদের সাপ মারার মত পিটিয়ে হত্যা করেছে। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যে কার্যক্রম করছে এটিতে আমাদেত পেশাগত দায়িত্ব যে পালনে যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার সেটি যথাযথভাগে গ্রহণ করা হবে। আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকসহ অনেকের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এজন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি আপনারা সেটা জানেন।'
সবশেষে তিনি বলেন, 'সারা বাংলাদেশে কারফিউ চলছে আমি ঢাকা মহানগরী বাসীকে সবিনয়ে অনুরোধ জানাতে চাই তারা যেন কারফিউয়ের নিয়মকানুন মেনে চলেন এবং কোনো অবস্থাতেই ঘর থেকে বাহির না হন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার জন্য এবং পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য নগরবাসীর প্রতি আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
(ঢাকাটাইমস/০৪আগস্ট/এলএম/কেএম)