জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশে প্রথম পর্বে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসমুদ্র

রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রথম একক জাতীয় সমাবেশ শুরু হয়েছে সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে। শনিবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে সমাবেশের প্রথম পর্বে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়, উপস্থাপনায় ছিলেন সাইফুল্লাহ মানসুর। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয় মহানগর ও দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় পর্যায়ের শিল্পীরাও।
এর আগে সকালে সমাবেশ মঞ্চে এসে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর শুকরিয়া। আমাদের সমাবেশ ইতোমধ্যে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন তিনি। আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের দোয়া করেন।
এসময় জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে সালাম ও শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন দলটির সেক্রেটারি। তিনি বলেন, দেশের জাতীয় নেতৃবৃন্দ আসতে শুরু করেছেন। দুপুর ২টায় তাদের বক্তব্য শুরু হবে। তবে সকাল ১০টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু করার কথা ছিল। আপনারা বললে আগেই কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু করি।
সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের সমাবেশে মানুষের ঢল নেমেছে। সমাবেশ শুরুর অনেক আগেই দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে হাজার হাজার জামায়াতের নেতাকর্মী অবস্থান করছেন।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা বাস, ট্রেন ও লঞ্চযোগে এসে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করছেন। অনেকেই হাতে দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ বহন করছেন। কেউ কেউ পরেছেন দাঁড়িপাল্লা ও দলীয় মনোগ্রামযুক্ত টি-শার্ট ও পাঞ্জাবি।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থেকে আগত জামায়াত কর্মী সোহেল হাসান জানান, “আমাদের উপজেলা থেকে ৪০টি বাসে প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মী এসেছি।” সিরাজগঞ্জ থেকে আসা এরশাদ আলী জানান, “বাসে ও ট্রেনে করে প্রায় ৩০-৪০ হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে অংশ নিতে এসেছেন।”
সমাবেশ সফল করতে কাজ করছে প্রায় ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। সকাল থেকে হাইকোর্ট, শাহবাগ, মৎস্যভবনসহ আশপাশের এলাকায় নির্ধারিত পোশাকে স্বেচ্ছাসেবকরা অবস্থান নিচ্ছেন। তারা আগতদের সঠিক গেট ও প্রবেশপথ বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
জাতীয় সমাবেশে জামায়াত সাত দফা দাবি তুলে ধরেছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ
সকল গণহত্যার বিচার
প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার
‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন
এক কোটির বেশি প্রবাসী ভোটারের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দলটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এককভাবে জাতীয় সমাবেশ করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি দেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে।
(ঢাকাটাইমস/১৯ জুলাই/আরজেড)

মন্তব্য করুন