মহানবীর আদর্শে বৈষম্যহীন সমাজ ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন সম্ভব: ধর্ম উপদেষ্টা
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পুরো জীবনটাই আমাদের জন্য আদর্শ। তার আদর্শকে যদি আমরা ধারণ করতে পারি তাহলে একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে পারবো।’
সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ‘মহানবী সা. এর সাম্য ও সম্প্রীতির আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাব এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘মহানবীর (সা.) আদর্শ যদি আমরা ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে চর্চা করতে পারি তাহলে সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে পারবো।’
নবী করিম সা. আমাদের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ রেখে গেছেন উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘মুসলিম রাষ্ট্রে যদি কোনো মুসলমান কোনো অমুসলিম নাগরিকের ওপর অত্যাচার কিংবা জুলুম করে তবে কিয়ামতের দিন মহানবী সা. সেই মুসলিমের বিপক্ষে দাঁড়াবেন। যুদ্ধের ময়দানে নারী ও শিশুদের প্রতি একজন মুসলিম যোদ্ধার নীতি কী হবে সেই বিষয়েও নবী করীম সা. নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এছাড়া, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও রাসুল সা. অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।’
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নবী সা. এক হাজার ৪০০ বছর আগে পৃথিবীতে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই প্রথম ঘোষণা করেন, আরবের ওপর অনারবের কিংবা অনারবের ওপর আরবের, সাদার ওপর কালোর কিংবা কালোর ওপর সাদার বিশেষ কোন মর্যাদা নেই।’
ড. খালিদ হোসেন বলেন, নবী করিম সা. হলেন সারাবিশ্বের জন্য সুসংবাদদাতা। তিনিই মানব সভ্যতার ইতিহাসে প্রথম নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেন। তার পূর্বে সমাজে নারীর কোনো মর্যাদা ছিলো না, বরং নারীদেরকে নানাভাবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হতো।
‘আমরা যদি সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যপূর্ণ একটি দেশ গড়তে চাই তাহলে নবী সা. এর আদর্শ মেনে চলা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই’ বলেন ধর্ম উপদেষ্টা।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে জাতীয় নির্বাচন দেয়া হবে। এই নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ এবং সবাই তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। নির্বাচনের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার মধ্য দিয়ে আমাদের দায়িত্ব শেষ হবে।’
তাই সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য সকলকে অনুরোধ জানান ধর্ম উপদেষ্টা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূইয়া, সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মুরসালীন নোমানী।
এতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনা শেষে মুসলিম উম্মাহর সুখ-সমৃদ্ধি এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মুনাজাত করা হয়। মুনাজাত পরিচালনা করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
(ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/এসআইএস)