দাগনভূঞায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ হাজার কৃষক

প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩৬

মোকাররম হোসেন পিয়াস, দাগনভূঞা (ফেনী)

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পানির ঢলে ফেনী জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় তছনছ হয়ে গেছে কৃষি ও কৃষকের স্বপ্ন। ভয়াবহ বন্যায় জেলার দাগনভূঞা উপজেলার কৃষি সেক্টরে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। বন্যার পানিতে ডুবে এ উপজেলার শত শত কৃষিজমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১৫ হাজার কৃষক। 
দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে দেয়া তথ্য মতে, উপজেলায় আমনের ৪৭৫ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে ক্ষতি হয়েছে চার কোটি ৩৭ লাখ পাঁচ হাজার টাকা, ২০৪ হেক্টর জমিতে রোপণকৃত আমনের জমি বন্যার পানিতে ডুবে ক্ষতি হয়েছে ২৮ কোটি ৪৫ লাখ আট হাজার টাকা এ নিয়ে আমনে ক্ষতির পরিমাণ ৩২ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এছাড়া ৮০ হেক্টর জমিতে কৃষকের রোপণকৃত শাকসবজি পানিতে ডুবে ক্ষতি হয়েছে পাঁচ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আট হেক্টর জমির ফল বাগান বন্যার পানিতে ডুবে ক্ষতি হয়েছে ৪৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া উপজেলার ০.৫০ হেক্টর জমিতে আবাদকৃত আদা বন্যার পানিতে ডুবে ক্ষতি হয়েছে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
উপজেলার ১৬৭ হেক্টর জমিতে আবাদকৃত আউসের জমি বন্যার পানিতে ডুবে দুই কোটি ৯৬ লাখ ছয় হাজার ৮৫০ টাকা ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে এ উপজেলায় কৃষি সেক্টরে ক্ষতি হয়েছে ১৫ কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার ৮৫০ টাকা। 
উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বৈরাগীরহাটের কৃষক মান্নান বলেন, ‘তার রোপণকৃত আমনের জমি বন্যার পানিতে ডুবে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। আমন মৌসুমের ধান দিয়ে তার পুরো বছরের সংসার চলে। এখন আমি কিভাবে চলব, কেমনে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকব কিছুই বুঝতে পারছি না।’
তিনি এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার লুৎফুল হায়দার ভূইয়া বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারদের সার, বীজ ও প্রণোদনার লক্ষে আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করছি। পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে আমরা শীতকালীন সবজিসহ অন্যান্য আবাদ বিষয়ে কৃষকদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় দাগনভূঞা উপজেলার ১৫ হাজার কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে অবহিত করেছি। কৃষকদের জন্য যদি সরকারি কোনো প্রণোদনা আসে তবে তা কৃষকদের মাঝে বিলি বণ্টন করে দেয়া হবে। উপজেলা কৃষি অফিস সবসময় কৃষকদের পাশে রয়েছে।’


(ঢাকা টাইমস/১৩সেপ্টেম্বর/এসএ)