বাড়িতে অগ্নিসংযোগ: নড়াইলের মানুষের বিরুদ্ধে বিচার চাইবেন না মাশরাফি

প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১৬:০৯

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অন্যতম সফল অধিনায়ক বলা হয় মাশরাফি বিন মর্তুজাকে। তার হাত ধরেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছায় টাইগাররা। ক্রিকেটের প্রতি তার এই নিবেদনের জন্য দেশের তরুণ প্রজন্ম ভালোবাসতো মাশরাফিকে। তবে ২০১৮ সালেই রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় এসে প্রথমবারের মতো বিতর্কিত হয়েছিলেন সেখানেই। সদ্য ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগের হয়ে সাড়ে ৫ বছর ছিলেন জাতীয় সংসদের সদস্য। 

গত ৫ই আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। জনপ্রিয় ক্রিকেটার হওয়ার পরেও সেখান থেকে রেহাই পায়নি মাশরাফির নড়াইলের বাড়িটি। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে সেখানেও। তবে এমন কিছুর জন্য বিচার চাইবেন না বলে জানিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।

নড়াইলের বাড়ি প্রসঙ্গে মাশরাফির বক্তব্য, ‘নড়াইলের বাড়িটা করেছিলাম মায়ের জন্য। এখন শেষ। অনেকেই বলেছেন মামলা করতে, ব্যবস্থা নিতে। ছবি-ভিডিও সবই আছে অনেকের কাছে। তবে আমি বলেছি, এসব করব না। আমার বাবাকেও বলে দিয়েছি। এখনকার সরকার বা ভবিষ্যতে নির্বাচন করেও যে সরকার আসুক, কারো কাছেই বিচাই চাইব না। কোনো অভিযোগ নেই।’  

নিজ এলাকার মানুষের বিপক্ষে বিচার দিতে চান না তিনি, ‘খুলনা-যশোর থেকে বা ঢাকা থেকে গিয়ে কেউ এই বাড়ি ভাঙেনি। নড়াইলের কোনো না কোনো জায়গা থেকে উঠে আসা মানুষই পুড়িয়েছে। নড়াইলের মানুষের বিরুদ্ধে বিচার আমি চাইব না। নিজের ভাগ্য মেনে নিয়েছি। হয়তো কোনো ভুল করেছি, সেটার ফল পেয়েছি। কষ্ট আছে অবশ্যই, তবে রাগ-ক্ষোভ নেই কারো প্রতি। আমার প্রতি এখনো কারও ক্ষোভ থাকলে, আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’

অগ্নিসংযোগের আগে সেই বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন মাশরাফির মা-বাবা। তবে নিরাপদে সরে যেতে পেরেছেন তারা। বাড়িটিতে মাশরাফির ক্রিকেটীয় জীবনের সব স্মারক ছিল। সেগুলোও পুড়ে গেছে।

এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আমি তো এমন বড় ক্রিকেটার নই বা এমন নয় যে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। তবে যা কিছু পেয়েছি, প্রায় সব ওখানেই ছিল। ঢাকায় কিছু নেই। সব পুড়ে শেষ। এমন নয় যে, স্মারকগুলির প্রতি আমার টান অনেক বেশি ছিল। তবে মাঝেমধ্যে দেখতে ভালো লাগতো। অনেক লোকে বাড়িতে যেতো এসব দেখতে। সবার জন্যই তো দুয়ার খোলা ছিল। কিছুই আর নেই। তবে দিনশেষে সান্ত্বনা যে, বাবা-মা অন্তত প্রাণে বেঁচে গেছেন। যা গেছে, কথা বলে লাভ নেই।’

তবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় থেকেই নিজের নীরবতার জন্য অনুতপ্তও হয়েছেন মাশরাফি, ‘দেশের একটা ক্রাইসিস মুহূর্তে পাশে থাকতে পারিনি, কিছু করতে পারিনি, এটা আমাকে সবসময়ই ভোগাবে, পোড়াবে। সবসময়ই থেকে যাবে।’ 

(ঢাকাটাইমস/১৫ আগস্ট/এনবিডব্লিউ)