সংবিধান সচল নাকি রহিত সুস্পষ্ট নয়, সমাধান চায় এবি পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:১২
অ- অ+

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন সরকার কীভাবে গঠিত হবে তা নিয়ে অস্পষ্টতা ছিলো সংবিধানে। এই পরিস্থিতির মধ্যে উচ্চ আদালতের মতামত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ গঠন করে। বর্তমানে সংবিধানের অনেক বিষয় স্পষ্ট নয়। দেশে সংবিধান সচল রয়েছে কি না সে বিষয়ে সমাধান চায় আমার বাংলাদেশ পাটি— (এবি পাটি)।

মঙ্গলবার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সাংবিধানিক সংকট ও কাঠামো বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এবি পার্টির আইনজীবী সমর্থকদের সংগঠন এবি পার্টি ল’ ইয়ার্স। বিকাল ৪টায় বিজয়নগরস্থ এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনের আইনজীবী নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সংবিধান সচল রয়েছে নাকি রহিত করা হয়েছে তা সুস্পষ্ট নয়। এ অবস্থায় সাংবিধানিক অস্পষ্টতা শীঘ্রই দুর করার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদ ‘randomly pick and choose’ এর ভিত্তিতে চলছে। যা যেকোনো সময় জটিলতা তৈরি করতে পারে।

এতে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ ও সংবিধানের বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব ও এবি লইয়ার্সের যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক। লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া।

ব্যারিস্টার সানী বলেন, গত ২৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দেন তাতে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বিদেশনীতিসহ অনেক বিষয় উঠে আসলেও সংবিধান সম্পর্কে কোনো বক্তব্য আমরা পাইনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সংবিধান সচল রয়েছে কিংবা রহিত করা হয়েছে তার কোনোটাই সুস্পষ্ট নয়। সরকারকে এবিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন।

অসঙ্গতিগুলো এখনই দূর করা দরকার, তা না হলে মারাত্মক জটিলতা তৈরি হতে পারে শঙ্কা প্রকাশ করেন এই আইনজীবী। কাজেই এটা নিয়ে অতি দ্রুত একটি প্রেসিডেন্টশ্যাল অর্ডিন্যান্স জারী করা দরকার, বলেন ব্যারিস্টার সানী।

এবি পার্টির এই আইনজীবীনেতা আরও বলেন, আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে গঠিত সরকার জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন অনুসারে সংবিধানের আমূল পরিবর্তন করে। কিন্তু এই সরকারের নিকট আমরা সে ধরনের কোনো কিছু দেখতে পাচ্ছি না।

ব্যারিস্টার সানী সংবিধানের নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর সংশোধনী প্রস্তাব করেন।

এক. আর্টিকেল ৭বি— সংবিধানের মৌলিক বিধানগুলো সংশোধন যোগ্য নয়

দুই. আর্টিকেল ৭০— রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে বা দলত্যাগ করলে সংসদ সদস্য পদ বাতিল।

তিন. রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য

চার. বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া (বিচার বিভাগ সংস্কার)

পাঁচ. গণভোট

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী যে সংবিধান জনগণের আকাঙ্ক্ষা ছিলো তার কোনো প্রতিফলন না ঘটিয়ে একজন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে ৭২ এর সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রে সুস্পষ্ট উল্লেখ ছিলো এই রাষ্ট্র হবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে। কিন্তু আমরা এমন একটা সংবিধান পেয়েছি যার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পন্থায় একটি স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদের জন্ম হয়। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ ৭২ থেকে ৭৫ এর আওয়ামীলীগ শাসনামল এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বিগত রেসিস্ট, গণহত্যাকারী সরকার।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতিতে জনআকাঙ্ক্ষার আলোকে সংবিধানের আমূল পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি। সংবিধান অক্ষুন্ন রাখার দোহাই যেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংস্কারকে ভবিষ্যতে ব্যর্থ করে না দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আলতাফ হোসাইন, এবি লইয়ার্সের যুগ্ম সদস্য সচিব ও দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলী নাসের খান, সহকারী সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট তারেক আব্দুল্লাহ, অ্যাডভোকেট শরণ চৌধুরীসহ এবি লইয়ার্সের নেতৃবৃন্দ।

(ঢাকাটাইমস/০৩সেপ্টেম্বর/এসআইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কড়া বার্তা দিতেই ভাঙা হয়েছে ৩টি রিকশা, ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের উদ্যোগ ডিএনসিসির
জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আ.লীগ নিষিদ্ধ জরুরি ছিল: প্রেস সচিব
ভিটামিনের ঘাটতি পূরণে খাবারে ভিন্নতা আনতে হবে
ফরিদপুরে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামি আকাশ গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা