আমিরাতে দণ্ডিতদের মুক্তিসহ একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত উপদেষ্টা পরিষদে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করতে গিয়ে দণ্ডিতদের মুক্তিচেষ্টাসহ একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তৎকালীন সরকারের বিরোধীতা করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছিলেন অর্ধশতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী।
রবিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকে সেইসব প্রবাসী কর্মীদের মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট দেশটির সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। এদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর নিয়োগ এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলসহ আরও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এরমধ্যে সরকারের বিভিন্ন পদে থাকা চুক্তিভিত্তিক সব নিয়োগ বাতিল হচ্ছে। এ জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে যেসব নিয়োগ নিয়ে বেশি বিতর্ক আছে, সেগুলো অনতিবিলম্বে বাতিল করা হবে। আর পর্যায়ক্রমে সব চুক্তি বাতিল করা হবে।
ক্যাবিনেট দপ্তর (উপদেষ্টা পরিষদ) থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরদের শূন্য পদে নিয়োগের সুপারিশের জন্য মুসলিম চৌধুরী, আহসান এইচ মনসুর ও নজরুল ইসলামের সমন্বয়ে একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সব আহত আন্দোলনকারীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে এবং তাদের চিকিৎসার খরচ সম্পূর্ণভাবে সরকার বহন করবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী সব হাসপাতালকে নির্দেশ দেবে। সরকার নিহত আন্দোলনকারীদের পরিবারকেও সহায়তা করবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবিলম্বে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং জনগণের সমর্থনে প্রতিবাদ করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গ্রেপ্তার ও দণ্ডিত ৫৭ বাংলাদেশির মুক্তির জন্য আলোচনা শুরু করবে। প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই সংশ্লিষ্ট সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন।
সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
কোথাও কোথাও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ধরনের জঘন্য হামলা সমাধানের উপায় খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টা অবিলম্বে প্রতিনিধি সংস্থা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর সঙ্গে বসবে।
আগামী ১৭ আগস্ট (শনিবার) থেকে মেট্রোরেল পুনরায় চালু হবে। তবে মেরামত না হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর স্টেশনে রেল থামবে না।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণের পর কর্মবিরতিতে থাকা বিক্ষুব্ধ পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্র উপেদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। ওই বৈঠকে পুলিশের লোগো, ইউনিফর্ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশের ইউনিফর্ম, লোগো সব পরিবর্তন করা হবে। পুলিশের অনেকের মন ভেঙে গেছে। এই ইউনিফর্ম পরে পুলিশ আর কাজ করতে চাইছে না। খুব দ্রুতই তা পরিবর্তন করা হবে। এসব বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘তারা (পুলিশ সদস্যরা) যে দাবিদাওয়া পেশ করেছে, সেগুলো যৌক্তিক। তাই আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে আমরা স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে তাদের দাবিগুলো মেনে নেব। কিছু দাবি আমরা এখনই মেনে নেব।’
এদিন পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বসার আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
(ঢাকাটাইমস/১২আগস্ট/এসআইএস)