এখনো পানিবন্দি ফেনী জেনারেল হাসপাতাল, মিলছে শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা

এম শরীফ ভূঞা, ফেনী
  প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১৬:১২| আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১৬:১৭
অ- অ+

ফেনীর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আর সব স্থাপনার মতো ডুবেছে ২৫০ শয্যা ফেনী জেনারেল হাসপাতাল। নিচতলায় নবজাতক শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র, স্টোর রুম, ডায়ালাইসিস ইউনিট, ডেন্টাল ইউনিটের সরঞ্জাম তলিয়েছে। জরুরি বিভাগের কার্যক্রম নিচতলা থেকে সরিয়ে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে গেলেও বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। আট দিন ধরে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।

তবে বৃহস্পতিবার নিচতলা থেকে পানি নামলে সেখানে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু হয়। জরুরি বিভাগে আগত রোগীদের দ্বিতীয় তলায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেন দুজন চিকিৎসক ও দুজন সিনিয়র স্টাফ নার্স। এদিন জরুরি বিভাগে রোগীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

জানা গেছে, রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শহরের ডেডিকেটেড হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পরামর্শে স্বাস্থ্য বিভাগ শহরের সাতটি প্রাইভেট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণা করে। এসব হাসপাতালে সরকারি ৩০ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন সরকারি মূল্যে।

গত ২১ আগস্ট রাতে বন্যার পানি ঢুকে ফেনী সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও দায়িত্বরত চিকিৎসক-কর্মকর্তা, কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। পরে পানি বেড়ে সড়ক ও হাসপাতাল এলাকা তলিয়ে যায় ৫-৬ ফুট পানির নিচে। নৗকা ও ট্রলারে করে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গুরুতর রোগী হাসপাতালে এলেও মেলেনি কোনো চিকিৎসাসেবা। কারণ পানি ভেঙে কর্মস্থলে আসতে পারেননি চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা। এ অবস্থায় জেলা শহরে একের পর এক হাসপাতালে দৌড়ঝাঁপ করেও স্বাস্থ্যসেবা মেলেনি অনেকের।

জানা যায়, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে জেনারেটর চালু করার কিছুক্ষণ পর জেনারেটর কক্ষে পানি ঢুকে সেটিও বিকল হয়ে পড়ে। অন্ধকারে সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেই থেকে আট দিন ধরে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। একই অবস্থার খবর পাওয়া গেছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য সেবাপ্রতিষ্ঠান থেকেও।

এদিকে বন্যার কারণে হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছে না রোগীর খাবার ও পথ্য। ওয়াশরুম ও পরিচ্ছন্নতার পানিও নেই হাসপাতালে। স্বল্প পরিসরে দুজন চিকিৎসক ও দুজন নার্স দিয়ে কোনো রকম প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে জেলার সর্ববৃহৎ এ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে।

পানি কমায় বৃহস্পতিবার হাসপাতালের নিচতলায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রোগীদের দ্বিতীয় তলায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন দুজন চিকিৎসক ও দুজন সিনিয়র স্টাফ নার্স। এখনো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে দুই শতাধিক রোগী।

গত দুই দিন আগত রোগীর সংখ্যা সীমিত ছিল। পানি কিছুটা কমায় জরুরি বিভাগে রোগীদের উপচে পড়া ভিড় শুরু হয়েছে। রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শহরের ডেডিকেটেড হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

বন্যায় হাসপাতালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে ২৫০ শয্যা ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আসিফ ইকবাল বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পরামর্শে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে শহরের সাতটি প্রাইভেট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণা করা হয়। এসব হাসপাতালে সরকারি ৩০ জন চিকিৎসককে রোস্টার দায়িত্ব দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকরা সরকারি হাসপাতালে না এলেও ডেডিকেটেড হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেছেন। হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হওয়া রোগীদের সরকারি মূল্যে সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।’

স্বাস্থ্য বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. ইফতেখার আহমদ বলেন, ‘ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে চিকিৎসক পাঠিয়ে ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। আমরা দ্রুত ফেনী জেনারেল হাসপাতালসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে স্বাভাবিক কার্যক্রমে নিয়ে আসতে কাজ করছি।’ অচিরেই সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক ধারায় ফিরবে বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৯আগস্ট/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় মা ও ৬ মাসের শিশুসহ ১১ জন নিহত
'সীমান্ত গৌরবে' বিজিবি মহাপরিচালকের শ্রদ্ধা
ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে, এমনই বিশ্বাস রাখতে চাই: মির্জা আব্বাস 
স্বাধীনতা দিবসে ঘরে বসেই দেখুন মুক্তিযুদ্ধের সাড়া জাগানো এই সিনেমাগুলো
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা