অবৈধ টাকা উদ্ধার করলে অর্ধেক সমস্যার সমাধান হবে: মির্জা আব্বাস
প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০২৪, ২১:৪৪
শেখ হাসিনা সরকারের দোসর ও তাদের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধ টাকা উদ্ধার করা গেলে অর্থনৈতিক সঙ্কটের অর্ধেক সমাধান হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
বৃহস্পতিবার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির উদ্যোগে অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে মাত্র কয়েক দিন আগে এফবিসিআইর নেতৃত্বে সরকারের দোসর কিছু ব্যবসায়ী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছিল। সেখানে ওই ব্যবসায়ীরা এমন সব বক্তব্য শুরু করলেন, একজন বড় ব্যবসায়ী শেখ হাসিনাকে বলরেন, মৃত্যুর পরও আপনার সাথে থাকব। আপনার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য যা করা দরকার তা আমরা করব। কারণ, হাসিনার সময় এসব চামচাবৃন্দ যা কামাই করেছে, সমস্ত টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছে।’
মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ লিমিটেডকে বাটপারী প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সবাই জানে এটা সরকারি প্রতিষ্ঠান, না এটা বাটপারী প্রতিষ্ঠান। সরকারকে অনুরোধ জানাব, নগদের উদ্যোক্তা, কর্মকর্তা-কর্মচারি সবাইকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনেন। এরা এত স্বপ্ল সময়ে যে পরিমাণ টাকা পাচার করেছে- যা আপনাদের হিসাবের বাইরে। এরা আবার ডাকঘরের লোকে ব্যবহার করেছে। ডাকঘর কর্তৃপক্ষ বলেছে, এদের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, ‘আরও অনেকে আছে। এভাবে চামচাগিরি করে শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন। এই যে শেখ হাসিনা সরকারের হত্যাকান্ড, হেলিকপ্টার থেকে গুলি, স্নাইপার দিয়ে গুলি করে মানুষকে হত্যা করা- এইসবে ব্যবসায়ীদের হাত আছে। এদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুরোধ করব, ধরেন, টাকা উদ্ধার করেন। এখন যে টাকার সঙ্কট আছে তার অর্ধেক সমস্যার সমাধান হবে। এদের বেশিরভাগ দেশে আছে, সবাই পালিয়ে যেতে পারেননি।’
গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার বর্ণনা দিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যেদিন শেখ হাসিনা পালিয়ে যায়, ঢাকার বহু রাস্তা দিয়ে ক্যান্টনমেন্টে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। একটা পর্যায়ে কোনোরকম বাণিজ্য মেলার মাঠে হেলিকপ্টার নামানো হয়েছে, সেখান থেকে ক্যান্টমেন্টে গেছেন, সেখান সি-১৭ হেলিকপ্টারে করে পালিয়েছেন। খুব দুঃখের সাথে বলতে চাই, সালমান এফ রহমান সেদিন হেলিকপ্টারে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ওনাকে শেখ হাসিনা নেননি।’
একটি চাঁদাবাজি ও দুই চাঁদাবাজকে আটকের ঘটনার বর্ননা দিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গত বুধবার একজন হিন্দু ব্যবসায়ী আমাকে ফোন দিয়েছিলেন, তার বাসায় কয়েকজন চাঁদাবাজ ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। আমাকে ফোন দিয়েছিলেন ওই ব্যবসায়ী; আমি বললাম ওদের দেন। দিলে আমাকে ফোনে ধমক দেয় চাঁদাবাজরা। যখন ওই ব্যবসায়ী তাকে বলল ইনি মির্জা আব্বাস, তখন ফোনটা কেটে দেয়। এক ঘন্টা পর চাঁদাবাজরা এলে আমি গেট বন্ধ করে দিতে বলি। তার আগেই টের পেয়ে দুজন ছাড়া বাকি পালিয়ে যায়। এরপর পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে তাদের গ্রেপ্তার করে। খোঁজ নিয়ে দেখেন, এরা বহিরাগত। বিএনপি বা অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের কেউ না। তারপরও আমাদের ওপর দোষ পড়ে।’
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি। আরও কিছুদিন পরিশ্রম করতে হবে।’
(ঢাকাটাইমস/১৫আগস্ট/জেবি/এসআইএস)