আয়রনের ঘাটতি মেটায় গুড়ের শরবত, হাড় করে শক্তপোক্ত
প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসাবে গুড়ের জুড়ি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই তো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা চিনির বদলে গুড় খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন সব সময়। এতেই একাধিক রোগব্যাধি দূরে থাকবে বলে আশাবাদী তারা।
তবে জানলে অবাক হবেন, শুধু গুড় খাওয়ার চেয়ে প্রতিদিন রাতে এক মগ পানিতে গুড় ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেলে বেশি উপকার মিলবে। ঘুচবে একাধিক জরুরি ভিটমিন ও খনিজের ঘাটতি। এমনকি একাধিক কঠিন অসুখের ফাঁদও এড়ানো যাবে।
তাই আর দেরি না করে প্রতিদিন সকালে গুড়ের শরবত খাওয়ার একাধিক চমকে দেয়া গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নিন।
হাড় হবে শক্তপোক্ত
আজকাল কম বয়সেই অনেকে হাড়ের ক্ষয়জনিত রোগের ফাঁদে পড়ছেন। এমনকি বাতের রোগে ভুক্তভোগীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তবে ভালো খবর হলো, নিয়মিত গুডড়ের শরবত খেলেই কিন্তু ফিরবে হাড়ের হাল।
গবেষণায় দেখা গেছে, গুড়ে এমন কিছু অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে, যা ব্যথা কমানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই তো আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা হাড়ের রোগ প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে গুড়ের শরবতের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
মিটবে আয়রনের ঘাটতি
আমাদের মতো গরীব দেশে অনেকেই আয়রন ডেফিসিয়েন্সি অ্যানিমিয়ার ফাঁদে পড়েন। একবার এই অসুখে আক্রান্ত হলে শ্বাসকষ্ট ও দুর্বলতার মতো একাধিক সমস্যা পিছু নেয়। তবে চিন্তা নেই, এহেন জটিল সমস্যার সমাধান করার কাজেও সিদ্ধহস্ত গুড়ের শরবত।
গুড়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। এই খনিজ কিন্তু রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াবে। ফলে সহজেই অ্যানিমিয়ার ফাঁদ এড়ানো যাবে।
ডিটক্স ড্রিংকস
আমাদের শরীরে সবসময়ই বিপাক ক্রিয়া চলছে। এই প্রক্রিয়া শেষেই দেহে তৈরি হয় একাধিক ক্ষতিকর উপাদান। মুশকিল হলো, ঠিক সময়ে এসব ক্ষতিকর উপাদানগুলোকে দেহ থেকে বের করে না দিতে পারলে পিছু নিতে পারে একাধিক প্রাণঘাতী রোগ।
তাই তো আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা শরীরকে ডিটক্স করার কাজে গুড়ের শরবতের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন। তাদের কথায়, রোজ সকালে এটি পান করলে শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান বের হয়ে যাবে। তাই আজ থেকেই এই পানীয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে নিন।
ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় থাকবে
গুড়ে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম। তাই শরীরে ইলেকট্রোলাইটস ব্যালেন্স বজায় রাখার কাজে গুড়ের শরবতের জুড়ি মেলা ভার। বিশেষত, যারা প্রতিদিন সূর্যের প্রখর রোদের সঙ্গে লড়াই করে ঘাম ঝরিয়ে কাজ করেন, তারা সকাল সকাল এই শরবত গলায় ঢেলে নিন। এতেই শরীরে এনার্জির ঘাটতি দূর হবে। সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন না।
তবে সুস্থ থাকতে চাইলে গুডড়ের শরবতে চুমুক দেয়ার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানিপানও করতে হবে। নইলে অচিরেই পড়তে পারেন ডিহাইড্রেশনের ফাঁদে।
ইমিউনিটি বুস্টার ড্রিংকস
গুড়ের শরবত খেলেই ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি৬-এর ঘাটতি মিটে যাবে। ফলস্বরূপ বাড়বে ইমিউনিটি। এতে রয়েছে একাধিক উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ছোট-বড় অসুখকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
তাই শরীরে হাল ফেরাতে গুড়ের শরবতের সঙ্গে যত শিগগির সম্ভব মিত্রতা করে ফেলুন। তবে সাবধান থাকতে হবে, গুড়ের শরবতের সঙ্গে কিন্তু অন্য কোনো কিছু মেশানো যাবে না। শুধু এক মগ পানিতে গুড় ভিজিয়ে সকালে খেয়ে ফেললেই হবে।
(ঢাকাটাইমস/০৬সেপ্টেম্বর/এজে)