অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না: তারেক রহমান
প্রকাশ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮:৫৮ | আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:১১
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার লক্ষ কোটি ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ের ফসল। এ সরকারের কোনো কোনো কাজ হয়তোবা সকলের পক্ষে নাও হতে পারে। মনে রাখতে হবে, এই সরকার ব্যর্থ হলে দেশের জনগণ ব্যর্থ হবে। বহির্বিশ্বের নানা উস্কানিতেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এ জন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকার অবশ্যই জনগণের সরকার। তাই জনগণকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পাশে দাঁড়াতে হবে। তবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই এই সরকারের জরুরি কার্যক্রম হওয়া উচিত।’
মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বক্তব্য দেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা। সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটে।
এসময় নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কাজ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘সংসদীয় সরকার ছাড়া কোনো সংস্কার স্থায়ী হয় না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জবাবদিহিও নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমেই নিশ্চিত করা হয়। সুতরাং জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সংসদ এবং সরকার প্রতিষ্ঠাই অন্তর্বর্তী সরকারের সব সংস্কার কার্যক্রমের প্রথম এবং প্রধান টার্গেটও হওয়া জরুরি।অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাতে নিজেরাই নিজেদের ব্যর্থতার কারণ না হয়ে দাঁড়ায়, সে ব্যাপারে তাদেরও সতর্ক থাকতে হবে।’
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, ‘মাফিয়া সরকার শুধুমাত্র দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস করে নাই। দেশের সাংবিধানিক এবং স্বায়ত্তশাসিত সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। মাফিয়া চক্র দলীয় স্বার্থ ব্যবহার করতে যেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও ধ্বংস করেছেন। ধ্বংস করেছে বিচারবিভাগকেও।’
মাফিয়া চক্রের প্রধান শেখ হাসিনার দেশ থেকে পালায়নের মধ্য দিয়ে সেই শাসন-শোষণের অবসান ঘটেছে মন্তব্য করে তারেক রহমান আরও বলেন, ‘প্রধান বাধা হয়তো বা দূর হয়েছে; তবুও গত ১৫ বছরের জঞ্জাল এখনো দূর হয়নি। জঞ্জাল দূর করে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় কাজ চালাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।’
‘তাই জনগণের নির্বাচনে সংসদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ। ভোটারদের নির্বাচনের মাধ্যমে কাঙ্খিত সরকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সংস্কার করতে হবে। পরিকল্পিতভাবে সংস্কার কাজ এগিয়ে না নিলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য একটি পক্ষ উঠে পড়ে লাগবে’ বলেন বিএনপির শীর্ষ নেতা।
২০০৯ সালের পর আড়াই কোটি ভোটার নতুন ভোটার হয়েছে কিন্তু তারা এখনো পর্যন্ত কাঙ্খিত ভোট দিতে পারেনি উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘তারা প্রত্যক্ষ ভোটে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পায়নি।’
রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রসঙ্গে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ২০২২ ও ২০২৩ সালে বিএনপির রাষ্ট্র ও দেশ গঠনে ৩১ দফা ঘোষণা করেছিল। সেই প্রয়োজনে এই দফাকে আরও সংযোজন প্রয়োজন মনে করে বিএনপি।’
এসময় রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য রাজনৈতিক দলের গুণগত পরিবর্তন প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।