সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী তিন কৃতীকে সাতক্ষীরায় গণসংবর্ধনা
সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের সাফল্যে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন সাতক্ষীরার তিন কৃতী খেলোয়াড় অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, ডিফেন্ডার মাছুরা পারভীন এবং আফঈদা খন্দকার প্রান্তি। ২০২২ সালে নেপালের দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে রচিত হয়েছিল এক নতুন গল্প। একই মাটিতে ২০২৪ সালে সেই গল্পের নতুন অধ্যায় লিখল বাংলাদেশের মেয়েরা। টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে দেশকে গর্বিত করেছে নারী ফুটবল দল।
এই সাফল্যের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সাতক্ষীরার সর্বস্তরের মানুষেরা এগিয়ে এসেছেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বে ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ। তিনি বলেন, এই তিন মেয়ে শুধু সাতক্ষীরার নয়, পুরো বাংলাদেশের গর্ব। তাদের সাফল্য নতুন প্রজন্মকে আরও অনুপ্রাণিত করবে। এসময় সাতক্ষীরার খেলোয়াড়দের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ সুবিধা বৃদ্ধির আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।
অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বক্তব্য রাখতে গিয়ে আক্ষেপ করে বলেন, ‘শুধু ফুটবলে নয়, বিভিন্ন খেলায় সাতক্ষীরার ছেলেমেয়েরা নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমার ১৫ বছরের অভিজ্ঞতায় সাতক্ষীরা জেলা স্টেডিয়ামে বড় ধরনের কোনো টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়নি, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। পরবর্তী প্রজন্মের সাবিনা, মাছুরা-প্রান্তিদের উঠিয়ে আনার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা চাই আমাদের মতো সাতক্ষীরা থেকে আরো ভালো ভালো খেলোয়াড় উঠে আসুক, পরবর্তীতে তাদেরকে যেন আমরা সম্মানিত করতে পারি। আমি সাতক্ষীরা জেলার প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাবো, ফুটবলের পাশাপাশি যেন অন্যান্য খেলাকে প্রাধান্য দিয়ে সঠিক পরিচর্যা করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সাফল্যের পেছনে পুরো জাতির দোয়া এবং পরিবারের সমর্থন ছিল। সাতক্ষীরার মানুষ সবসময় আমাদের পাশে থেকেছে। আপনাদের এই ভালোবাসা আমাদের আরও বড় স্বপ্ন দেখতে সাহস যোগায়।’ মাছুরা পারভীন এবং আফঈদা খন্দকার প্রান্তি তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো করার প্রতিশ্রুতি দেন।
সাবেক ফিফা রেফারি তৈয়ব হাসান শামসুজ্জামানের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম মুনীর, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল হাশেম, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বাসুদেব বসু প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে সাতক্ষীরার এই তিন গর্বিত কন্যাকে ফুলেল শুভেচ্ছা, ক্রেস্ট এবং সংবর্ধনা স্মারক দেওয়া হয়। এই আয়োজনে ফুটবলপ্রেমীদের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন বয়সী মানুষজনের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। সাতক্ষীরা যেন নতুন করে সাফল্যের মানচিত্রে নিজেদের অবস্থান জানান দিল। এই তিন কৃতি ফুটবলারের সাফল্য সাতক্ষীরার ক্রীড়াঙ্গনের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা বলে মনে করছেন সাতক্ষীরাবাসী।
(ঢাকা টাইমস/২২নভেম্বর/এসএ)
মন্তব্য করুন