তাপসী তাবাচ্ছুম ঊর্মিদেরকে ক্ষমা করা যায় না?
বাংলাদেশের দীর্ঘ সময়ের পরিক্রমায় স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন সরকারগুলোর দুঃশাসন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করার কারণে কোমলমতি ছাত্র ও জনতা পর্বতসম প্রত্যাশা নিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার ও পরবর্তীতে আর যেন কোনো কর্তৃত্ববাদী শাসনের আবির্ভাব না ঘটে এই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নোবেল লরিয়েট ড. মো. ইউনূসকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তার জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম বক্তব্যেই তিনি তার ও সরকারের সমালোচনার মাধ্যমে ভুলগুলো শুধরে দেওয়ার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান করেন। অতীতে সাইবার ক্রাইমসহ বিভিন্ন কালো আইনের খড়গে মানুষ অনেকটা বাকরুদ্ধ থাকলেও এই সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরই জনসাধারণ বাকপটু হয়ে সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে সরব হয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় অন্যান্যের ন্যায় বেগম তাপসী তাবাচ্ছুম ঊর্মিসহ অনেকেই বাক-স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করতে শুরু করেন।
আমি এই বিষয়ের জন্য একটি গসিপ শেয়ার করতে চাই। দুই চাপাবাজ তার দেশকে বড় করার জন্য একে অপরকে বলতেছেন তার দেশে এমন একটা মেশিন আবিষ্কার হয়েছে যেখানে চাল, ডাল, মসলা ও হাঁস-মুরগি প্রবেশ করিয়ে মুখে আমি বিরানি চাই বা খিচুড়ি চাই অথবা পোলাও চাই বললে প্রস্তুত হয়ে চলে আসে। অন্যজন তাকে পরাজিত করার জন্য বলে আমাদের দেশের প্রযুক্তি আরো আধুনিক। মনে করো তুমি বিরানি খেতে চাইলে বিরানি বের হয়ে আসলো, কিন্তু খাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে তুমি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে চাইলে রিসেট বাটনে ক্লিক করলে মুরগি জীবিত হয়ে কুক কুক করে বের হয়ে আসবে।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ভয়েজ অব আমেরিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে প্রশ্নের প্রেক্ষিতে ছাত্ররা রিসেট বাটন পুশ করেছেন বলে জানান। অনেকে যুক্তি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলতে রিসেট বাটনের কথা বলছেন। এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জুডিশিয়াল মুন্সিখানা শাখার সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাচ্ছুম ঊর্মি ফেসবুকে স্ট্যাটাস প্রদান করে দেশব্যাপী হইচই সৃষ্টি করেন। তিনি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, সাংবিধানিকভাবে ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটন ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলছেন তিনি, এতই সহজ! কাউন্ট ডাউন্ট শুরু হয়ে গেছে আপনার মহাশয়। প্রধান উপদেষ্টা দেশব্যাপী তুমুল বিতর্ক ও ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার পর রিসেট বাটনের ব্যাখা দিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পেলেন ও নিলেন। অন্যদিকে ঊর্মি এই সুযোগটি হতে বঞ্চিত হলো। সে হয়তো এই সুযোগ পেলে চাকরিবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি ভুল হিসেবে স্বীকার করে নিতে পারতেন। তার অবস্থান পরিষ্কার করতে পারতেন। বাংলাদেশ সরকারেরও একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে হতো না, তখন তার শাস্তি হতো ভর্ৎসনা বা সতর্ক করে দেওয়া। এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারতো।
ফেসবুকে কয়েকটা শব্দ পোস্ট করার জন্য তাকে ওএসডি করা হলো, সাময়িক বরখাস্ত করা হলো, বিভাগীয় মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, মানহানির মামলা করা হলো, রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করা হলো, তাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে বলে গণমাধ্যমের কল্যাণে জানা যাচ্ছে। এই রাষ্ট্রদ্রোহী এবং মানহানির মামলা নিয়ে আমার আপত্তি রয়েছে। ঊর্মি কিছু শব্দ লিখে পোস্ট দিয়েছেন ফেসবুকে সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধে। সরকারের বিরুদ্ধে লেখায় সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। বিচার শেষ। তিনি রাষ্ট্রবিরোধী কিছু বলেননি। রাষ্ট্র এবং সরকার কখনো এক হতে পারে না। এই রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার কোনো মেরিট আছে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না।
তিনি এবং তার মা বিষয়টি নিয়ে চ্যালেঞ্জে অবতীর্ণ হননি। অর্থাৎ যুক্তিসঙ্গতভাবেই বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমকে সুস্পষ্টভাবে বলেছেন আমার মেয়ে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেছে।
আমি মনে করি এই বিষয়গুলো অনেকটা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে। কেউ কারো সঙ্গে ঝগড়া বাধাতে গেলে যেকোনো উসিলায় লাগাতে পারে। যেমন বলে তুমি আমার দিকে তাকালে কেন ইত্যাদি, ইত্যাদি। ছোটকাল থেকে আমরা একটা ঘটনার সঙ্গে পরিচিত, এক চোর শেষরাতে পুকুরে পা ধুতে গেল। উল্টো দিকে আরেক লোক হাত-পা ধুতে গেছেন। এখন সে বলছেন এতো আমার থেকেও বড় চোর। সে আমার আগেই হাত-পা ধুয়ে চলে যাচ্ছেন। আসলে অন্য লোক ওজু করতেছে। আমাদের দেশের মানুষের একটা বৈশিষ্ট্য হলো তারা অন্যের প্রতি নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতে পছন্দ করে। এখন কথা হলো, রিসেট বাটন ক্লিক করার বিষয়টিকে আমরা ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুভাবে নিতে পারি। তবে কথা হলো মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অনেক বড় অর্জন। এই মহান অর্জন যেন আমরা না হারাই। হারালে আমাদের অবস্থা রোহিঙ্গাদের মতোই হতে পারে।
গত ০৭/১০/২০২৪ খ্রিঃ স্মারক নং ১১৩১ এর প্রজ্ঞাপনÑ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব স্বাক্ষরিত পত্রে অন্তর্বর্তী সরকার ও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই স্মারকের মাধ্যমে তাকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। জনস্বার্থে জারিকৃত আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা ছিল।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি উপরোক্ত ইস্যুকৃত স্মারকে একাধিক দুর্বলতা রয়েছে। ১। এই স্মারকে বেগম তাপসী তাবাচ্ছুম ঊর্মিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ হতে বঞ্চিত করা হয়েছে। কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টার সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করার মাধ্যমেও তাকে এ সুযোগ প্রদান করা যেত।
২। এই স্মারকে এমন কোনো বিষয় উল্লেখ করা ছিল না যে, তিনি অসৎ, দায়িত্বজ্ঞানহীন, দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, অতীতে তার কোনো মন্দ রেকর্ড ছিল বা অতীতে কখনো কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল ইত্যাদি।
৩। তিনি একজন নবীন জুনিয়র কর্মকর্তা, তার চাকরি অদ্যাবধি ২ বছরও পূর্ণ হয়নি, অর্থাৎ চাকরিটি এখনো স্থায়ী হয়নি। এই ধরনের চাকরিজীবীকে শিশু চাকরিজীবী বলা চলে। এই বয়সে আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেক ধরনের ভুলভ্রান্তি হতে পারে। এই অবস্থায় তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত, এটা অবশ্যই ভাবনার বিষয়। বিচারিক আদালত অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পূর্বে যাদের রেকর্ড ভালো থাকে তাদের ক্ষেত্রে শাস্তি প্রদান না করে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে থাকেন বা ভর্ৎসনা করেই মামলায় ইতি টানেন।
৪। তিনি কোনো ধরনের কোটায় নিয়োগকৃত কর্মকর্তা নন, তিনি মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছেন।
৫। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তিনি সহকারী কমিশনার হিসেবে স্থানীয় সরকার, রাজস্ব এবং জুডিশিয়াল মুন্সিখানা (জেএম) শাখায় অত্যন্ত সৎ, নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তার এ অকাল পরিণতিতে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অনেক কর্মকর্তা অঝোরে কেঁদেছেন।
গত ০৩/১০/২০২৪ খ্রি. আমি প্রাতিষ্ঠানিক কাজে বেগম তাপসী তাবাচ্ছুম ঊর্মিকে কল করি। আমি কয়েকদিন পূর্বে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মহোদয়কে আমার কার্যালয়ের আবেদনপত্র প্রেরণ করেছিলাম। আমি বিষয়টি অবহিত করতেই আমার পত্রের বিষয়ে জানেন বলে তাৎক্ষণিক উত্তর দেন। তৎক্ষণাৎ এই বিষয়ে কি করণীয় এটা আলোচনা করেন। আমার পত্রটি ৩ পাতার হলেও আমি প্রথমে ১ পাতা অনলাইনে প্রেরণ করি। তিনি খুবই অল্প সময়ের ব্যবধানে আমাকে পুরো আবেদনপত্র প্রেরণ করতে অনুরোধ করেন। তিনি ০৭/১০/২০২৪ খ্রি. আমাকে আবেদনের স্ট্যাটাস সম্বন্ধে অবহিত করেন। আমি ওই সময় সামাজিক মাধ্যমে তার সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি দেখতে পেলাম। এত বড় বিপদের মধ্যেও তিনি আমার আবেদনের বিষয়টি ভুলে যাননি। আমি মনে করি এই ধরনের কর্মকর্তারাই বাংলাদেশের রাডার বা অতন্দ্র প্রহরী। এই ধরনের কর্মকর্তা প্রতিটি অফিসে থাকলে পথ হারাবে না প্রিয় বাংলাদেশ। আমার কর্মজীবনে ইতিমধ্যে প্রায় ৩ হাজার আমলার সঙ্গে ডিল করতে হয়েছে। এরকম কর্মকর্তা আমার জীবদ্দশায় কমই পেয়েছি।
আবু সাঈদ নিহত হওয়ার পর বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই স্তম্ভিত হয়েছিলেন। আমি নিজে আবেগে আপ্লুত হয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্রীছাত্রীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে জাতীয় সংবাদপত্রে কয়েকটি কলাম লেখতে সক্ষম হই। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ভয়েজ অব আমেরিকাকে ১৯৭১ সালের পাকিস্তানের ভূমিকা প্রসঙ্গে বাংলাদেশের নিকট ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, রিসেট বাটন পুশ করা হয়েছে। নতুন ভঙ্গিতে দেখতে হবে না? আবু সাঈদ নিহত হওয়ায় পরিবর্তিত অবস্থায় প্রতিদিনই ঘটনাটির নতুন নতুন তথ্য এসেছে। অর্থাৎ নতুন নতুন ভঙ্গিতে দেখতে হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন ভঙ্গি তৈরি হয়েছে। যেমনÑ পুলিশ প্রতিবেদন, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট। আবু সাঈদের মাথার পিছনের আঘাত হওয়ার ঘটনা। রাবার বুলেট বিদ্ধ হওয়ার ঘটনা। ঘটনার দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা পর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমের কল্যাণে জানতে পেরেছি। এই অবস্থায় ঘটনাটি সকলেই নতুন নতুন ভঙ্গিতে দেখতে বাধ্য হয়েছে। এই অবস্থায় অন্যান্যের ন্যায় ঊর্মি বিষয়টি নতুন ভঙ্গিতে দেখতে পেলেন। তাই তিনি আবু সাঈদকে নিয়ে নতুন ধরনের মন্তব্য করে বসলেন।
আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি ২০১৮ সালে কোটাবিরোধী আন্দোলনে ঊর্মির সরব উপস্থিতি ছিল। আমি কোটাবিরোধী আন্দোলনে সংবাদপত্রে কলাম লিখায় আমাকে হুমকি দিয়েছিল। আমি ঢাকার মিরপুর মডেল থানায় জিডিও করেছিলাম।
আমার কোনোভাবেই বিশ্বাস হচ্ছে না যে, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নির্দেশে ঊর্মি সাময়িকভাবে বহিষ্কার হয়েছেন। তিনি এটুকু সমালোচনা নিতে পারবেন না, এটা অকল্পনীয়। আমার মনে হয় অতি উৎসাহীরা সরকারের আস্থাভাজন হতে ত্বরিতগতিতে ঊর্মিকে বহিষ্কার করেন।
ঊর্মি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে কেবলমাত্র কয়েকটি শব্দ লেখা মাত্রই বিষয়টি অনেকের কাছে শব্দ বোমার মতোই মনে হয়েছে, যা অনেকের নিকট পারমাণবিক বোমা হতেও ভয়ংকর হিসেবে পরিগণিত হয়েছে, যা দেখে আমি খুবই অবাক হয়েছি।
আমরা শুনতে পেলাম ঊর্মি এবং তার পরিবার নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন। এই অবস্থায় সরকারকে আহ্বান করবো অনতিবিলম্বে ঊর্মি এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার। কোনো ধরনের হামলার সম্মুখীন হলে দেশে এবং আন্তর্জাতিক মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হবে সরকারকে। ঊর্মি এবং তার পরিবার কোনো ধরনের মব বায়োলেন্সের সম্মুখীন হলে নিশ্চয়ই এই দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তাবে।
বাস্তবতা হলো এই বিষয়ে ঊর্মির কোনো ধরনের পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা ছিল না, যা একান্তই তার আবেগ এবং ১৯৭১ সম্বন্ধে পড়াশোনা। তিনি ব্যক্তিগতভাবে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি ফেসবুকে এই কথা লেখেননি যে, আমি ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি হিসেবে লিখলাম। এই সরকার স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা দিবেন বলে জনগণকে আশ্বস্ত করেছিল। তাই তিনি স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করার অভিপ্রায়ে এই পোস্ট করেছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা কয়েকদিন পূর্বে রিসেট বাটন নিয়ে ব্যাখা প্রদান করলে হয়তোবা এই ধরনের স্ট্যাটাস তিনি প্রদান করতেন না।
ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি না থাকলে এ পৃথিবীটা হয়তো একদিনও টিকে থাকত না। আমরা যদি মনে করি কোনো একটা দেশের হাতে পারমাণবিক বোমা রয়েছে, কিন্তু ওই দেশের প্রতিবেশীর হাতে এ ধরনের বোমা নেই। প্রতিবেশী দুর্বল দেশটি প্রতিদিনই তার সবল দেশটির সঙ্গে ভুলভ্রান্তি ও অন্যায় করে থাকে। পারমাণবিক বোমা সমৃদ্ধ দেশটি প্রতিটি ভুলের জন্যই প্রতিবেশী দুর্বল দেশটির বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শক্তি অর্থাৎ পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করলে দেশটি একদিনেই ধ্বংস হয়ে যেত। সবল দেশটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখছেন বলেই পৃথিবীটা এখনো স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশের সরকার ঊর্মিদের মতো নবীন শিশুতুল্য কর্মকর্তাসহ দেশের এ ধরনের ভুলভ্রান্তি করাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রয়োগ না করে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখলে হয়তোবা ফুলগুলো অংকুরেই বিনষ্ট হতো না।
এমতাবস্থায় মহানুভবতার পরিচয় দিয়ে একজন শিশু কর্মকর্তা হিসেবে ঊর্মিকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস মহোদয়কে বাংলাদেশের কোটি মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আমিও সবিনয় অনুরোধ জানাছি।
লেখক: সভাপতি, আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী সংগঠন ফ্রিডম ইন্টারন্যাশনাল এন্টি অ্যালকোহল
মন্তব্য করুন