ব্যাংকার হয়ে আমি কীভাবে লেখালেখির সময় পাই?

অনেকে প্রায়ই জিজ্ঞেস করেন— “ব্যাংকের মতো ব্যস্ত পেশায় থেকেও আপনি লেখালেখির সময় কোথায় পান?”
তাদের জন্য আমার উত্তর খুবই সরল—
সময় কখনো নিজে থেকে পাওয়া যায় না, সময় তৈরি করে নিতে হয়।ব্যাংকিং নিঃসন্দেহে একটি সময়নির্ভর ও দায়িত্বপূর্ণ পেশা। এখানে প্রতিটি মুহূর্তে প্রয়োজন হয় মনোযোগ, নিষ্ঠা ও সর্বোচ্চ দক্ষতা।
তবু আমি মনে করি, প্রতিটি পেশার মধ্যেই সৃজনশীলতার একটি দিগন্ত লুকিয়ে থাকে—যদি আমরা সেটা সময়মতো খুঁজে নিতে পারি।
ব্যাংকের কাজ শুধু হিসাব-নিকাশে সীমাবদ্ধ নয়। এখানে মানুষের স্বপ্নের সাথে কাজ করার একটি সুযোগ তৈরি হয়। দেশের অর্থনীতির স্পন্দন ছুঁয়ে দেখার এক অনন্য সুযোগও আছে- এই অভিজ্ঞতাগুলো আমাকে ভাবায়, প্রশ্ন তৈরি করে, কখনও অজানা গল্পের খোঁজে পাঠায়।
সেই ভাবনার ভেতর থেকেই জন্ম নেয় আমার লেখালেখির স্পৃহা। অনেক সময় এই লেখা পেশাগত গণ্ডি ছাড়িয়ে স্পর্শ করে সমাজ, দেশ কিংবা বৈশ্বিক নানা বিষয়কে- গভীরভাবে, চিন্তাশীলভাবে।
তবে লেখালেখির সঙ্গে পথচলা প্রায় ২২ বছরের। পেশাগত দায়িত্বের বাইরে এতদিন একটি শখকে ধরে রাখা খুব সহজ ছিল না - কিন্তু এই দীর্ঘ পথটাই আমাকে নিরলস চলার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
দিনের শেষে যখন শহরটা নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে, আমি চোখ মেলে দেখি এক ভিন্ন জগৎ। সেই নীরবতায় আমি নিজেকে পৃথিবীর বুকে হাতড়ে বেড়াই লেখালেখিতে, চিন্তায়, অনুভূতিতে! আবার কখনও ভোরবেলায়, যখন চারপাশ ঘুমিয়ে থাকে, তখন আমি জেগে উঠি শব্দের নেশায়, লেখার তাগিদে।
লেখালেখি আমার কাছে শুধুই শখ নয়—এটা আমার জীবনের অংশ, আমার আত্মার খোরাক। তাই যত ব্যস্তই থাকি না কেন, দিনে-রাতে কোনো না কোনো সময়ে আমি একটু সময় বের করে নিই—নিজের সঙ্গে কথা বলার, ভেতরের কথাগুলোকে আলোর মুখ দেখানোর জন্য।
আমি বিশ্বাস করি—যদি সত্যিই কোনো কিছুকে ভালোবাসা যায়, তার জন্য সময় বেরিয়ে আসে। আমি শুধু বিশ্বাস করি না, আমি সেটা প্রতিদিন করে চলি।
এই তো—এভাবেই লেখালেখির জন্য সময় পাই।
লেখক: ব্যাংকার ও উন্নয়ন গবেষক
ই-মেইল: [email protected]

মন্তব্য করুন