মৌসুমীকে মামলা থেকে বাঁচাতে গাড়ি বিক্রি করছেন ওমর সানী
প্রকাশ | ১২ আগস্ট ২০২৪, ১৩:৫৯
গাড়ি কিনতে লোন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মৌসুমী। চেক ডিজঅনারের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে হয়েছে মামলা, এমনকি জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। অবশেষে মৌসুমীকে মামলা থেকে বাঁচাতে লোন নিয়ে কেনা সেই গাড়িটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার স্বামী ওমর সানী।
ঘটনা প্রসঙ্গে এই নায়ক বলেন, ‘মার্সিডিজ গাড়ি বাবদ মৌসুমী ঋণ নিয়েছিল। ৮ কি ১১টা চেকও দেওয়া আছে। মৌসুমী দেশের বাইরে যাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমি তাদের বলেছি, আমি তো গুলশানে থাকি না। বসুন্ধরায় থাকি। চিঠি ওখানে পাঠিয়ে দিয়েন। তারপরও তারা গুলশানের সেই ঠিকানায় চিঠি পাঠায়। এরপর আমি বলেছি, আমাদের একটা বিপর্যয় ঘটেছে। কিস্তিটা আরেকটু কমিয়ে দিলে ভালো হয়। এই যেমন ৩০, ৪০, ৫০ বা ৬০ হাজার টাকা- যখন যা পারি দিয়ে দেব। আপনারা চেক স্থগিত করেন। আমাকে কিছুদিন সময় দেন। এক লাখ টাকা আমার পক্ষে এই মুহূর্তে দেওয়া সম্ভব নয়।’
কারণ প্রসঙ্গে সানী বলেন, ‘ওই সময়ে মৌসুমী ও আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নিয়েও জটিলতা হয়। তাই লেনদেন বন্ধ ছিল। মৌসুমী যে চেকগুলো দিয়েছিল, সেই অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ ছিল। সবকিছু বুঝিয়ে বলার পরও তারা কোনো কথা শোনেনি। আমি চেয়ারম্যান বরাবর চিঠিও লিখেছি। আমাকে উল্টো বলেছে, গাড়ি হস্তান্তর করেন। আমার সঙ্গে তারা ভালো আচরণও করেনি। একটা পর্যায়ে আমাকে বলে যে উনি (মৌসুমী) পালিয়ে গেছেন। এরপর আমি বলেছি, স্টুপিডের মতো কথা বলেন কেন? এই সামান্য টাকার জন্য মৌসুমী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে! আমি ওর হাজব্যান্ড, আমি বারবার বলছি, আপনারা এসব ভাববেন কেন।’
ওমর সানীর কথায়, ‘এর চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ টাকার, যেমন এক কোটি, দুই কোটি, তিন কোটি, পাঁচ কোটি টাকার মতো শতাধিক ঋণখেলাপিকে আমি চিনি। এই প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে তারা পরিশোধ করেনি। সেখানে মৌসুমীর কয়েক লাখ টাকার ঋণের বিষয়টি মামলা পর্যন্ত নিয়ে গেছে! এটা মৌসুমীকে অসম্মান ও অপদস্থ করা ছাড়া আর কিছুই নয়। নামটা যেহেতু মৌসুমী, তাই ভাইরাল করার চেষ্টা করল। সামান্য কিছু টাকার জন্য মৌসুমীকে যদি অসম্মান করা হয়, তাহলে অন্য কোটি কোটি ঋণখেলাপির নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না কেন!’
সবশেষে অভিনেতা জানান, বিষয়টি আইনগতভাবে সমাধানের চেষ্টা করবেন তিনি। যে গাড়িটা আছে, তা বিক্রি করে দিয়ে মামলার এই বিষয়টা সমাধান করবেন।
জানা যায়, আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের এক লাখ ছয় হাজার ২১১ টাকার চেক ডিজঅনারের অভিযোগে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ঢাকার একটি আদালতে মৌসুমীর বিরুদ্ধে মামলা করেন আইপিডিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এম মুশফিকুর রশীদ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আইপিডিসি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা সারা দেশে অর্থ জমা, ঋণ, বিনিয়োগ, মুদ্রা বিনিময়সহ বিভিন্ন আর্থিক লেনদেন করে। মামলার বিবাদী আরিফা পারভিন জামান মৌসুমীকে অভিযোগকারী ঋণ দেন। কিন্তু মৌসুমী ঋণের শর্ত না মেনে অনিয়মিতভাবে কিস্তি দিতেন।
গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর মৌসুমী বকেয়া ঋণের আংশিক দায় মেটাতে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে বাদীর অ্যাকাউন্টে ১ লাখ ৬ হাজার ২১১ টাকা হস্তান্তর করেন। সিটি ব্যাংকে সংরক্ষিত চেকটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে দেখানো হলে ব্যাংক জানায়, চেকের অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই।
মামলায় আরও বলা হয়, এরপর মৌসুমীকে ৩০ দিনের মধ্যে চেকের অর্থ পরিশোধের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। কিন্তু গত বছরের ১১ নভেম্বরের মধ্যে তিনি চেকের অর্থ দিতে ব্যর্থ হন।
এরপর মামলার পর হাজির হওয়ার জন্য মৌসুমীর গুলশান-১ ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসায় আদালত থেকে দুইবার সমন পাঠানো হয়। তবুও হাজির না হওয়ায় আদালত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ নায়িকার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
(ঢাকাটাইমস/১২আগস্ট/এজে)