শিক্ষার্থীদের দখলে ধানমন্ডি ৩২, রাজধানীজুড়ে সতর্ক অবস্থান
প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৪:২০
দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিপরীতে প্রতিবিপ্লব ঠেকাতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সতর্ক অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। বিকালে শাহবাগে জড়ো হয়ে রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা।
বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার পরও সেখানে শিক্ষার্থীদের অবস্থান করতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। এর আগে রাত ১১টা থেকেই শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি ৩২ এলাকায় জড়ো হতে থাকেন।
ধানমন্ডি ৩২ ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গাবতলী, মিরপুর, উত্তরা, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ধানমন্ডি ৩২ এলাকার আশপাশের শিক্ষার্থীরা এখানে এসে জড়ো হন। অন্যান্য এলাকার শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ এড়িয়ায় অবস্থান নেন।
ঢাবি শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, ‘গণহত্যাকারী সংগঠন আওয়ামী লীগ ও সন্ত্রাসীদের ঠেকাতে আমরা অবস্থান নিয়েছি ধানমন্ডি ৩২-এ। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান কখনো বিফলে যেতে দেওয়া হবে না। রক্তপাত ও প্রতিহিংসা ঠেকাতে রাজপথে অবস্থান করা আমার আপনার সকলের নৈতিক দায়িত্ব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা আগেই ঘোষণা দিয়েছিল আওয়ামী লীগের যেকোনো ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রয়েছে ছাত্র সমাজসহ দেশের জনগণ। যেকোনোভাবে তাদের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করতে তারা প্রস্তুত।
বুধবার দুপুরে সমন্বয়ক সারজিস আলম তার ফেসবুক টাইমলাইনে লেখেন, ‘স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থী বন্ধুরা; আজ শাহবাগে দেখা হচ্ছে। রাজপথ শুধু আমাদের দখলে থাকবে।’
বিকালে শাহবাগে জড়ো হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘অধিকার আদায়ে আমরা সব সময় রাজপথে থাকবো। ঢাকার সব ছাত্র ও জনতা এক হলে আমরা শহীদদের স্মরণে শাহবাগ থেকে রাপা প্লাজা অভিমুখে পদযাত্রা, মোমবাতি প্রজ্বলন ও নিহত হওয়ার ঘটনাস্থলে এক মিনিট নীরবতা পালন করে দোয়া করবো।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান করেছি, এবার সেই গণঅভ্যুত্থান রক্ষা করতে আমরা সবাই জড়ো হয়েছি। এখন থেকে রাজপথ শুধু আমাদের দখলে থাকবে।’
এ সময় পূর্ব ঘোষিত চার দফা দাবির কথাও জানানো হয়। সেগুলো হলো:
১. ফ্যাসিবাদী কাঠামোকে ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দল ও সরকার যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
২. সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী মহাজোটের শরিক দলগুলোর পরিকল্পিত হত্যা, ডাকাতি ও লুণ্ঠনের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।
৩. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলা, মামলা, এবং হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছে এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বারংবার কায়েমের চেষ্টা করছে, তাদের দ্রুততম সময়ে অপসারণ ও নতুন সরকারে তাদের নিয়োগ বাতিল করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৪. প্রশাসন ও বিচার বিভাগে যারা এতদিন বৈষম্যের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য দ্রুততম সময়ে সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।
(ঢাকাটাইমস/১৫আগস্ট/এসআইএস)