সিরাজগঞ্জে কাঁচাবাজারে আগুন, বিপাকে নিম্নআয়ের মানুষ
সিরাজগঞ্জে নিত্যপণ্যের বাজারে দামের উত্তাপে ক্রেতাসাধারণ পুড়ে ছারখার হচ্ছে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের মধ্যে নাভিশ্বাস দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই নিত্যপণ্য কাঁচাবাজার, মাছ, মাংস এমনকি মসলাজাত পণ্যের দামে হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। বাজারে বেড়েই চলছে অস্থিরতা। সরবরাহে খুব একটা ঘাটতি না থাকলেও বেশিরভাগ পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। সপ্তাহের ব্যবধানেই দাম বেড়েই যাচ্ছে বিভিন্ন পণ্যের। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার সাথে সাথে অধিকাংশ পরিবারে জুটছে না একবেলা আমিষ।
শনিবার সরেজমিনে শহরের পাইকারির বড় বাজার, বানিয়াপট্টি বাজার, বাজার স্টেশন বাজার, কালিবাড়ি বাজার, বাহির গোলা বাজার, কাঠেরপুল বাজার, সমাজ কল্যাণ মোড় বাজার ও কাজিপুর রাস্তার মোড় বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের ব্যবধানে এই সপ্তাহের প্রথম থেকেই সবজির দাম বেশি। বর্তমানে বাজার মূল্য বেশি হওয়ার কারণে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত ক্রেতাদের নাগালের বাইরে সকল সবজি। সবজির বাজার আগুন হওয়ার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে নিয়মিত বাজার করতে। সবজির বাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না আসলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হবে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষসহ সকলের।
অন্যদিকে গরিবের প্রোটিন হিসেবে পরিচিত ডিমের বাজারেও যেন আগুন লেগেছে। বর্তমানে ডিমের বাজার মূল্য ৪৮-৫০ টাকা। শাক-সবজি গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ৩-৪ টাকা বেড়েছে। ডিম থেকে শুরু করে শীতকালীন শাক-সবজিও ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিম্ন আয়ের মানুষসহ মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের।
বড় বাজারে সবজি ক্রয় করতে আসা শাহিন নামের একজন ক্রেতার সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘মাসে যে টাকা বেতন পাই সেই টাকা দিয়ে ও মাসের সবজি কেনা হয় না। তাহলে মাছ, মাংস সহ অন্যান্য সামগ্রী কিনবো কেমন করে। এই ভাবে যদি নিত্য পণ্যের দাম বাড়তেই থাকে তাহলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।‘
অপর দিকে সবজি বিক্রেতা সূজন বলেন, ‘আমাদের কেনা দিয়ে বেচা। পণ্য কম দামে কিনলে কম দামে বিক্রি করি আর বেশি দামে কিনলে বেশি দামে বিক্রি করি। এখানে তো আমাদের কিছু করার নেই। বর্তমানে বেচাকিনি কম কারণ বাজারে আগের মতো আর লোকজন আসে না। কারণ জিনিসপত্রের দাম বেশি।’
বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্র নেতা ও জেলা বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক জিন্নাহ সরদারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, বাজারে পাঙাশ মাছের কেজি ২০০-২৫০, ছোট আকারের রুই ২৮০-৩০০, মাঝারি আকারের রুই কেজি ৩২০-৪০০ এবং বড় আকারের রুই ৪৫০-৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাতল ৪৫০-৫০০ ও সরপুঁটি ২৫০-৩০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। দেশের জাতীয় মাছ ইলিশ ছোট আকৃতির ৭০০-৭৫০, বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০০০, নদীর টেংরা, বোয়াল (ছোট), বাইম, চেলা ইত্যাদি মিশাল (মিশ্র) মাছ প্রতিকেজি ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বর্তমানে বাজারে মাছ আমদানি কম এবং বেচাকেনাও কম। বড় মাছ ও ছোট মাছের দাম ওজনের ওপর নির্ভর করে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে গত সপ্তাহের চেয়ে এই সপ্তাহে আমদানি কম ও বেচাকেনা কম। কারণ বাজারে আগের মতো আর লোকজন হচ্ছে না।
চলমান সকল দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কেউ যদি বেশি মূল্যে কোনো পণ্য বিক্রি করে অথবা অধিক লাভের আশায় কোনো পণ্য মজুদ রাখে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।(ঢাকা টাইমস/২৩নভেম্বর/এসএ)
মন্তব্য করুন