‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতিতে অনুমোদন মোদির মন্ত্রিসভার
ভারতে এবার একসঙ্গেই হবে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন। এ লক্ষ্যে ‘এক দেশ, এক ভোট’ (One Nation, One Election) নীতির অনুমোদন দিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।
বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় দেশটির সাবেক রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটির প্রস্তাবনাটি গ্রহণ করা হয়। আগামী সংসদ অধীবেশনেই এই প্রস্তাবনা পেশ করা হতে পারে।
মূলত, ভারতে প্রতিবছরই কোনো না কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আর এতে সরকারকে বিপুল পরিমাণে অর্থ ব্যয় করতে হয়, তা হ্রাস করতে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও সুষ্ঠ করতে বেশ কয়েক বছর ধরে ‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতি বাস্তবায়নে জোর দিয়ে আসছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ও তার দল বিজেপি। আরও এই বিষয়টি পর্যালোচনা করার জন্য গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সাবেক রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করে মোদি সরকার। সম্প্রতিই ওই কমিটি রিপোর্ট জমা দেয়।
এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, দুই ধাপে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নীতি কার্যকর করা হবে। সমস্ত নির্বাচনের জন্য সাধারণ ইলেকটোরাল রোল তৈরি করা হবে। কোবিন্দ প্যানেলের পরামর্শ বাস্তবায়ন করতে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতিতে কী আছে?
১৮ হাজার ৬২৬ পাতার রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে আয়োজন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় ভাগে লোকসভা, বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে পঞ্চায়েত ও পুরসভার নির্বাচনও একসঙ্গে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের ১০০ দিনের মধ্যে পঞ্চায়েত-পুরসভা নির্বাচন করানোর সুপারিশ দিয়েছিল।
এর জন্য সংবিধানে কমপক্ষে ১৮টি পরিবর্তন বা সংশোধন আনা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন হবে না।
এদিকে মোদি সরকার বিল আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে সংসদে পেশ করলেও তা পাশ করাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ শুরু থেকে এই রীতির বিরোধিতা করে এসেছে কংগ্রেসসহ বিরোধীদলগুলো।
তাদের অভিযোগ, এই নীতি বাস্তবায়ন করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে সরকার। যা ভারতে রাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রের পরিপন্থী।
কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ বিজেপি-বিরোধী দলগুলোর আশঙ্কা, ‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সাংসদ এবং বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বিভিন্ন ফলাফল দেখা যায়, সেই বৈচিত্র বিনষ্ট হবে। এই সুযোগ কাজে লাগাবে বিজেপির মতো অর্থনৈতিক ভাবে প্রবল শক্তিশালী দল। তাদের প্রচারের ঢেউয়ে ভেসে যাবে তুলনামূলক ছোট আঞ্চলিক দলগুলো।
প্রসঙ্গত, মোদি সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদেই ‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতির ওপরে জোর দেওয়া হয়েছিল। গত লোকসভা নির্বাচনের বিজেপির ইস্তেহারেও এক দেশ, এক নির্বাচনের উল্লেখ ছিল।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
(ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/এমআর)