অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঢাবি শিক্ষক সমিতির অভিনন্দন
প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১৭:৩৮
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। একইসঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিনন্দন ও উদ্বেগ জানান শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও শান্তিতে নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছে।’
‘এই সরকারে আমাদের একজন সম্মানিত সহকর্মী, অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম (আসিফ নজরুল) ও দুইজন শিক্ষার্থী উপদেষ্টা হিসেবে অর্ন্তভুক্ত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। বৈষম্যবিরোধী, সমতা ভিত্তিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এই সরকারের পাশে থাকবে।’
তারা আরও বলেছেন, ‘তবে উদ্বেগের বিষয় এই যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সাথে সাথে একটি মহল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চরিত্র হননের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে বৈরি সম্পর্ক সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্থিতিশীল করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এর একটি অন্যতম উদাহরণ হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখের একটি মানব বন্ধনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ ছবির মাধ্যমে শিক্ষক সমিতিকে ড. ইউনূসের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। মূলতঃ সত্য এই যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির মানববন্ধনটি ছিল বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ওপর বিদেশি হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে। উক্ত মানববন্ধনে একজন শিক্ষক যিনি শিক্ষক সমিতির কার্যকর পরিষদের সদস্য নন তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নোবেল পুরস্কার স্থগিতের দাবি করেছিলেন। এটি ছিল তাঁর নিজস্ব বক্তব্য যা শিক্ষক সমিতির বক্তব্য নয়। যাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কর্মকান্ড সম্পর্কে অবহিত আছেন তারা সকলেই জানেন যে, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা, প্রতিবাদ সভা কিংবা মানববন্ধনে দলমত নির্বিশেষে যে কোন শিক্ষক স্বাধীনভাবে তাঁর মত প্রকাশ করতে পারেন। শুধুমাত্র কার্যকর পরিষদ ও সাধারণ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়।’
‘আরো লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, একটি মহল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের পদত্যাগের পরে বিভিন্ন একাডেমিক পদে কর্তব্যরত বিভাগীয় চেয়ারপার্সনবৃন্দ, ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ ও শিক্ষকবৃন্দের প্রত্যক্ষ ভোটে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সিনেট সদস্য, সিন্ডিকেট সদস্য, ডিন ও শিক্ষক সমিতির সদস্যবৃন্দকে পদত্যাগের জন্য হুমকি প্রদান করছে। উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় '৭৩ এর আইনের (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ '৭৩) মাধ্যমে। সুতরাং, গণপদত্যাগের মাধ্যমে এক ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির এই অপতৎপরতার ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সজাগ থাকার ও এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।’
‘পরিশেষে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে শিক্ষক শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর দাবি জানাচ্ছি।’
(ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/এসকে/ইএস)