বীজের চড়া দামে বাড়ছে খরচ
রাজবাড়ীতে অতিবৃষ্টিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ফলনে শঙ্কা
অতিবৃষ্টির কারণে রাজবাড়ীতে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ পিছিয়ে গেছে। দেরিতে পেঁয়াজ আবাদে কাঙ্ক্ষিত ফলন ও বাজারে দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত জেলার চাষিরা। ইতিমধ্যে যারা অল্প কিছু জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ করেছেন তারাও পড়েছেন বিপাকে। অতিবৃষ্টির কারণে অনেক পেঁয়াজের খেত নষ্ট হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে পচন রোগ।
কৃষি বিভাগ বলছে, লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কৃষকের পাশে আছে কৃষি বিভাগ। সামনে আর কোনো বৃষ্টিপাত না হলে পেঁয়াজ রোপণ ও ফলন ভালো হবে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পেঁয়াজ উৎপাদনে সারা দেশে তৃতীয় অবস্থানে রাজবাড়ী। জেলার প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। চলতি মৌসুমে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে শুরু হয়েছে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ। এ মৌসুমে জেলায় প্রায় ৮১ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপন্ন হবে।
স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে জানা গেছে, এখন আগাম পেঁয়াজ ও রসুনের বীজ রোপণ করা হচ্ছে। তবে ভরা মৌসুমের হালি পেঁয়াজের আবাদ আরও মাসখানেক পর শুরু হবে।
তবে বীজের অস্বাভাবিক দাম ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান চর দৌলতদিয়া গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, শুধু বীজে যদি এত টাকা লাগে, তাহলে রাসায়নিক সার, কীটনাশক, ওষুধ, সেচ, কৃষি শ্রমিকসহ অন্য খরচ জোগানো অনেকের সাধ্যের বাইরে চলে যাবে।
পেঁয়াজ-রসুনের বীজের দাম বেশি বলে স্বীকার করেন রাজবাড়ী সদরের কৃষি কর্মকর্তা জনি খান। তবে ভালো ফলন হলে কৃষক পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে জানান তিনি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল আলম বলেন, বীজসহ সব ধরনের পণ্যের দাম ঠিক রাখতে বাজার তদারকি করা হচ্ছে। কেউ যদি যৌক্তিক মূল্যের চেয়ে বেশি দাম নেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. মো. শহিদুল ইসলাম জানান, মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ প্রায় এক মাস দেরিতে শুরু হচ্ছে, তবে উৎপাদনে কোনো প্রভাব পড়বে না। কৃষি বিভাগ পেঁয়াজের ফলন ভালো করার জন্য নির্ধারিত ২৪টি প্লটে সার ও বীজ সহায়তা দিয়েছে।
এ বছর রাজবাড়ী জেলার ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আগামী ২ মাসে কোনো বৃষ্টি না হলে পেঁয়াজের ফলন বাম্পার হবে– প্রকৃতির কাছে সেই আশাই কৃষকদের।
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কয়েক দফা অতিবৃষ্টির কারণে জমিতে জো না আসায় বেশ দেরিতে শুরু হয়েছে মুড়িকাটার অবাদ। অনেক জমিতে এখনো রয়েছে পানি। এত দেরিতে মুড়িকাটার আবাদ নিয়ে শঙ্কায় জেলার কৃষকেরা।(ঢাকাটাইমস/২৪নভেম্বর/মোআ)
মন্তব্য করুন