সময় থাকতে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠান, ভারতের উদ্দেশে দুদু
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘ভারত একজন গণহত্যাকারী, অর্থলোপাটকারীকে কোনো কাগজপত্র ছাড়াই আশ্রয় দেবে, এটা আমরা প্রত্যাশা করি না।‘ তিনি ভারতের সরকারপ্রধানকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘সময় থাকতে তাকে (শেখ হাসিনা) ফেরত পাঠান।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে ‘গণহত্যাকারী খুনি শেখ হাসিনার ও তার দোসরদের বিচারের দাবিতে’ এক মানববন্ধনে শামসুজ্জামান দুদু এসব বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তারা আমাদের সাহায্য করেছে। যারা এদেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের ১৮ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে, যারা এ দেশের সাধারণ জনগণ, ছাত্রদেরকে হত্যা করেছে। তারা ভারতে থাকতে পারে না। আমি ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানকে বিশেষভাবে বলব সময় থাকতে তাকে ফেরত পাঠান।’
ভারতের উদ্দেশে দুদু বলেন, ‘বাঙালি জাতি বীরের জাতি, এই জাতি যদি একবার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে গণহত্যাকারীকে ছিনিয়ে আনতে এ দেশবাসী একটুও পরোয়া করবে না। সেটা তাদেরকে মনে রাখতে হবে।’
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন, গণতন্ত্রের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। গণতন্ত্রের লড়াই তখনই শেষ হবে যখন এ দেশের সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারবে। তারা তাদের অধিকার ফিরে পাবে। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর বিএনপিসহ বিরোধীদলগুলোর সমর্থন আছে। তাদের প্রধান কাজ একটি ভালো নির্বাচন। সেই নির্বাচন যদি দিতে না পারে তাহলে দেশবাসী অস্থির হয়ে যাবে। গত ১৬ বছর ভোট দিতে পারেনি, দেশবাসীর এই অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।’ এ বিষয়ে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এই সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের সহায়তা করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। এটা অত্যন্ত ভালো কাজ হয়েছে।’ গত ১৬ বছর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে, তাদেরকেও সাহায্য করতে তিনি সরকারের প্রতি দাবি জানান।
কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, ‘এ দেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য ৭১ সালে রক্ত দিয়েছে। সেই গণতন্ত্র আমরা বারবার হারিয়েছি। এখন একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য আমি এই সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও উপদেষ্টাদেরকে আহ্বান জানাবো বেশি সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না। দেশবাসীকে পরীক্ষায় ফেলা ঠিক হবে না।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব এমরান সালেহ প্রিন্স, জাতীয় পার্টি জেপি মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, জাতীয় পার্টি জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রদান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/জেবি/কেএম)