পৃথিবীর সর্বোচ্চ দামে পৌঁছাল বিটকয়েন, মূল্য ছাড়ালো ১ লাখ ২০ হাজার ডলার

বিশ্বের সবচেয়ে দামি ভার্চুয়াল মুদ্রা বিটকয়েন নতুন এক ইতিহাস গড়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকা এই ক্রিপ্টোকারেন্সির দাম প্রথমবারের মতো ১ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সোমবার এশিয়ান ট্রেডিং সেশনে এর সর্বোচ্চ মূল্য ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ২০৭ ডলার এবং পরে এটি ১ লাখ ২০ হাজার ৮৫৬ ডলারে লেনদেন হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে বিটকয়েনের দাম প্রায় ২৯ শতাংশ বেড়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে ডিজিটাল সম্পদের ওপর নতুন আইনগত বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়া, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করেছে।
এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে ‘ক্রিপ্টো প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণা করে এই খাতের পক্ষে আইন সংস্কারের আহ্বান জানানোয় বাজারে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকরক বর্তমানে তাদের স্পট বিটকয়েন ইটিএফে সাত লাখেরও বেশি বিটকয়েন ধারণ করছে। বড় বড় প্রতিষ্ঠানের এই ধরনের অংশগ্রহণ বাজারে বিশ্বাস ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ক্রিপ্টোকারেন্সি বিশ্লেষকদের মতে, দাম ১ লাখ ২০ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ায় এখন নতুন লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
বর্তমানে বিটকয়েনের বাজারমূল্য প্রায় ২.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ইথার-এর দামও বেড়ে ৩ হাজার ৪৮ ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। সমগ্র ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারের সম্মিলিত মূল্য এখন ৩.৭৮ ট্রিলিয়ন ডলার।
বিটকয়েন হলো একটি ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা, যেটি অনলাইনেই তৈরি ও ব্যবহৃত হয়। এটি কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় বরং এটি ব্যবহারকারীদের নিয়ন্ত্রণাধীন।
বিটকয়েন লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা হয় পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্ক এবং ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রটোকল। লেনদেনগুলো ব্লকচেইন নামক একটি পাবলিক ডিজিটাল খতিয়ানে রেকর্ড হয় এবং মাইনিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাচাই ও অনুমোদিত হয়।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপানসহ বিশ্বের ৬৯টি দেশে বিটকয়েন লেনদেন সরকারি স্বীকৃতি পেয়েছে। এমনকি ভারতও আনুষ্ঠানিকভাবে এ মুদ্রাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
তবে বাংলাদেশে ২০১৪ সাল থেকে বিটকয়েন লেনদেন নিষিদ্ধ। বিটকয়েন নিষিদ্ধ এমন দেশের তালিকায় আরও রয়েছে আলজেরিয়া, বলিভিয়া, ইকুয়েডর, মরক্কো, নেপাল ও মেসিডোনিয়া।
বিশ্বজুড়ে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া এই ডিজিটাল মুদ্রা বাংলাদেশে এখনো অনিয়ন্ত্রিত ও নিষিদ্ধ। তবে বিশ্ব বাজারের দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে এ খাতে ভবিষ্যৎ নীতিমালা নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা।
(ঢাকাটাইমস/১৪ জুলাই/আরজেড)

মন্তব্য করুন