দুবাই যাননি! শেখ হাসিনা আছেন ভারতেই

প্রকাশ | ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৩:২৬ | আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৬:৩৫

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

শেখ হাসিনা দুবাই যাননি। আছেন ভারতেই। আগের মতোই। তিনি কেন ভারত ছাড়বেন? কেন আরব আমিরাতে যাবেন? কেন এসব খবর প্রকাশিত হয়েছে? টেলিভিশনের টিআরপি বাড়ানোর জন্য? নাকি কারো কারো দৃষ্টি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য?

ঢাকা টাইমস কথা বলেছে বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে। ঢাকা, দিল্লি, দুবাইয়ের প্রত্যেকটি সূত্রই বলছে, শেখ হাসিনার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। অবাক কাণ্ড। তাহলে কারা, কেন এবং কোন সূত্রে প্রচার করলো শেখ হাসিনার ভারত ত্যাগের কথা? কী উদ্দেশ্য? কেন এই প্রচার?

শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ছাড়ার ফুটেজ যদি পাওয়া যায় তাহলে ভারত ত্যাগ কিংবা দুবাই প্রবেশের কোনো না কোনো ফুটেজও আছে। কেউ কি দেখাতে পেরেছে? শামীম ওসমানের বাসায় শেখ হাসিনা- এই প্রচার যারা দিয়েছেন তারাও কি পেরেছেন কোনো ফুটেজ দেখাতে? দুবাই বা ভারত কর্তৃপক্ষও কি এ বিষয়ে মুখ খুলেছে? না। কেউ কিছু বলেনি। বলবেও না।

কারণ, শেখ হাসিনার কাছে ভারতই সবচেয়ে নিরাপদ। ভারতই অতীতে শেখ হাসিনাকে সুরক্ষা দিয়েছে। বর্তমানে দিচ্ছে- ভবিষ্যতেও দেবে। ভুলে গেলে চলবে না- কদিন আগেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শংকর দৃঢ় কন্ঠে মিডিয়ার সামনে বলেছেন, শেখ হাসিনা যতদিন ইচ্ছে ভারতে থাকবেন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শেখ হাসিনাকে ভারত কতটা গুরুত্ব দেয় তা বুঝতে হলে তার বাংলাদেশ ত্যাগের মুহূর্তটি মনে রাখতে হবে। সেটি কেমন? মিডিয়ায় প্রথমে প্রচার হয়েছে হেলিকপ্টারে ঢাকা ছেড়েছেন শেখ হাসিনা-শেখ রেহানা। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে ভিন্ন। বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমান শেখ হাসিনাকে ভারতে পৌঁছে দিয়েছে। আর তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আটোসাটো করতে যত ধরনের ব্যবস্থা আকাশপথে নেওয়া প্রয়োজন নিয়েছে মোদি সরকার।

জনরোষে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া, একজন পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রীকে ভারত যে মর্যাদা দিয়েছে তাকে কোন দাবির মুখে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেবে এটা ভাবা কি মুর্খামি নয়? ঢাকা টাইমস এসব নিয়ে কথা বলে দিল্লি ও ঢাকার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মহলে। আসলে শেখ হাসিনা কোথায়? আচমকা তার দুবাই যাওয়ার খবরই বা কেন। ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।

দিল্লির সূত্র বলছে, শেখ হাসিনা কোথাও যাননি। যাবেনও না। দিল্লির খুব কাছেই আছেন এবং ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের বাছাই করা কয়েকজন নেতার সঙ্গে নিয়মিত কথা বলছেন। একটি সূত্র এমনও বলেছে, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ও সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম নিয়মিতই দেখা করেন শেখ হাসিনার সঙ্গে। সম্প্রতি মনিরুল দিল্লির কনাট প্যালেসের একটি দোকানে কেনাকাটা করছেন এমন ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার দুবাই যাওয়ার প্রচার পুরোটাই মনগড়া ও একপেশে গল্প বলে দাবি। কিন্তু একপেশে এই গল্পের পেছনেও তো কেউ না কেউ আছে। নাহলে একসাথে একযোগে অনেকেই এই প্রচারে নামবেন কেন?

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন, তখন দুবাই যাওয়ার খবর প্রচার কি উদ্দেশ্যমূলক? হতেই পারে। তবে সজীব ওয়াজেদ জয় যখন বলেন তার মায়ের ভারত ছাড়ার খবর ঠিক নয়, তখন কি আর কিছু বলার অবকাশ থাকে!

(ঢাকাটাইমস/০৮অক্টোবর/এআরডি)