গাজীপুরের কালিয়াকৈর
ঘুষ নেওয়া পুলিশ পরিদর্শককে স্বপদে রেখেই তদন্ত, বহুমুখী প্রশ্ন
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের কথা বলে ছয় লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা মহিদুল ইসলামকে স্বপদে রেখেই তদন্ত শুরু হয়েছে। এতে তদন্ত কাজে স্বচ্ছতা নিয়ে শঙ্কা ভুক্তভোগীর।
পুলিশ কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম কালিয়াকৈর মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শকের দায়িত্বে রয়েছেন।
এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে একটি অডিও রেকর্ড; যাতে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর সঙ্গে ঘুষ নিয়ে আলাপ করছিলেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
সাবেক একজন পুলিশপ্রধান ঢাকা টাইমসকে বলেন, অভিযোগ যেহেতু গুরুতর। তাই অবশ্যই ওই কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া উচিত।
অভিযোগকারী কালিয়াকৈর পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি এ কে আজাদ। তার সঙ্গে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড যাচাই করে দেখা গেছে, কালিয়াকৈরের সফিপুর নিশ্চিন্তপুর এলাকার লিভার্স টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড কারখানার ঝুট ব্যবসা পান এ কে আজাদের মেয়ের জামাই দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু অন্যান্য কারখানার চেয়ে ঝুটের দাম অনেক বেশি ধরেছেন ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ সুযোগে কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম ঝুটের দাম কমানোর কথা বলে ব্যবসায়ী দেলোয়ারের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। পরে ওই ব্যবসায়ীর শ্বশুর শ্রমিকদলের নেতা আজাদ ফাঁড়িতে গিয়ে পরিদর্শক মহিদুলকে প্রথমে ৫ লাখ টাকা দেন। এরপর স্থানীয় লোকজনকে ম্যানেজ করার কথা বলে ওই ব্যবসায়ী দেলোয়ারের কাছ থেকে আরও এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন পরিদর্শক মহিদুল। কিন্তু টাকা পেলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ ঝুটের দাম কমায়নি। পরে সেই টাকা ফেরত চাইলে গড়িমসিসহ ওই শ্রমিকদলের নেতা ও তার মেয়ের জামাইকে মামলাসহ নানাভাবে হয়রানির ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন মহিদুল। এনিয়ে ওই ব্যবসায়ী ও ওসির মুঠোফোনের অডিও রেকর্ড রয়েছে। ওই রেকর্ডের কথোপকথনে ওসিকে বলতে শুনা যায়, কারখানা কর্তৃপক্ষ ঝুটের রেড কোড আমাকে দিলেও আমি কাউকে দিইনি। ওই ব্যবসায়ীকে তিনি বলছেন, টাকা-পয়সার বিষয়ে সাংবাদিকদের না বলে আজাদ ভাই আমাকে বললেই হতো। আপনিও আমার কাছে আসতে পারতেন।’
এ কে আজাদ বলেন, ‘আমাকে যেহেতু মামলাসহ নানানভাবে হয়রানির হুমকি দেওয়া হয়েছে সেহেতু তাকে সরিয়ে তদন্ত শুরু করা উচিত। কারণ, না হলে আমাকে ক্ষতি করতে পারে পুলিশের ওই কর্মকর্তা। এতে সঠিক তদন্ত নিয়ে সন্দীহান আমি।’
অভিযোগের বিষয়ে মহিদুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গাজীপুর কালিয়াকৈর সার্কেল এএসপি আফজাল হোসেন খান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টি রেঞ্জ ডিআইজি অফিস দেখছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’
ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেনকে ফোন করা হলে তিনি দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মোহাম্মদ আবদুল মাবুদকে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টি মাত্র আমি অবহিত হলাম। এবিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নুর মোহাম্মদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘যেহেতু অভিযোগ গুরুতর, সেহেতু তাকে সরিয়ে তদন্ত শুরু করা উচিত। এতে ভুক্তভোগী মনে করবেন সঠিক তদন্ত হবে।’
ঢাকাটাইমস/১১নভেম্বর/এসএস
মন্তব্য করুন