অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে প্রবাসী শিক্ষার্থীদের স্বদেশ ভাবনা
প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২৪, ০০:২১
শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে পতন হলো সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের। নতুন করে স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ায় সর্বত্রই যেন উচ্ছাস বিরাজমান।
দেশের ছাত্র-জনতার বিপ্লবে পাওয়া স্বাধীনতা ও বিজয় উৎসবের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রতিটি দেশে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মাঝেও।
এরইমধ্যে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধান করে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যাতে তরুণ শিক্ষার্থীদেরও রাখা হয়েছে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে। যেন শিক্ষার্থী ও তরুণদের দ্বিগুণ শক্তি ও উচ্ছ্বাসের যোগান দিয়েছে।
দেশের এই নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও তরুণরা। জানিয়েছেন দেশকে নিয়ে তাদের ভাবনা ও পরিকল্পনার কথা।
ইউনিভার্সিটি পূত্রা মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, মাহসা ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত মেধাবী তরুণ বশির ইবনে জাফর বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি দেশের দীর্ঘমেয়াদি সার্বিক উন্নয়ন কিভাবে সম্পন্ন করা যায় সেটির দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণা বা রিসার্চ ভিত্তিক কারিকুলাম প্রণয়নে এগিয়ে আসতে হবে যা আধুনিক দেশগুলোর শিক্ষাব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রাধান্যের শীর্ষে রাখা হয়েছে।’
বশির বলেন, ‘প্রফেসর ইউনুস বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ শিক্ষিত একজন সরকারপ্রধান সুতরাং তিনি এই দিকটি ভালোভাবেই মেইনটেইন করতে সচেষ্ট হবেন।’
ইউনিভার্সিটি মালায়ার মেধাবী শিক্ষার্থী মো. মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি বিশেষ মনিটাইজেন এর মাধ্যমে এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রজেক্ট হিসেবে অন্তত গ্রামের সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের দক্ষ করে তোলার জন্য এবং অর্থনৈতিকভাবে তারা যাতে সচ্ছল হতে পারে সেই জন্য সেমিনার বা সংঘঠন গড়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে করে শিক্ষার্থীরা যেমন আয় করতে পারবেন তেমনি দেশের মানবশক্তির একটি বড় পরিবর্তন আসবে। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থেকে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে উদ্ভূত হবে।’
পারডানা ইউনিভার্সিটির প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুর রহিম বলেন ‘সরকারকে প্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও যোগ্য লোকদের পদায়নের মাধ্যমে পুরো দেশকে আধুনিক বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিতে হবে।’ তাছাড়া সকল সেক্টরের দায়িত্বশীলদের জবাবদিহিতার আওতায় রাখার উদ্যোগও নিতে হবে তবেই দেশ এগিয়ে যাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।’
লিংকন ইউনিভার্সিটির বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইজা হুমাইরা জানান, দেশকে এগিয়ে নিতে রাষ্ট্রের সকল মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে তরুণরা আরো নির্ভয়ে অন্যায় অনাচারের বিরুদ্ধে সতা সোচ্চার হবার বার্তা নিয়ে জেগে থাকতে পারবে।’ এছাড়া শিক্ষিত তরুণদের কর্মসংস্থানবৃদ্ধির জন্য প্রফেসর ইউনুসের যুগান্তকারী ‘মাইক্রো ফিন্যান্স’ দেশে একটি আমূল পরিবর্তন আনবে বলে তিনি আশা রাখেন।
সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী এমডি রফিকুল ইসলাম নতুন সরকারের প্রতি প্রত্যাশা জানিয়ে বলেন, ‘প্রত্যেক ব্যক্তির যেন তার দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহীতার ভয় থাকে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলেই দেশ এগিয়ে যাবে। কমে আসবে দুর্নীতির অপচেষ্টা। এটিকে এতোটা কঠোরভাবে কার্যকর করতে হবে যেন নির্বাচিত সরকার এলেও চর্চাটি ব্যহত হবে না।’
মাহসা ইউনিভার্সিটি থেকে আরেক শিক্ষার্থী তৌফিকুর রহমান মাহফুজ জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বপ্রথম কাজ হতে পারে দেশের টাকাগুলো যারা বিদেশে পাচার করে নিয়ে চলে গেছে, বিদেশে বিশাল বিশাল সম্পদ গড়েছে তাদের টাকাগুলো ফিরিয়ে আনা এবং তাদেরকে বিচারের সম্মুখীন করা। আর প্রবাসী জনশক্তিকে দেশের প্রতি সর্বদা ইতিবাচক রাখবে বিমানবন্দরের হয়রানি বন্ধ ও টিকেট সিন্ডিকেট বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া।
(ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/এসআইএস)