জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ছাড়লেন সারজিস

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের আর্থিক সহায়তার উদ্দেশে গঠিত ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব থেকে সরে এলেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন তিনি। সেই পদে এখন আর তিনি নেই।
বুধবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন সারজিস।
তিনি লিখেছেন, ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আমি নেই। এই ফাউন্ডেশনের গতি ত্বরান্বিত করার জন্য ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র, কাঠামো ও কাজের প্রক্রিয়াতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে ‘এক্সিকিউটিভ কমিটি’ পুরো অফিসের সার্বিক বিষয় পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে। চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সেখানে অফিসপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বর্তমানে সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।’
‘গভর্নিং বডি’ ফাউন্ডেশনের পলিসি মেকিংয়ে কাজ করবে। যেখানে প্রধান উপদেষ্টাসহ চারজন উপদেষ্টা রয়েছেন (স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ, স্থানীয় সরকার, আইসিটি)। ‘সাধারণ সম্পাদক’ নামে কোনো পদ এখন নেই।’
‘এই ফাউন্ডেশন প্রথম আর্থিক সহযোগিতা শুরু করে ১ অক্টোবর, অফিস চালু হয় ১৫ অক্টোবর থেকে। আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি ২১ অক্টোবর। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২মাস ১০দিন দায়িত্ব পালন করি। এরপর আমি দায়িত্ব থেকে সরে আসি। ফাইনালি আমার সাইনিং অথরিটি ৭ জানুয়ারি হস্তান্তর হয় এবং অফিসিয়ালি আমার দায়িত্ব শেষ করি।’
‘৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভ্যারিফায়েড ৮২৬ জন শহীদ পরিবারের মধ্যে ৬২৮ জনকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। পাশাপাশি প্রায় ১১ হাজার ভ্যারিফায়েড আহতের মধ্যে প্রায় ২ হাজার আহতকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। যতদিন পর্যন্ত আমি আমার সর্বোচ্চ সময় ফাউন্ডেশনে দিতে পেরেছি ততদিন আমি দায়িত্ব পালন করেছি। যখন মনে হয়েছে, এখন থেকে ফাউন্ডেশনে প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া আমার জন্য সম্ভব হবে না, তখন দায়িত্ব থেকে সরে এসেছি।’
সবশেষে সারজিস লিখেছেন, ‘আমার কাছে নিজের সীমাবদ্ধতা এড্রেস করা এবং সে অনুযায়ী দায়িত্ব গ্রহণ বা ত্যাগ করা কোনো দুর্বলতা নয় বরং এটাতে সৎ সাহস লাগে ৷ আমি চেষ্টা করেছি আমার চেয়ারের দায়িত্বের সাথে সৎ থাকতে।’ গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর অনুমোদন দেয় সমাজসেবা অধিদপ্তর। সংস্থাটির লক্ষ্য হলো- জুলাই গণহত্যায় শহীদ ও আহতদের পরিবারকে অবিলম্বে স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক সহায়তা এবং দীর্ঘমেয়াদী সহায়তা দেওয়া।
জুলাই গণহত্যায় শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই একটি স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠন করার উদ্যোগ নেয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রধান উপদেষ্টাকে সভাপতি ও গণঅভ্যুত্থানে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধকে সাধারণ সম্পাদক করে সংস্থাটির ৭ সদস্যের কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়।
পরবর্তীতে ২১ অক্টোবর ফাউন্ডেশনের দ্বিতীয় সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সেই দায়িত্ব তিনি ছেড়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে স্নিগ্ধকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
(ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/এজে)

মন্তব্য করুন