ডেঙ্গু বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যে এক মূর্তিমান আতঙ্ক

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন
 | প্রকাশিত : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৩

প্রতি বছর জুলাই-আগস্ট মাস এলেই বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ভয়াবহ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় সাধারণত প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং কখনো কখনো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যাও দেখা দেয়। দেশের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে অলিতে গলিতে পানি জমে থাকে এ সময়। সেই পানিতে জন্ম নেয় এডিস মশার লার্ভা। এমনিতেই বাংলাদেশের মানুষ পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য সচেতন নয় এবং যথেষ্ট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ভিতর থাকতেও খুব একটা উৎসাহী নয়। ফলে উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে এডিস মশককুল ব্যাপকভাবে বংশবৃদ্ধি করে। তাদের কামড়ে একজনের কাছ থেকে আরেকজনের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ ডেঙ্গু জ্বর। জ্বরের তীব্রতা মারাত্মক আকার ধারণ করে। কখনো কখনো এই ডেঙ্গুর ব্যাপকতা এমনই ছড়িয়ে পড়ে যে দেশের হসপিটালগুলোতে রোগীর ভর্তি করার মতো সিটও খুঁজে পাওয়া যায় না। ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহ আক্রমণে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ পর্যন্ত অনেকেই মারা যায়। সারা দেশে দেখা যায় নিদারুণ হাহাকার। বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব প্রতিনিয়ত জনস্বাস্থ্যের জন্য এক বড়ো চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে বর্তমানে। প্রতি বছরই গ্রীষ্মকাল ও বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়, কারণ এ সময়ে মশার প্রজননক্ষেত্র তৈরি হয়। ডেঙ্গু মূলত মশাবাহিত ভাইরাসজনিত একটি রোগ, যা এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। শহরের অপরিকল্পিত আবাসন ব্যবস্থা, জলাবদ্ধতা এবং পরিবেশ দূষণ ডেঙ্গু বিস্তারের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।

ডেঙ্গুর ইতিহাস ও বাংলাদেশে এর প্রভাব:

ডেঙ্গু জ্বরের ইতিহাস প্রাচীন হলেও আধুনিককালে এটি বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের একটি বড়ো ধরনের ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার পাশাপাশি বাংলাদেশেও ডেঙ্গু একটি মারাত্মক রোগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ২০০০ সালের পর থেকে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ২০১৯ সালে এই রোগের প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের মৃত্যুও ঘটে এ বছর। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়তে দেখা গেছে। বিশেষ করে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল অস্বাভাবিক। শহরের ঘনবসতি এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ ডেঙ্গু মশার বিস্তারে বিশেষভাবে সহায়ক।

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রকারভেদ:

ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত চারটি ভিন্ন ধরনের ভাইরাসের কারণে ঘটে: ডিইএনভি-১, ডিইএনভি-২, ডিইএনভি-৩ এবং ডিইএনভি-৪। একবার কেউ একটি ধরনে আক্রান্ত হলে, সেই ধরনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে। তবে অন্যান্য ধরনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায় এবং দ্বিতীয়বারের সংক্রমণ আরো বেশি মারাত্মক হতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে: হঠাৎ উচ্চ তাপমাত্রাসহ জ্বর; তীব্র মাথাব্যথা; চোখের পেছনে ব্যথা; পেশী এবং অস্থিসন্ধির ব্যথা (এ কারণে একে ‘ব্রেকবোন ফিভার’ও বলা হয়); ত্বকে ফুসকুড়ি বা র‌্যাশ; বমি এবং বমি বমি ভাব ইত্যাদি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গু জ্বর মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে, যা 'ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার' বা 'ডেঙ্গু শক সিনড্রোম' নামেও পরিচিত। এই অবস্থায় রক্তচাপ কমে যাওয়া, অভ্যন্তরীণ রক্তপাত হওয়া এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ না করার মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে। এই ধরনের ডেঙ্গু জীবনঘাতী হতে পারে- যদি তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা না নেওয়া হয়।

বাংলাদেশের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ:

বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা এখনো বড়ো চ্যালেঞ্জ। ডেঙ্গু মশা সাধারণত পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে, যা খুব সহজেই শহরের বিভিন্ন স্থানে জমা হওয়া বৃষ্টির পানি বা বাড়ির আশেপাশের অযত্নে পড়ে থাকা পাত্রে জমে থাকা পানি হতে পারে। এডিস মশা দিনের বেলায় কামড়ায়, এমন একটি ধারণা আগে ছিল কিন্তু এখন সে ধারণা পালটে গেছে। কেননা, দেখা গেছে এডিস মশা এখন দিনরাত যেকোনো সময়ই মানুষকে কামড়ায়। এজন্য জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা ও সুরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। শহরাঞ্চলের অপরিকল্পিত অবকাঠামো ও যথেষ্ট নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাব ডেঙ্গুর বিস্তারকে আরো জটিল করে তুলছে। জলাবদ্ধতা- যেখানে মশার বংশবিস্তার ঘটে, তা নিয়ন্ত্রণে নেই। তাছাড়া সময়মতো মশা নিধন কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত না হওয়ায় এবং ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতনতার অভাব থাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। মশা নিধনের জন্য রাসায়নিক স্প্রে করা হলেও অনেক ক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি মেনে তা করা হয় না। আবার কিছু এলাকায় মশা নিধনকারী ওষুধের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার কারণে মশারোধক কার্যক্রমও ব্যর্থ হয়।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়:

ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা খুবই বাঞ্ছনীয় ডেঙ্গুরোগ থেকে মুক্ত থাকার জন্য।

মশার প্রজননস্থল ধ্বংস:

বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলতে হবে। ফুলের টব, পানির পাত্র, প্লাস্টিকের বোতল বা যেকোনো জলাধার নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ব্যাঙ ও কিছু মাছ এবং পাখি সরাসরি মশা খেয়ে মশার বংশ বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সে কারণে ব্যাঙ-এর বংশবৃদ্ধি এবং তারা যাতে নিরাপদে বেঁচে থাকতে পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এরা নিয়মিতভাবে মশার ডিম, লার্ভা ইত্যাদি ভক্ষণ করে মশার বৃদ্ধিকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবে মশা মানুষকে কম কামড়াবে।

মশারি ও রেপেলেন্ট ব্যবহার:

রাতে মশারির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। দিনে বাইরে যাওয়ার সময় শরীরে মশারোধক লোশন বা স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। পোশাক পরিধানের বেলায় লম্বা হাতাওয়ালা পোশাক ও মোজা পরা উচিত, যাতে মশা কামড়াতে না পারে।

সরকারি উদ্যোগ ও সচেতনতা বৃদ্ধি:

সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত মশা নিধনের কার্যক্রম পরিচালনা এবং জনগণকে ডেঙ্গু প্রতিরোধের পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।

জনসচেতনতার প্রয়োজনীয়তা:

ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনসাধারণকে মশার কামড় থেকে সুরক্ষার পাশাপাশি মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংসের বিষয়ে সচেতন করতে হবে। মনে রাখতে হবে- ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য প্রতিটি ব্যক্তিরই ভূমিকা রয়েছে। মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারিভাবে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা কর্মসূচি পরিচালনা করা যেতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন প্রিন্টিং ও ইলেকট্রনিক মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডেঙ্গু বিষয়ে সর্বসাধারণকে সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন এবং এ কার্যক্রম সারা বছরই চলমান রাখা দরকার। গণমাধ্যমেও ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য ব্যাপক ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নয়ন:

ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা প্রধানত উপসর্গ নির্ভর। এখনো এর কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই এবং ডেঙ্গুর ভ্যাকসিনও সবার জন্য সহজলভ্য নয়। তাই রোগের উপসর্গ অনুযায়ী সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারিভাবে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিশেষ সেবা এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তবে শহরের হাসপাতালগুলোর পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা তৈরি করা জরুরি। বর্তমানে ঢাকা ও অন্যান্য বড়ো শহরের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের চাপ অত্যন্ত বেশি। ফলে প্রায়ই পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী ও শয্যার অভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি ও ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড স্থাপন করা সময়ের দাবি। প্রয়োজনীয় পরীক্ষার সুবিধা ও প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ডেঙ্গু সনাক্তকরণ ও চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদেরকে ঘন ঘন রক্ত পরীক্ষা করতে হয়। পরীক্ষাগুলো বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে বেশি করা হয়। পরীক্ষাগুলোর জন্য অতিমাত্রায় মূল্য ধার্য করায় রোগীদের উপর ব্যাপক চাপ পরে। পরীক্ষাগুলো খুবই সাধারণ পরীক্ষা। ইচ্ছা করলেই খরচ সাধারণ মানুষের জন্য একটু কম রাখা যেতে পারে কিন্তু ক্লিনিকগুলো তা কখনোই করে না। এই সময়ে রোগীদের ঔষধ-পথ্য এবং আনুষাঙ্গিক সবকিছুর দামও ব্যবসায়ীরা অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেয়।

জলবায়ু পরিবর্তন ও ডেঙ্গুর প্রভাব:

জলবায়ু পরিবর্তন ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবকে আরও বৃদ্ধি করছে। বৃষ্টিপাতের সময়সীমা ও তাপমাত্রার পরিবর্তন ডেঙ্গু মশার জীবনচক্র ও প্রজনন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মশার বংশবিস্তারও দ্রুত ঘটে, যা ডেঙ্গুর প্রকোপকে বাড়িয়ে দেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বর আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

ডেঙ্গু প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব এখনো পরিলক্ষিত হচ্ছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় জনসম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করতে হবে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় উন্নততর গবেষণা, মশা নিয়ন্ত্রণের টেকসই পদ্ধতি এবং রোগ প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি আরও বিস্তৃত করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে- যেমন সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কিছু সফল উদ্যোগ নিয়েছে, সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশেও উন্নত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা যেতে পারে। ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে মশার ঘনত্ব নির্ধারণ, জেনেটিক্যালি মডিফাইড ব্যবহার ইত্যাদি কার্যকর পদ্ধতিগুলো বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।

উপসংহার:

ডেঙ্গু জ্বর বাংলাদেশের জন্য একটি ক্রমবর্ধমান হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। তবে সচেতনতা বৃদ্ধি, সঠিক মশা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি এবং সময়োপযোগী চিকিৎসার মাধ্যমে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমানো সম্ভব। ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব। এজন্য শুধুমাত্র প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণই হবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সঠিক পদক্ষেপ।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন: কলাম লেখক ও সাবেক কলেজ শিক্ষক

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

মতামত এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :