শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, কাদের-কামালও আসামি
প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশছাড়া সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই প্রথম কোনো মামলা দায়ের হলো।
ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিরীহ নাগরিক হত্যার অভিযোগ এনে মঙ্গলবার রাজধানীর একজন ব্যবসায়ী এ মামলা দায়ের করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এ মামলার শুনানি হবে।
শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি করা হয়েছে সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারকে।
এছাড়া অজ্ঞাতনামা পুলিশ কর্মকর্তা বা পুলিশের সদস্য ও তৎকালীন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অজ্ঞাতনামা হিসেবে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
রাজধানীর আদাবর এলাকার এস এম আমীর হামজা শাতিল নামে এক ব্যবসায়ী এ মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের গুলিতে নিরীহ নাগরিক হত্যার বিচার চেয়ে বিবেকের তাড়নায় তিনি মামলাটি করেছেন বলে জানিয়েছেন।
এরইমধ্যে আদালতে মামলাটির শুনানি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী মো. মামুন মিয়া। আদালত পরে আদেশ দেবে বলেও জানিয়েছেন এ আইনজীবী।
মামলার অভিযোগে যা বলা হয়েছে:
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা মিছিল সমাবেশ করে। ওইসব শান্তিপূর্ণ মিছিলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। বহু ছাত্র জনতা নিহত ও আহত হন।
গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরের বসিলার ৪০ ফিট এলাকায় ছাত্র-জনতা শান্তিপূর্ণ মিছিল সমাবেশ করছিল। সেখানেও পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। রাস্তা পার হওয়ার সময় স্থানীয় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন।
আরজিতে বলা হয়, নিহত সায়েদকে তার গ্রামের বাড়িতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নতুন বস্তি প্রধানহাটে নিয়ে দাফন করা হয়। তার মা, স্ত্রী, ছেলে সন্তান সেখানেই থাকেন। এ কারণে তারা ঢাকায় এসে মামলা করতে অপারগ। এ জন্য বিবেকের তাড়নায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বাদী এই মামলা করলেন।
অভিযোগে বাদী আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করার বারবার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান কামালের নির্দেশে পুলিশের আইজি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অধীনস্থ পুলিশদের নির্দেশ দিয়ে মিছিলে গুলি চালায়। পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কাজেই এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।
(ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/এফএ)