জাতীয় দৈনিকগুলোর প্রধান সংবাদ: ‘শেখ হাসিনাকে নিয়ে মহাসংকটে ভারত’
প্রকাশ | ১১ আগস্ট ২০২৪, ১১:০৭ | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২৪, ১১:১০
সমকালের প্রথম পাতার খবর, ‘শেখ হাসিনাকে নিয়ে মহাসংকটে ভারত’। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এটা নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, বাংলাদেশ নিয়ে নয়াদিল্লি এখন ‘প্রবল কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের’ মুখোমুখি হচ্ছে।
শেখ হাসিনার পতনের ঘটনায় প্রতিবেশী ভারতে শঙ্কা তৈরি করেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে মোকাবিলা করতে এবং ইসলামঘেঁষা বিকল্পকে রোধ করতে শেখ হাসিনাকে সমর্থন করেছিল নয়াদিল্লি।
তবে বাংলাদেশের নতুন নেতা ড. ইউনূস বন্ধুত্বের বার্তা জানিয়ে ইকনোমিস্ট ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘যদিও কিছু দেশ, যেমন– ভারত, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করেছে এবং এর ফলে বাংলাদেশি জনগণের শত্রুতা অর্জন করেছে। তবে এই ধরনের তিক্ততা সারানোর অনেক সুযোগ থাকবে।’
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার ক্ষমতা গ্রহণের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে ‘শুভেচ্ছা’ জানিয়ে বলেছেন, নয়াদিল্লি ঢাকার সঙ্গে কাজ করতে ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।
চীনও ঢাকার নতুন কর্তৃপক্ষকে স্বাগত জানাতে তৎপর ছিল এবং বলেছে, বেইজিং সম্পর্কের ‘উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়’।
যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম, ‘পালিয়েছেন ৯০ মন্ত্রী-এমপি’। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের দেশ ছেড়ে পালানোর হিড়িক পড়েছে। কেউ দেশ ছাড়ছেন একা, কেউ আবার সপরিবারে।
অনেকে ভয়ে দেশের অভ্যন্তরে আত্মগোপনে চলে গেছেন। শুধু মন্ত্রী-এমপি বা প্রভাবশালীই নয়, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারাও ভয়ে আত্মগোপনে গেছেন। এই তালিকায় আছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় গত ১৪ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ২৭ দিনে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ৯০ জন সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও রাজনৈতিক নেতা। এছাড়া বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে অন্তত ১০ জন মন্ত্রী-এমপি ও প্রভাবশালীদের।
বিমানবন্দরে এসেও পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ফিরে গেছেন কমপক্ষে ২৫ জন মন্ত্রী-এমপি, রাজনৈতিক নেতা ও দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা। শাহজালাল বিমানবন্দরসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এদের অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দেশ ত্যাগ করেছেন।
এদিকে সরকার পতনের একদিন পর থেকে ছয়ই আগস্ট শাহজালালসহ দেশের সবগুলো বিমানবন্দরে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
হাসিনা সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, জাতীয় সংসদের এমপি, সংসদীয় কমিটিগুলোর সভাপতি এবং প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা দলবাজ কর্মকর্তাদের নামও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে।
বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে প্রথম পলাতক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ১২ জন গভর্নর দায়িত্ব পালন করেছেন।
এর মধ্যে আটজন ছিলেন সরকারের আমলা। বাকি চারজন গভর্নর শিক্ষাবিদ কিংবা ব্যাংকার।
গত ৫৩ বছর গভর্নর পদে দায়িত্ব পালনকারীদের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আব্দুর রউফ তালুকদারই একমাত্র গভর্নর, যিনি সরকার পতনের পর লাপাত্তা হয়েছেন।
দায়িত্ব পালনকারী ১১ জনের কাউকেই সরকার পতনের পর পদত্যাগ করেননি বা পালিয়ে যাননি।
এমনকি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট এক সামরিক অভ্যুত্থানে সেদিন সপরিবারে নিহত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন এ কে এন আহমেদ। বঙ্গবন্ধু সরকারের নিয়োগ দেয়া সে গভর্নর ১৯৭৬ সালের ১৩ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার উৎখাতের ৪৯ বছর পর ৫ আগস্ট পতন ঘটে তারই কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের। ওইদিন থেকেই পলাতক ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের নিয়োগ দেয়া গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। শেষ পর্যন্ত অজ্ঞাত স্থান থেকেই শনিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র পাঠান প্রবল প্রতাপ দেখানো এ গভর্নর।
গভর্নর হওয়ার পর আব্দুর রউফ তালুকদারের গৃহীত অনেক সিদ্ধান্তই ছিল রাজনীতি প্রভাবিত। তিনি চিহ্নিত দুর্বৃত্তদের ব্যাংকের অর্থ লুটপাটে সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম, ‘বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করলেন প্রধান বিচারপতিসহ ছয় বিচারক’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শনিবার প্রধান বিচারপতির পদ ছেড়েছেন ওবায়দুল হাসান। এর পরপরই আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারকও পদত্যাগ করেন।
প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল দুপুর আড়াইটার দিকে ভিডিও বার্তা দেন।
সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান বিচারপতি কিছুক্ষণ আগে পদত্যাগ করেছেন। উনার পদত্যাগপত্র এরিমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে এসে পৌঁছেছে। এটা উপযুক্ত প্রসেসিংয়ের (প্রক্রিয়ার) জন্য আমরা কালবিলম্ব না করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেব এবং আশা করব যে খুব দ্রুত কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।’
প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে সুপ্রিম কোর্টের একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, ‘প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তাঁর পদত্যাগপত্রে বলেছেন, “সুপ্রিম কোর্ট বিল্ডিং এবং এর রেকর্ডগুলো রক্ষা, কোর্ট প্রাঙ্গণ রক্ষা, বিচারপতিদের বাড়িঘর, জাজেস টাওয়ার রক্ষা, বিচারপতিদের শারীরিক হেনস্তা থেকে রক্ষা করা, জেলা জজকোর্টগুলো ও রেকর্ডরুমগুলো রক্ষার স্বার্থে আমাকে এই (পদত্যাগের) সিদ্ধান্ত নিতে হলো”।
শনিবার সকালে আদালতের দুই বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে ফুলকোর্ট সভা করার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে তা স্থগিত করা হয়।
দ্য ডেইলি স্টারের প্রথম পাতার খবর, ‘Resignations until now’ অর্থাৎ ‘এখন পর্যন্ত যারা পদত্যাগ করেছেন’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ শনিবার পদত্যাগ করেছেন।
একই দিন বাংলা একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ আসকারী এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুরও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাসের একাধিক প্রভোস্টও গতকাল পদত্যাগ করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাবির পূর্ণাঙ্গ প্রক্টরিয়াল টিম তাদের পদত্যাগপত্র জমা দেয়।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে এ পর্যন্ত পাঁচটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা পদত্যাগ করেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের আন্দোলনকারীরা তাদের আন্দোলনের শুরু থেকেই অনেক ভিসির পদত্যাগ দাবি করে আসছে।
প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম, ‘আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করার জন্য যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেসবের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার ব্যবস্থা করাসহ পাঁচটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
বিচারের প্রক্রিয়া কী হবে, তা নিয়ে আজ আইন মন্ত্রণালয়ে সভায় সিদ্ধান্ত হবে।
এ ছাড়া সন্ত্রাস দমন আইন এবং সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে।
একই সঙ্গে পহেলা জুলাই থেকে ৫ ইআগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে যেসব ফৌজদারি মামলা হয়েছে, সেগুলো তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইতিমধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলে শনিবার রাতে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
শনিবার সচিবালয়ে আইন ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দায়িত্ব নেওয়ার পর গতকালই প্রথম সচিবালয়ে অফিস করেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর, ‘থানায় দাপ্তরিক কাজ শুরু, মাঠে নামেনি পুলিশ’।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় ৫৩৮টি থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই থানাগুলোর নিরাপত্তায় সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়।
এভাবেই ধীরে ধীরে কর্মবিরতিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা কাজে যোগ দিতে শুরু করেছেন।
তবে থানায় দাপ্তরিক কাজ চললেও এখন পর্যন্ত মাঠে নামেননি কোনো পুলিশ সদস্য। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, মাঠের কাজ শুরু করা নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন।
কাজেই নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নামতে এখনো দু-এক দিন সময় লাগবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও প্রাণহানি ঘটে।
শেষ তিন দিন (শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে-পরে) থানা, ফাঁড়িসহ পুলিশের বেশ কিছু স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সারা দেশে পুলিশি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ সদস্যরা থানায় আসতে সাহস পাননি।
এরপর নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন বাহিনীর অধস্তনেরা।
পুলিশ সদস্যদের দাবি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রাজনীতিবিদদের তাঁবেদারি করার কারণে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুলিশ। তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সরকারকে বাঁচাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর হুকুম দেন।
ধীরে ধীরে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকলে সাধারণ মানুষ সরকার ছেড়ে পুলিশকে প্রতিপক্ষ মনে করতে থাকে। তাই তারা পুলিশে সংস্কার চান।
মানবজমিনের প্রথম পাতার খবর, ‘শান্ত হয়ে আসছে দেশ, গুজব স্থবিরতার নেপথ্যে কারা?’
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, রক্তাক্ত একটি অধ্যায় পেরিয়ে ক্রমশ শান্ত হয়ে আসছে বাংলাদেশ। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কাজ শুরু করেছে। উপদেষ্টারা অফিস করছেন।
সশস্ত্র বাহিনী জনগণের নিরাপত্তায় কাজ করছে। থানা সক্রিয় হচ্ছে। পুলিশের অনেকে কাজে ফিরেছেন।
তবে দেশে স্থবিরতা কাটেনি। গুজব মেশিন সক্রিয়। মিনিটে মিনিটে নানা গুজব ছড়াচ্ছেন তারা। বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ায়। সূত্রগুলো বলছে, একধরনের অস্থিরতা তৈরির চেষ্টার অংশ হিসেবেই এটা করা হচ্ছে।
প্রশাসন এখনো পুরোমাত্রায় কাজে ফেরেনি। সেখানেও একধরনের শৈথিল্য বহাল রাখার চেষ্টা চলছে। পুলিশ বাহিনীকে নিয়েও নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। যেন তারা পুরোপুরি সক্রিয় না হয়।
এর বাইরে ‘সংখ্যালঘু’ ইস্যুটি সামনে আনার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। এ লক্ষ্যে প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। ঢাকায় তাদের বড় জমায়েতের চেষ্টা চালাচ্ছে একটি মহল।
সোমবার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও। তাদের বসত বাড়িতেও হামলা হয়েছে।
যেসব আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় হামলা হয়েছে তাদের কেউ কেউ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। ঢাকার একজন বিশ্লেষক বলেন, দৃশ্যত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ হিসেবে কারও বাড়িতে হামলা হয়েছে- এমন প্রমাণ পাওয়া যায় না। মূলত আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ার কারণেই তাদের বাড়িতে হামলা হয়েছে।
নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম, ‘ড্রোন হামলায় ২০০ রোহিঙ্গা নিহত’। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ক্যাম্প থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা রোহিঙ্গাদের ওপর ড্রোন হামলা চালিয়ে অন্তত ২০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে পরিবারের সাথে থাকা শিশুরাও আছে। রয়টার্সের বরাতে এই খবর প্রকাশ করেছে নয়া দিগন্ত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, কাদার মধ্যে লাশের পর লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাদের স্যুটকেস ও ব্যাকপ্যাক চার পাশে পড়ে রয়েছে।
সোমবার সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা পরিবারগুলোর ওপর এ হামলা চালানো হয়।
চারজন প্রত্যক্ষদর্শী, মানবাধিকার কর্মী ও একজন কূটনীতিক এ ড্রোন হামলার বর্ণনা দিয়েছেন। তারা জানান, যারা হামলা থেকে বেঁচে গেছেন তারা মৃতদেহের স্তূপের মধ্যে নিহত ও আহত স্বজনদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
হামলায় নিহতদের মধ্যে একজন গর্ভবতী নারী ও তার দুই বছর বয়সী মেয়েও আছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাখাইন রাজ্যে জান্তা সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে চলা লড়াইয়ের মধ্যে জানা মতে বেসামরিকদের ওপর হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা এটিই।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি আরাকান আর্মি এ হামলা চালিয়েছে। কিন্তু আরাকান আর্মি হামলার দায় অস্বীকার করেছে।
ওই হামলার জন্য আরাকানের বিদ্রোহী বাহিনী ও মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী একে অপরের ওপর দোষা চাপাচ্ছে।
হামলাটি কারা চালিয়েছে বা হামলায় কতজন নিহত হয়েছেন, স্বতন্ত্রভাবে তা যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
(ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/কেএম)