কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা না দেওয়ার অভিযোগ সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা
 | প্রকাশিত : ০৭ আগস্ট ২০২৪, ২৩:১১

২০১৬ সালে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালীতে স্থানীয় ১০-১২ জন জমির মালিকের কাছ থেকে লিজ নিয়ে ৪৮ বিঘা জমির ওপর কাঁকড়া ও কুঁচের খামার গড়ে তুলেছিলেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। নাম দেন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম।

অভিযোগ রয়েছে, কাঁকড়া হ্যাচারিতে সফট সেল কাঁকড়া নিলেও আজও টাকা পরিশোধ করেননি ক্রিকেটার ও সদ্য বিলুপ্ত সংসদের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান। তার কাছে কোটি টাকারও বেশি পাওনা রয়েছে বলে দাবি করেছে সাকিবের হ্যাচারিতে সফট সেল কাঁকড়া সরবরাহকারী মুন্সিগঞ্জ এলাকার জুলফিকার আলী।

তিনি বলেন, "২০২১ সালে খামারটি বন্ধ হওয়ার পরে নানাভাবে আমরা চেষ্টা করেছি টাকা আদায় করতে। তবে কোনোভাবেই আদায় করতে পারিনি। বছর খানেক আগে মাগুরায় সাকিব আল হাসানের বাড়িতে গিয়েছিলাম তার বাবার কাছে। আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল। তারপর থেকে বিষয়টি সেভাবেই রয়েছে। টাকা পাবো তার মেমো বা প্রমাণপত্র এখনো রয়েছে।"

জুলফিকার আলী বলেন, আমি এখনো ৫-৬ লাখ টাকা পাবো। ‘"আমরা কাঁকড়া দিয়ে মাস শেষে টাকা নিতাম। হিসাব রাখতো সাকিবের খামারের দায়িত্বরত ম্যানেজার। এভাবে চলতে চলতে আমার প্রায় তিন মাসের টাকা দেয়নি। সব তথ্য প্রমাণ থাকলেও আমি টাকা পাইনি। এমনকি সাকিব আল হাসানের কাছে পাওনা ৩০ লাখ টাকার শোকে মারা গেছেন বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ভামিয়া গ্রামের গুরু দাস। তারা বড় পর্যায়ের মানুষ ছিল এখানে আসতো না। গুরু দাস হার্ড কাঁকড়া দিতেন সাকিবের খামারে। ৩০ লাখ টাকা বাকি পড়ে তার। গুরু দাস ও আমিসহ ৪-৫ জন সাকিবের বাড়িতে গিয়েছিলাম। বাড়ি থেকে সাকিবের বাবা খারাপ ব্যবহার করে বের করে দেওয়ার পর মন খারাপ করে আমরা ফিরে আসি।

তিনি আরও বলেন, গুরুদাসের ব্যবসা ভালো যাচ্ছিলো না। অন্যরা তার কাছে টাকা পাবে। এদিকে সাকিবের কাছে পাওনা টাকাও পাচ্ছিল না। এই সব নিয়ে চিন্তায় স্ট্রোক করে মারা যান গুরুদাস। আমরা ১৩-১৪ জন এখনো সব মিলিয়ে কোটি টাকারও বেশি পাবো ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কাছে। আমরা আমাদের পাওনা টাকা ফেরত চাই।

বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন ইউপি সদস্য হায়দার আলী বলেন, আমি সফট সেল কাঁকড়া দেওয়ার ৫০ হাজার টাকা আজও পাবো। আমার টাকা একটু কম হলেও অন্য পাওনাদাররা মোটা অঙ্কের টাকা পাবেন।

করোনাকালীন সময়ে সাকিব আল হাসানের কাঁকড়া হ্যাচারি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর জমির মালিকদের বছরে চুক্তির টাকা দিতেও গড়িমসি করে। তখন মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন তারা। এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর জমির মালিকরা টাকা পান।

জমির মালিকদের একজন দাতিনাখালি গ্রামের মোরালী কয়াল। তিনি বলেন, "টাকা পেতে অনেক ঝামেলা হয়। আগে টাকা নিতে গিয়ে আন্দোলন করতে হয়েছে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত চুক্তিপত্রের মেয়াদ রয়েছে। এরপর আমরা আর কেউ জমি লিজ দেব না। আমরা জমির মালিক রয়েছি ১০-১২ জন।"

মোরালী কয়াল অভিযোগ করে বলেন, ‘অবৈধভাবে আমাদের জমির উপর বিল্ডিং নির্মাণ করেছে। চুক্তিপত্রে সেটি উল্লেখ ছিল না। এখন সেখানে কেউ থাকে না। খামার বন্ধ হওয়ার পর থেকে তাদের এখানে দেখাও যায় না। সেভাবে পড়ে রয়েছে।

ঢাকাটাইমস/০৭আগস্ট/পিএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :