গজারিয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, দীর্ঘ যানজট
প্রকাশ | ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৫
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ২১ দফা দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ওষুধ কোম্পানি জে এম আই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার সকাল ৮টায় কাজে যোগ না দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সামনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন দেড় হাজারের বেশি শ্রমিক। কোম্পানির পক্ষ থেকে কয়েকজন আন্দোলনককারীদের শান্ত করার চেষ্টা করলে তাদেরকে ধাওয়া দেন শ্রমিকরা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হন।
জানা যায়, বিভিন্ন কারণে কোম্পানিটিতে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এর মধ্যে গত ১০ অক্টোবর কোম্পানি কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। শ্রমিকদের দাবি, সেদিন সরকারি ঘোষণা উপেক্ষা করে বন্ধের দিন কারখানা খোলা রাখা এবং একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে ছুটি না দিয়ে উল্টো তার সাথে খারাপ আচরণ করা হয়। দীর্ঘসময় অতিবাহিত হওয়ার পরও তাকে হাসপাতালে না নিয়ে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। অসুস্থ অবস্থায় বিনাচিকিৎসায় মারা যান সেই শ্রমিক। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। এরপর থেকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা।
আন্দোলনকারী শ্রমিকদের মধ্যে ইয়াসিন ও হালিম মিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে যে আচরণ করে তা অমানবিক। সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা করে না তারা। জোর করে শ্রমিকদের ওভারটাইম করতে বাধ্য করা হয়। অসুস্থ হলে হাসপাতালে যেতে দেওয়া হয় না। বিভিন্ন কারণে বাধ্য হয়ে ২১ দফা দাবি নিয়ে আমরা মাঠে নেমেছি।
তারা বলেন, আমাদের কাজ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। বেঁধে দেওয়ার সময়ের ভেতরে নির্দিষ্ট পরিমাণ কাজ না করতে পারলে বেতন কাটা হয়। সরকারি ছুটি এমনকী ঈদের সময়ও আমরা ছুটি পাই না। এরকম অমানবিক নিয়ম অন্য কোনো কোম্পানিতে আছে কিনা আমরা জানি না। দীর্ঘদিনের সঞ্চিত ক্ষোভে আজ আমরা বাধ্য হয়ে পথে নেমেছি।’
এ ব্যাপারে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘খবর পাওয়ার পর পর আমরা ছুটে আসি। মালিক-শ্রমিক উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি। শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আমি তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি। প্রয়োজনে তাদের পক্ষে আমি মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ন্যায্য দাবিগুলো আদায় করে দেওয়ার চেষ্টা করব। কিন্তু তারা আমার কথা শুনছে না।’
এ ব্যাপারে কথা বলতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মাসুম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি কথা বলার অবস্থায় নেই। আমাদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি।’
এদিকে সকাল সাড়ে ৯টায় ঘটনাস্থলে আসেন গজারয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার। আন্দোলনকারী শ্রমিকদের তিনি মহাসড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। তাদের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণ করা হবে বলেও আশ্বস্ত করেন। তবে এই প্রতিবেদন লেখার সময় শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে যাননি।
(ঢাকাটাইমস/১৬অক্টোবর/ইএস)