খুলনায় অব্যাহত বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
নিম্নচাপের প্রভাবে গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে খুলনা মহানগরসহ জেলার ৯ উপজেলার নিচু এলাকা। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি ১৪ সেপ্টেম্বর ঘনীভূত হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় খুলনায় এই বৈরী আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
টানা বৃষ্টিতে ইতোমধ্যে শহরের বিভিন্ন সড়কে হাঁটুপানি জমেছে। রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে অফিসগামী মানুষ আর শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। বিভিন্ন সড়কে চলাচলের সময় আটকা পড়ছে যানবাহন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না অনেকেই। তবে টানা বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া শ্রমজীবীরা।
এদিকে দুই দিন ধরে টানা বৃষ্টির পানি জমে থইথই করছে খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। একই অবস্থা খুলনা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক ইনস্টিটিউটে প্রবেশের রাস্তা এবং খেলার মাঠের। গভর্মেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের খেলার মাঠে হাঁটু সমান পানি জমে আছে। এছাড়া মুজমুন্নী, বাস্তুহারা ও ৩১ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে ডুবে যাওয়া রাস্তায় অনেককে মাছ ধরতেও দেখা গেছে।
বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকের অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে খুলনা মহানগর ছাড়া জেলার ৯ উপজেলার নিচু এলাকার রাস্তাঘাটা একেবারেই তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে বহু মাছের ঘের, পুকুর। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শাকসবজির চাষিরা।
খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, নিম্নচাপের কারণে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুলনায় ৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। রবিবার বিকাল থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা যায়, খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) এলাকার মধ্যে সড়ক আছে প্রায় এক হাজার ২১৫টি, যার অধিকাংশই বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে।
উল্লেখ্য, খুলনা সিটি করপোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় গত ছয় বছরে ১০৪টি ড্রেন পুনর্নির্মাণ করেছে। ময়ূর নদসহ সাতটি খাল পুনরায় খনন ও ৩২টি ড্রেনের সংস্কার চলছে। এতে ব্যয় প্রায় ৫০২ কোটি টাকা। কিন্তু বিপুল এ অর্থ ব্যয়ের পরও নগরের জলাবদ্ধতা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
(ঢাকাটাইমস/১৫সেপ্টেম্বর/পিএস)