সৈয়দপুরে সড়কগুলোতে খানাখন্দ-যানজটে ভোগান্তি চরমে
প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৪:৪৮ | আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:২০
প্রথম শ্রেণির পৌরসভার সিংহভাগ সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দ ও ব্যাপক যানজটে চরম ভোগান্তিতে জনগণ। শহরের সড়কগুলোর বেহাল দশায় নাভিশ্বাস অবস্থা পৌরবাসীর। সেইসঙ্গে মহল্লায় মহল্লায় আবর্জনার স্তূপের কারণে দূষণে দুর্ভোগে নাজেহাল লোকজন।
কিন্তু এই সমস্যা সমাধান বা জনদুর্ভোগ লাঘবের যেন কেউ নেই। কর্তৃপক্ষের নির্বিকার ভূমিকায় দিন দিন বেড়েই চলেছে দুঃসহ দুরবস্থা। সেবা পাওয়া দূরের কথা, এতটুকু স্বস্তি নেই নাগরিক জীবনে। দীর্ঘদিন থেকে এই অসহনীয় পরিস্থিতি বিরাজ করছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে।
পৌরসভার প্রধান প্রধান সড়কগুলোর প্রায় সবকটি ছোট বড় খানাখন্দে ভরপুর। শহরের ৮০ ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা। বিশেষ করে দুটি সড়কের অবস্থা করুণ। এর মধ্যে শেরে বাংলা সড়কের শহরের তামান্না মোড় থেকে ওয়াপদা মোড় পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এবং শহীদ জহুরুল হক সড়ক হয়ে মিস্ত্রিপাড়া বসুনিয়া মোড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়ক একেবারে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও রেলওয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে রেলওয়ে কারখানা হয়ে মিস্ত্রিপাড়া পর্যন্ত ১ কিলোমিটার সড়কেরও দুরবস্থা। এই সড়কগুলোতে বড় বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পায়ে হেঁটে চলাও দুরূহ হয়ে পড়েছে। যানবাহন নিয়ে চলতে গেলেই দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার সমূহ আশঙ্কা। এতে যেমন যাত্রীরা আহত হচ্ছেন তেমনি নষ্ট হচ্ছে যানবাহন।
দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর যাবত এই পরিস্থিতি বিরাজ করলেও দুর্ভোগ লাঘবে কারও কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে চরম ভোগান্তিতে দিনাতিপাত করছে সৈয়দপুর পৌরবাসী। এছাড়া পাড়া-মহল্লার সকল রাস্তারই কার্পেটিং উঠে গেছে।
অন্যদিকে শহরের মধ্যস্থলসহ প্রধান প্রধান মোড়গুলোতে যানজটে নাকাল সাধারণ মানুষ। এর মধ্যে শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়ক, শহীদ জহুরুল হক সড়ক, শেরে বাংলা সড়ক, শহীদ ক্যাপ্টেন মৃধা সামসুল হক সড়ক ( বিমানবন্দর সড়ক), শহীদ তুলশিরাম সড়ক (দিনাজপুর রোড) ও বঙ্গবন্ধু সড়ক (রংপুর রোড) জুড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টাব্যাপী দীর্ঘ যানজটে দুঃসহ অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে সৈয়দপুরবাসীকে।
মূলত এই যানজটের কারণ হলো সড়কগুলোর ফুটপাত দখল করে দোকান বসানোসহ অতিরিক্ত চার্জার অটোরিকশা চলাচল এবং দিনের বেলায় ভারী যানবাহন শহরে প্রবেশ। এসব কারণে জনদুর্ভোগ চললেও পৌর কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ নির্বিকার ভূমিকা পালন করায় জনমনে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ওইসব দোকান, অটোরিকশা ও ভারী যানবাহন থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার বিনিময়ে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে দিন দিন এই দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।
এর পাশাপাশি দীর্ঘদিন থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মহল্লায় মহল্লায় আবর্জনার স্তূপ জমেছে। সেইসঙ্গে ড্রেনে ময়লা আবর্জনা জমে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এতে যেমন শহরজুড়ে দুর্গন্ধময় ময়লার ভাগাড় গড়ে উঠেছে, তেমনি সামান্য বৃষ্টিতেই ড্রেনের পানি উপচে রাস্তাসহ বাসাবাড়ি ও দোকানে ঢুকে পড়ছে।
এমনকি মাত্র আধঘণ্টার বৃষ্টিতেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকছে সেই জলাবদ্ধতা। আর আবর্জনার দুর্গন্ধে পরিবেশের ব্যাপক দূষণ ঘটছে। এতে মশা ও মাছির উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কারণে জনজীবনে নাভিশ্বাস অবস্থা দেখা দিয়েছে। যার ফলে প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভা এখন বসবাস অযোগ্য হওয়ার পথে।
এসব বিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘যানজট নিরসনে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শহরের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে যেসব বিষয় উঠে এসেছে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। আশা করা যায় সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সমস্যা আমরা দূর করতে পারব।’
(ঢাকাটাইমস/০৬অক্টোবর/এজে)