গুরুতর যে অভিযোগে শিল্পী সমিতি থেকে বহিষ্কার হলেন নিপুণ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:১৫
অ- অ+

কয়েক মাস আগেও চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের ইশারাতেই চলতো চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। তিনি ছিলেন সংগঠনটির আদালতের রায়ে ঘোষিত সাধারণ সম্পাদক। তার কলমের খোঁচায় সমিতির সদস্যপদও গেছে কারও কারও। কয়েক মাসের ব্যবধানে সেই নিপুণই হলেন বহিষ্কার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জালিয়াতির অভিযোগে এই চিত্রনায়িকাকে শিল্পী সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করে মনগড়া বিবৃতি দেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় নিপুণের বিরুদ্ধে কার্যনির্বাহী পরিষদের মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত বছরের ১৬ জুলাই শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার করে কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে এক বিবৃতি দেন নিপুণ। সেখানে তিনি নিজেকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলেই উল্লেখ করেন। পরের দিন ফেসবুক ওয়ালে সেটা পোস্টও দেন। এ নিয়ে সে সময় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

বর্তমানে শিল্পী সমিতির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন জনপ্রিয় খল অভিনেতা মিশা সওদাগর। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন একসময়ের আরেক ভয়ংকর খল অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল। অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করে বিবৃতি দেওয়ায় নিপুণকে গত ৩০ জুলাই কারণ দর্শানো নোটিশ (শোকজ) দেয় মিশা-ডিপজল কমিটি।

এদিকে আবার বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডিপজলকে নিয়ে গণমাধ্যমে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করার অভিযোগও রয়েছে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে। ফলে গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজ করায় নিপুণকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় শিল্পী সমিতি।

কিন্তু সেই নোটিশের কোনো তোয়াক্কা করেননি অদৃশ্য শক্তিতে বলীয়ান নিপুণ। চালিয়ে যান সব বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। যার পরিপ্রেক্ষিতে শিল্পী সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী এই অভিনেত্রী।

এ নিয়ে আপাতত বিস্তারিত কিছু না বলতে চাইলেও বহিষ্কারের সত্যতা স্বীকার করেছেন শিল্পী সমিতির সহসভাপতি ও মুখপাত্র ডি এ তায়েব। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে জানতে নিপুণের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনে নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে সঙ্গী করে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছিলেন নিপুণ। কিন্তু ভোটে হেরে যান বিপক্ষ প্যানেলের প্রার্থী জায়েদ খানের কাছে। পরে এই নায়কের বিরুদ্ধে নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গের লিখিত অভিযোগ করেন নিপুণ। যা পরবর্তী উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

গুঞ্জন আছে, সে সময় আওয়ামী লীগের একাধিক প্রভাবশালী নেতা মন্ত্রী-এমপির সঙ্গে বিশেষ সখ্যতাকে কাজে লাগিয়ে আপিল বিভাগ থেকে নিজের পক্ষে রায় নিয়ে আসেন নিপুণ। ভোটে না জিতেও হয়ে যান শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। দুই বছর তার কথাতেই চলেছে সমিতি।

এরপর ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচনেও সাধারণ সম্পাদক পদে লড়েছিলেন নিপুণ। এবারও তিনি হেরে যান। পেরে ওঠেননি বিপক্ষ প্যানেলের প্রার্থী ডিপজলের কাছে। যদিও এবারও নির্বাচনের এই রায় নিয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন নিপুণ। কিন্তু আপিল বিভাগ থেকে রায় ডিপজলের পক্ষে আসে।

ফলে নিপুণ এখন শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তা সত্ত্বেও গত জুলাই-আগস্টে সংগঠিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করে আন্দোলনের বিপক্ষে বিবৃতি দেন নায়িকা। অবশেষে তার ফল ভুগতে হলো নিপুণকে।

(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
স্থানীয় নির্বাচন আগে দেওয়া মানে রাজনীতিবিদদের অবিশ্বাস করা: রিজভী
প্রশাসনে এখনো সরকারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়নি: এবি পার্টি
সংস্কার প্রক্রিয়া সঠিকভাবে এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
সংস্কারের সব ইতিবাচক সিদ্ধান্তে সমর্থন জানাবে জামায়াত: মোহাম্মদ তাহের
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা