হায়েনাদের আক্রমণকে প্রতিহত করতে হবে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জিলানীর ওপর হামলা ও সংগঠনটির ক্রীড়া সম্পাদক দিদার শহীদ করে হায়েনারা (আওয়ামী লীগ) পরিষ্কার করে বলতে চাচ্ছে, তারা লুকিয়ে আছে, যেকোনো সময় আক্রমণ করবে। তাদের আক্রমণকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে।
শনিবার বিকালে শহীদ মিনারে বিএনপির আয়োজিত ছাত্র জনতার আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভায় বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের জন্য এ দেশের মানুষ সবসময় আত্মত্যাগ ও প্রাণ দিয়েছে। "৭১ যখন আমার স্বাধীন হলাম, তখন ভেবেছিলাম সত্যিকার অর্থে আমরা একটা প্রকৃত গণতান্ত্রিক দেশ পাবো। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, যারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের দাবিদার ছিলেন প্রথম তাদের অর্থাৎ আওয়ামী লীগের হাতেই গণতন্ত্র ধ্বংস হয়। ৭৫ সালে তারা একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। এ কথা একবার বললে হবে না, বারবার বলতে হবে। এই দলটি আবার ২০০৮ সালে নির্বাচনের পর রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। ছাত্রদের আন্দোলনকে বারবার দমন করতে নির্যাতন, গুম খুন করেছ। এর ফলশ্রুতিতে জুলাই মাসে ও ১৭ বছর এদেশের গণতান্ত্রিক মানুষ জীবন নিয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন।
আন্দোলনে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন কথা তুলে ধরে অভিবাদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা স্বাধীন হয়েছি, হয়তবা স্বাধীন হয়েছি কিন্তু চারদিকে নাগিনীদের বিষাক্ত নিঃশ্বাস। তারা তাদের চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্নভাবে আমাদের মাঝে বিভেদ তৈরির জন্য পাঁয়তারা করে যাচ্ছে।’
নেতাকর্মীদের কোনোভাবেই ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল বলেন, গণঅভ্যুত্থান ও আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে আমরা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পেয়েছি, এই সরকারের কাছেই দেশের মানুষের আশা- আকাঙ্ক্ষা আকাশচুম্বী। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আশা, তারা একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এর মাধ্যমে নির্বাচন দিয়ে সত্যিকার অর্থে আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে পারি ।
ছাত্রজনতার আন্দোলন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ১৬ বছর ধরে যারা পঙ্গু ও নিহত হয়েছেন তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, সরকার প্রধানের কাছে এমন দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।
১৬ বছর ধরে বিএনপি ও অন্যান্য রাজনীত দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যে সকল মামলা হয়েছে তা অতি দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে এমন দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির কাছে অঙ্গীকার করতে চাই, সত্যিকার অর্থে প্রকৃত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাব। তবে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে কেউ যেন আমাদেরকে বিপথের না নিয়ে যায়। কোনো মতেই আমরা যেন আমাদের লক্ষ্য ও পথ না হারাই।
স্মরণ সভায় বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আওয়ামী লীগ দাঁড়ানোর জন্যও একটা মুরগির খোপ পায়নি। আগামী ১০০ বছরও ছাত্র জনতার কাছে তারা আস্থা পাবে না। ছাত্র জনতার হত্যাসহ গত ১৫ বছরের গুম-খুন ও নির্যাতনের বিচার হলে আওয়ামী লীগ ‘কবরলীগে’ পরিণত হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের রক্তের সঙ্গে কেউ যেন বেইমানি না করে তার জন্য সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী।
(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/জেবি/এমআর)