ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রাফিকের ভূমিকায় শিক্ষার্থীরা, ঠেকাচ্ছেন ভাঙচুর-লুটপাট
প্রকাশ | ০৭ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৪৪
মুখে বাঁশি নিয়ে দুহাত মেলে ধরে ঈশারায় সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছেন এক ঝাঁক শিক্ষার্থী। মানুষের চলাচলে যেন অসুবিধা না হয় এবং সড়কে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য সেনাবাহিনীকে সাময়িক সহায়তার উদ্দেশ্য মাঠে নেমেছেন তারা। পাশাপাশি বিভিন্ন দোকানপাটে লুটপাট ও ভাঙচুর ঠেকাতেও দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে ঠাকুরগাঁও বাসস্ট্যান্ড চত্বরে পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও- ঢাকা মহাসড়কে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশি ফুকিয়ে যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন শিক্ষার্থীরা। কিছু শিক্ষার্থীর হাতে আবার মাইক। তারা সবাইকে আহ্বান করছেন, যাতে সড়কে শৃঙ্খলতা বজায় থাকে। কারও জানমালের ক্ষতি সাধন যেন কেউ না করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী মোহম্মদ রনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন সফল হয়েছে। যারা আন্দোলনের বিজয় ভিন্নখাতে নিয়ে বিভিন্ন বাসা ও দোকানে অগ্নিসংযোগ-লুটপাট করছে, আমরা তাদের প্রতি নিন্দা জানাই। আজ আমরা সেনাবাহিনীকে সহায়তা করছি। সড়কে যেন যানজট ও বিশৃঙ্খলা না হয়, সেজন্য কাজ করছি। আশা রাখি খুব শিগগিরই দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
শিক্ষার্থী মুন্না বলেন, ‘যেহেতু মাঠে এখন ট্রাফিক পুলিশ নেই, আমরা চেষ্টা করছি ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে কিছুটা কাজ করার।’
শিক্ষার্থী ইদ্রিস আলী বলেন, ‘আমরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা যেহেতু বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট ঠেকাতে ছুঁটছেন, তাই আমরা সেনাবাহিনীকে সাময়িক সহযোগিতা করছি। যেখানে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটছে যেমন, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, লুটপাট চলছে সেটা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত কর্মকর্তা তাদের হটলাইন নাম্বার দিয়েছে। আমরা সে নাম্বার সম্বলিত কাগজ ও ও সেনাবাহিনীর বার্তা প্রিন্ট করে জনগণের হাতে হাতে পৌঁছে দিচ্ছি।’
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ঠাকুরগাঁওয়ের সদস্য সচিব মাহাবুব আলম রুবেল বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যারা অরাজকতা করছে তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে শক্ত অবস্থান নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নেওয়াটা জরুরি। আমাদের ছাত্ররা যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আন্দোলন করেছে, তা যেন নষ্ট না হয় সেনাবাহিনী অবশ্যই সেটি অক্ষুণ্ন রাখবে এটা আমার বিশ্বাস।’
জহির ইসলাম বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করেছি একটা শান্তিশৃঙ্খল দেশের জন্য। লুটপাট অরাজকতা যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার। যেহেতু মাঠে এখন পুলিশ নেই, আমরা সেনাবাহিনীকে সহায়তা করছি।’
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বেলায়াত হোসেন বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে সবাই যেন শান্ত থাকেন। শিক্ষার্থীরা যেমন করে নাশকতা ঠেকাতে এগিয়ে এসেছেন, তেমন করে সবাইকে সচেতনতার সঙ্গে এগিয়ে আসার আহ্বান করছি।’
(ঢাকাটাইমস/০৭আগস্ট/এজে)