কিডনি নষ্টের পাঁচটি কারণ জানুন, সাবধান হোন
শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলো কিডনি। এই অঙ্গটি মূত্র তৈরি থেকে শুরু করে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ, হরমোন তৈরিসহ একাধিক জরুরি কাজ একা হাতে সামলায়। তাই সব বয়সিদেরই কিডনির স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। নইলে আসতে পারে বড়সড় বিপদ।
তবে কে শোনে কার কথা! তাই তো বিশেষজ্ঞদের সাবধানবাণীকে অগ্রাহ্য করে আমরা এমন কিছু ভুল করে ফেলি, যা কি না কিডনির বারোটা বাজায়। তার ফলস্বরূপ ক্রনিক কিডনি ডিজিজের মতো জটিল অসুখের ফাঁদে পড়তে হয়।
তাই বিপদ ঘটার আগেই কিডনির অসুখের খপ্পরে পড়ার পাঁচ সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কে জেনে নিন। তারপর যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। তবেই আপনার সুস্থ থাকার পথ প্রশস্ত হবে।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসই সমস্যার মূলে
ডায়াবেটিস একটি প্রাণঘাতী রোগ। এই অসুখের হাত ধরেই শরীরে প্রবেশ করে একাধিক জটিল সমস্যা। এমনকি হাই সুগার কিডনির ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র রক্তনালিরও ক্ষতি করে দেয়। এই কারণেই ধীরে ধীরে নিজের কার্যক্ষমতা হারায় কিডনি। এই সমস্যারই বিজ্ঞানসম্মত নাম ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি।
তাই কিডনির হাল ফেরাতে চাইলে অবশ্যই ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এই কাজটি করতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নিয়মিত ওষুধ খান। সেই সঙ্গে ডায়েট ও জীবনযাত্রায় বদল আনুন। তাহলেই সুস্থ-সবল জীবনযাপন করতে পারবেন।
সমস্যার অপর নাম হাই ব্লাড প্রেশার
শেষ কয়েক দশকে হাই ব্লাড প্রেশারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অসুখটিকে ঠিক সময়ে বাগে না আনতে পারলে কিডনির ওপর বিরাট চাপ পড়ে। এমনকি কিডনির রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তাই তো সুস্থ-সবল জীবনযাপন করার ইচ্ছা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো প্রেশারের ওষুধ খান। অবশ্যই তেল, ঝাল, মশলা এবং লবণ খাওয়া কমান। এর পরিবর্তে সবুজ শাক ও সবজির রকমারি পদ পাতে রাখুন। এতেই আপনার প্রেশার চলে আসবে নিয়ন্ত্রণে।
অত্যধিক পেইনকিলার খেলেই চিত্তির!
ব্যথার সমস্যায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া একাধিক পেইনকিলার খেয়ে নেন। এতে ব্যথা কমে যায় ঠিকই, তবে কিডনির বাজে বারোটা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি ড্রাগস জাতীয় কিছু ওষুধ বেশি মাত্রায় খেলে কিডনির গুরুতর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধ খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।
বিপদের নাম ডিহাইড্রেশন
কিডনির সব থেকে ভালো বন্ধু হলো পানি। তাই কিডনিকে সুস্থ রাখতে চাইলে আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানিপান করতেই হবে। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানিপান করেন না। এই কারণেই কিডনির ওপর বিরাট চাপ পড়ে।
এমনকি পানি কম খাওয়ার কারণে কিডনির কার্যক্ষমতাও উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই কিডনিকে সুস্থ রাখতে দিনে অন্তত তিন থেকে চার লিটার পানি আবশ্যক।
মদ্যপান ও ধূমপানই নষ্টের গোড়া
মদ্যপান ও ধূমপানের মতো বদভ্যাসের কারণে একাধিক জটিল অসুখের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এমনকি কিডনির ছোট ছোট রক্তনালিও শক্ত হয়ে যেতে পারে। ফলে এই অঙ্গটি নিজের কাজ ঠিকমতো করতে পারে না। তাই সুস্থ থাকার ইচ্ছে থাকলে আজই মদ্যপান এবং ধূমপান ছাড়ুন।
(ঢাকাটাইমস/২৫আগস্ট/এজে)