খালেদা জিয়ার নাইকো মামলায় সাক্ষী আনতে সময় নিল দুদক
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আট আসামির নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাক্ষী হাজির করতে সময় নিলো দুনীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত ৮ সেপ্টেম্বর আদালত এ মামলার বাকি ৬৪ জন সাক্ষীর নামে সমন জারি করে ১২ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেন।
সে অনুযায়ী আজ এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের ধার্য্য দিন ছিল। কিন্তু এদিনও সাক্ষী হাজির না হওয়ায় দুদকের পক্ষে হাজির করার সময় আবেদন করেন দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম।
এদিন খালেদা জিয়া পক্ষে আইনজীবীরা সময় আবেদনের বিরোধিতা করেন। কিন্তু দুদকের পক্ষে ন্যায় বিচারের স্বার্থে সময় মঞ্জুরের আর্জি জানানো হয়। তখন ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ আদালতের বিচারক জজ শেখ হাফিজুর রহমান সময় আবেদন মঞ্জুর করে ১৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ঠিক করেন। কিন্তু দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর সময় আরও বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন করলে আদালত বাড়িয়ে ২৪ সেপ্টেম্বর ঠিক করেন। আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভুইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানায়, মামলায় মোট সাক্ষী ৭০ জন। যার মধ্যে মামলায় বাদী ও দুই কানাডিয়ানসহ পাঁচজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। একজন সাক্ষী বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুল বাকীর সাক্ষ্য চলমান রয়েছে।
গত বছর ১৯ মার্চ একই আদালত খালেদা জিয়াসহ আট আসামির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জগঠনের আদেশ দেন আদালত।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম। এদের মধ্য প্রথম তিনজন পলাতক রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলা তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
চার্জশিটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়া রিট আবেদন করলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই নিম্ন আদালতে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ২০১৫ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ করে স্থাগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ ঘটনায় রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগে মামলাটি করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। তিনি ওইদিন মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর বন্দি থাকা অবস্থায় চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। দণ্ডিত হওয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় একই বছর ৩০ অক্টোবর আপিলে হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় দুই বছর জেলে থাকার পর সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে দুটি শর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করে মুক্তির আদেশ দেন।
(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/আরজেড/এফএ)