জামায়াতের মহাসমাবেশ ঘিরে
র্যাব-পুলিশের নজিরবিহীন নিরাপত্তা

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশে যোগ দিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে আসছেন। আয়োজকদের দাবি—এই সমাবেশে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম ঘটবে। আজ শনিবারের সমাবেশ ঘিরে রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন প্রস্তুতি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে রয়েছে ১২ হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্য। তাদের পাশাপাশি সাদা পোশাকের গোয়েন্দা, র্যাব এবং জামায়াতের স্বেচ্ছাসেবকরাও দায়িত্ব পালন করছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) এস এম নজরুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং পুরো ঢাকাজুড়েই কড়া নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়ে পুলিশ তৎপর।’
তিনি জানান, থানাভিত্তিক পুলিশ ফোর্স ছাড়াও অতিরিক্ত চার হাজার পুলিশ সমাবেশস্থল ও আশপাশের এলাকায় মোতায়েন আছে। আটটি ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা ঢাকার বিভিন্ন রুটে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জানিয়েছেন, সমাবেশের মূল স্থানে পুলিশ ও সিভিল পোশাকের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক তদারকিতে আছে। বাইরে থেকে আসা গাড়িগুলোর জন্য নির্ধারিত রুট ও পার্কিং স্থান নিশ্চিত করেছে ট্রাফিক বিভাগ।
এদিকে সমাবেশ ঘিরে র্যাবও বহুমাত্রিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে জানান, ঢাকাস্থ যতগুলো ব্যাটালিয়ন আছে তাদের টহল গাড়ি এনে মহাসমাবেশের চারপাশে আমাদের নিরাপত্তা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। চারপাশে র্যাবের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। বিভিন্ন মোড় বিশেষ করে কর্মীরা যেখান দিয়ে যাতায়াত করবে সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে এজন্য র্যাবের সদস্যদের বসানো হয়েছে— যাতে আমরা সবকিছু মনিটরিং করতে পারি। পাশাপাশি আগে থেকেই র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম চালু আছে এবং তা চলমান আছে।
ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের ডগ স্কোয়াডের দুটি ইউনিট প্রস্তুত আছে। পাশাপাশি বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের বিপুল সংখ্যক লোক প্রস্তুত আছে। যাতে তাদের ডাকা মাত্র দ্রুত ঘটনাস্থলে যেতে পারেন।’
তবে শুধু রাষ্ট্রীয় বাহিনী নয়, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় তৎপরতা দেখা গেছে। দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, সমাবেশস্থলে ২০টি পয়েন্টে ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছে। ঢাকার বাইরে থেকে আসা যানবাহনের জন্য ১৫টি আলাদা পার্কিং জোন নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘সমাবেশে আমাদের মূল বার্তা হবে ঐক্যের। দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান জাতির উদ্দেশে কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাবেন।’
সমাবেশের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার কথা দুপুর ২টায়, তবে সকাল ১০টা থেকেই মঞ্চে পারফর্ম করছেন ইসলামি সংগীতশিল্পীরা। ভোরের আলো ফোটার আগেই নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে পূর্ণ হয়ে যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। সারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দলটির সমর্থকরা সমাবেশে অংশ নিতে রাজধানীতে এসে পৌঁছেছেন।
(ঢাকাটাইমস/১৯জুলাই/এসএস)

মন্তব্য করুন