থানা থেকে লুট করা অস্ত্রেই প্রাণ গেল ‍যুবকের

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০৬

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকা ঢাইমস
নিহত পলাশ, ফাইল ছবি

ফরিদপুরের সদরপুরে থানা থেকে লুট করা অস্ত্রে প্রাণ গেল পলাশ হোসেন (১৮) নামে এক ‍যুবকের। লুট করা অস্ত্রটি নিয়ে তিন বন্ধু দুষ্টুমি করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন ওই যুবক। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  মারা যান তিনি।

গত ৬ আগস্ট ওই যুবক গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সোমবার (১২ আগস্ট) ঢাকা নিউরো সাইন্স হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

 

নিহত পলাশ সদরপুর উপজেলার আটরশি গ্রামের মোশারফ হোসেনের বড় ছেলে। মোশারফ হোসেন একটি খাবার হোটেলের মালিক। উপজেলার আটরশি মোড়ে তার দোকান রয়েছে। পলাশ তার বাবার সঙ্গে হোটেলেই কাজ করত।

 

পলাশের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, গত ৬ আগস্ট সকালে পলাশ তার বাবার হোটেলে কাজ করছিল। এসময় তার দুই বন্ধু সদরপুর সরকারি কালেজের একাদশ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী  পলাশকে হোটেল থেকে ডেকে নিয়ে যায়।

 

পরে তারা আড়াই রশি গ্রামে পলাশের নানা মোসলেম মাতুব্বরের বাড়িতে যায়। ওই বাড়ির একটি কক্ষে তারা তিনজন একত্রিত হয়।

৫ আগস্ট সদরপুর থানা থেকে লুট করে নেওয়া একটি শর্টগান নিয়ে দুষ্টুমি (খেলার ছলে) করে অস্ত্রটি একে অপরের মাথায় তাক করে। দুষ্টমির এক পর্যায়ে হঠাৎ  শর্টগান থেকে গুলি বের হয়ে তা পলাশের মাথায় লাগলে গুরুতর আহত হয় সে।

 

গুলির শব্দ এবং পলাশের চিৎকার শুনতে পেয়ে বাড়ির লোকজন ছুটে যায় সেই কক্ষে। সেখানে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন পলাশকে। 

 

তাৎক্ষণিক বাড়ির লোকজন পলাশকে উদ্ধার করে প্রথমে আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল হাসপাতালে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ফরিদপুর থেকে নেওয়া ঢাকা নিউরো সাইন্স হাসপাতালে।

 

ঢাকার নিউরো সাইন্স হাসপাতালে ৬দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ সোমবার (১২ আগস্ট) ভোরে মারা যায় পলাশ।

 

স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, পলাশকে গুলি করা অস্ত্রটি সদরপুর থানা থেকে লুট হওয়া একটি শর্টগান। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন বিকালে সদরপুর থানা থেকে ওই শর্টগান লুট করা হয়েছিল।

 

অস্ত্রটি আটরশির একটি পরিত্যক্ত ভবন থেকে উদ্ধার করে সদরপুরের আনসার বাহিনী এবং সেটি সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

 

এ ঘটনার পর পলাশের ওই দুই বন্ধু ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপন করায় এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

 

তবে নিহত পলাশের মা পারুলি আক্তার দাবি করেছেন সদরপুর থানা থেকে লুট করা অস্ত্র দিয়ে তার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, থানার কাজকর্ম শুরু না হওয়ায় এ ব্যাপারে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।

 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় পলাশের মা পারুলী আক্তার বাদী হয়ে পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দিয়েছেন। পলাশের মৃতদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। সেটি ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।

(ঢাকাটাইমস/১২আগস্ট/পিএস)