ভিডিও ভাইরাল: নোয়াখালীর ঘটনাটি ছিল দাম্পত্য কলহের
প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০২৪, ২৩:১৭
এক নারীকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তোলা একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ এটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা বা সহিংসতা বলে উল্লেখ করছেন। নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় বৃহস্পতিবারের এই ঘটনাটি মূলত সাম্প্রদায়িক হামলা ছিল না বলে জানিয়েছে ওই নারীর পরিবার। তার বাবা ও গ্রামবাসী জানান, এ ঘটনা দাম্পত্য কলহকে ঘিরে। ওই নারীকে অপহরণের চেষ্টা করেছিলেন তার স্বামী, তবে তিনি তা পারেননি।
ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি জোর করে রাস্তায় থামানো একটি মাইক্রোবাসে নারীকে ওঠানোর চেষ্টা করছেন। গ্রামবাসী জানায়, দাম্পত্য বিরোধের জেরে স্বামীর ঘর থেকে বাবার বাড়িতে চলে এসেছিলেন ওই নারী। তাকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন তার স্বামীসহ কয়েকজন ব্যক্তি। তখন ওই নারীর চিৎকার শুনে গ্রামবাসী এগিয়ে আসেন। তারা মাইক্রোবাসটি ভাঙচুর করেন। এ সময় ওই নারীর স্বামীসহ তিনজনকে তারা আটক করেন। আটক ব্যক্তিদের সেনাবাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানায় গ্রামবাসী।
ওই নারীর বাবা বলেন, তার মেয়ের প্রায় চার বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মেয়ের স্বামী তার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। তিনি তিন লাখ টাকা যৌতুক দিলেও তার মেয়ের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলতে থাকে। দুই বছর আগে ওই নারী স্বামীর ঘর থেকে চলে আসেন। এরপর এক সালিস বৈঠকে দুজনের বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। বিচ্ছেদ কার্যকরের আগে ওই নারীকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধের কথা ছিল বলে জানান তার বাবা। তিনি বলেন, টাকা পরিশোধে অস্বীকৃতি জানানোর পর তার মেয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
মামলায় হাজিরা দিতে এসে দেড় মাস আগেও একবার স্বামীসহ কয়েকজন আদালত চত্বর থেকে মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা করেছিলেন জানিয়ে ওই নারীর বাবা বলেন, তখন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে তার মেয়ের রক্ষা হয়। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবারও দুটি মাইক্রোবাসে করে ১৭-১৮ জনের একটি দল তার বাড়িতে হানা দিয়ে মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা করেন।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি দাম্পত্য কলহকে ঘিরে সংঘটিত ঘটনা। এলাকার সব ধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে অপহরণের চেষ্টাকারীদের প্রতিহত করেছেন। এ সময় তিনজনকে আটক করা সম্ভব হলেও বাকিরা পালিয়ে গেছেন।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন বলেন, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। তারা (পুলিশ সদস্য) দায়িত্ব পালনে বিরত থাকার কারণে সেখানে যাননি। শুনেছেন আটক ব্যক্তিরা সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/০৯আগস্ট/কেএম)