অন্তর্বর্তী সরকারের চার নারী উপদেষ্টা যেসব মন্ত্রণালয় সামলাবেন
প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০২৪, ১৭:৩৪
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করেছেন। এর মধ্যে চারজন নারী উপদেষ্টা পেয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, সমাজকল্যাণ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ দায়িত্ব বণ্টন করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের ১৭ উপদেষ্টার মধ্যে রয়েছেন চারজন নারী উপদেষ্টা— সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ফরিদা আখতার, শারমিন মুরশিদ এবং নূরজাহান বেগম।
পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়:
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পেয়েছেন পরিবেশবান ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৩ সালে আইন বিষয়ের স্নাতক উত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন এবং ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে হাইজেন হাওয়ার ফেলারসিপ সম্পন্ন করেন। তিনি ফ্রেন্ডস অফ আর্থ ইন্টারন্যাশনাল এবং আইইউসিনের নির্বাহী সদস্য। সৈয়দ আলী জোয়ান হাসান পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টির স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৭ সালে জাতীয় পরিবেশ পদক,২০১২ সালে র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার এবং প্রথম বাংলাদেশে হিসেবে ২০০৯ সালে পরিবেশ নোবেল খ্যাত গোল্ডম্যান এনভারমেন্টাল প্রাইভেট ভূষিত হন। ২০০৯ সালে টাইম সাময়িকী তাকে হিরোজ অব এনভারমেন্ট খেতাবে ভূষিত করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়:
সরকারি সংস্থা উবিনীগ (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) এর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার পেয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেছেন। তাঁর জন্ম চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ থানার হারলা গ্রামে। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের অবস্থা জানা এবং পরিবর্তনের জন্য নীতিনির্ধারণী গবেষণা ও লেখালেখিই তাঁর কাজের প্রধান জায়গা। বর্তমানে তিনি উবিনীগ (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) এর নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে নারী ও গাছ, কৈজুরী গ্রামের নারী ও গাছের কথা। তিনি নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য সম্পদ, তাঁত শিল্প, গার্মেন্টস শিল্প ও শ্রমিক, জনসংখ্যা এবং উন্নয়নমূলক বিষয়ে নিবিড়ভাবে দীর্ঘ প্রায় তিন দশক ধরে কাজ করছেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়:
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পেয়েছেন ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন এস মুরশিদ। তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের সময় নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার ও নানা অনিয়ম নিয়ে কথা বলেন। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে তাঁর মতামত ও পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে প্রচার হয়। সর্বশেষ ৭ জানুয়ারি ২০২৪ এর নির্বাচন বিষয়ে আমেরিকার একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, 'আমি এই নির্বাচনকে নির্বাচন বলি না।' বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়:
নূরজাহান বেগম পেয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তিনি নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, যে দায়িত্ব তিনি পেয়েছিলেন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরুর সময় থেকে অধ্যাপক ইউনূসের প্রথম সারির সহযোগীদের একজন ছিলেন। তিনি বিভিন্ন দেশে মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রামের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক এবং মূল্যায়নকারী হিসাবে কাজ করেছেন এবং বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, সম্মেলন এবং সেমিনারে বক্তৃতা দিয়েছেন। তিনি গ্রামীণ ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার বোর্ডেও দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০০৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত ফরচুন মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন সামিটে অংশগ্রহণ করেন এবং স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় অনুষ্ঠিত ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতি নিযুক্ত হন ২০০৭ সালে।
(ঢাকাটাইমস/০৯আগস্ট/জেআর/এমআর)