আশাশুনিতে রাজু বাহিনীর তাণ্ডব: ৮ দিনে ১৮ পরিবারে অগ্নিসংযোগ, লুট
প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০২৪, ২০:৪৬ | আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ২১:০১
কোনা রাজনৈতিক দলের পদ পদবিতে না থেকেও সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে রাজু সরদারের নেতৃত্বে তার বাহিনী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর গত ৮ দিনে ১৮ পরিবারে অগ্নিসংযোগ করে সর্বস্ব লুটে নিয়েছে রাজুর নেতৃত্বে তার বাহিনী।
রাজু সরদার সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা গ্রামের মৃত বাবর আলী সরদারের ছেলে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলো হলো একই গ্রামের আলাউদ্দিন লাকী, জালাল সরদার, নাসিম সরদার, হামিদ সরদার, ইউপি সদস্য হাসান, খোকন সরদারের ছেলে কহিনুর হোসেন, ইয়াছিন সরদার, মিঠু সরদার, ছাকি সরদার, নামজুল্লাহ, রবিউল, মুকুল সরদার, বারী গাজী ও তাহের মোল্যার পরিবার। রাজুর নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্যরা এসব পরিবারের ঘর-বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অত্যাচার নির্যাতন করলেও কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। মুখ খুলতে গেলেই হচ্ছেন হামলার শিকার। সাহস করে প্রতিবাদ করায় ইউপি সদস্য হাসানকে মধ্যযুগীয় কায়দায় কুপিয়ে জখম করেছে রাজু বাহিনী।
অভিযোগ রয়েছে সম্প্রতি আলাউদ্দিন লাকী, নাসিম সরদার, শাহেদ সরদার, রাশেদ সরদার, জালাল সরদার, মুকুল সরদার ও ইয়াছিনসহ স্থানীয়দের ৪০০'শ বিঘা মৎস্য ঘের দখল ও লুটপাট করেছে রাজু ও তার বাহিনী। তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি গরু থেকে শুরু করে গৃহপালিত অন্য পশুপাখিও।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাজু ও তার অস্ত্রধারী বাহিনীর ভয়ে আমরা বাইরে যেতে পারছি না। সরকারের পদত্যাগের পর সে এলাকার চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা ও ডাকাতিসহ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
ভুক্তভোগী জালাল সরদার জানান, সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে রাজু ও তার সাথে থাকা ২০-৩০ জন বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত জয়ে আমার বাড়িতে আগুন দেয়। আমি কোনো দল করি না, কারো ক্ষতিও করিনি। তারপরও আমার সব পুড়িয়ে শেষ করে দিয়েছে। আমাদের ১৩টি ঘের দখল করে নিয়েছে। গরু ছাগল হাস মুরগী সব নিয়ে গেছে। আমি সন্ত্রাসী রাজু ও তার দলবলের বিচার চাই।
হামিদ সরদারের স্ত্রী জানান, আমি গোসল করে বাড়িতে এসে শাড়ি পড়ারও সময় পাইনি। আমার বাচ্চা দুইটাকে নিয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে জীবন রক্ষা করেছিলাম। সন্ত্রাসী রাজু, রিটু, মজনু ও তার দলবল এসে আবার বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে। এ ঘটনার পর ৭ দিন পার হলেও এখনো বাড়িতে যাইতে পারিনি। রাজু আমাদের খুঁজছে। আমরা দুইবার সেনাবাহিনীর কাছে গিয়ে বলেছি কিন্তু কোনো কিছু করেনি তারা।
আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিশ্বজিৎ অধিকারী বলেন, আগে কোনোদিন এই রাজুর নাম শুনিনি। হঠাৎ এই রাজু সন্ত্রাসীর কর্মকাণ্ডের কথা অনেকের কাছ থেকে শুনছি। যেহেতু এখনো থানার কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়নি তাই আমি এখানকার দায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।
(ঢাকাটাইমস/১৫আগস্ট/পিএস)