ফের বিয়ে করছেন অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস
আরও একবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা তথা এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান জেফ বেজোস। দীর্ঘ ৮ বছর সম্পর্কে থাকার পর বান্ধবী লরেন সাঞ্চেজের সঙ্গে তার গাঁটছড়া বাঁধার গুঞ্জন সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যম জুড়ে।
২০২৩ সালের মে মাসে বেজোস ও লরেন ফ্রান্সের দক্ষিণে ছুটি কাটাতে যান। সেখানেই তার প্রমোদতরীতে লরেনকে ২১ কোটি ১১ লাখ টাকার একটি গোলাপি হিরার আংটি দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব করেছিলেন অ্যামাজন কর্তা। সেই বিরল হিরাটি ২০ ক্যারাটের।
বিভিন্ন সূত্রের খবর, আসন্ন বড়দিনেই ঘনিষ্ঠদের সাক্ষী রেখে এক জমকালো বিয়ের অনুষ্ঠানে চার হাত এক হবে বেজোস-লরেনের। সেই বিয়ের প্রস্তুতিতেই আপাতত ব্যস্ত যুগল। এমনটাই বলা হয়েছে ‘দ্য সান’-এর একটি প্রতিবেদনে। কয়েক বছর ধরেই বেজোস-লরেনের বিয়ে নিয়ে চর্চা জারি ছিল বিভিন্ন মহলে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমেরিকার কলোরাডোর অ্যাস্পেনে বসতে পারে এই তারকাখচিত বিয়ের আসর। ঘন ঘনই বেজোস ও লরেনকে এই শহরে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। তাই নিজেদের নতুন জীবন শুরু করার জন্য প্রিয় শহরটিকে বেছে নিতে চলেছেন হবু দম্পতি।
তবে দুই তারকার বাগদান অনুষ্ঠানটিও কম আকর্ষণীয় ছিল না। চার হাজার কোটির বিলাসবহুল প্রমোদতরী ‘কোরু’তে বাগদত্তার সঙ্গে আংটিবদল পর্ব সারেন বেজোস। বিশ্বের অন্যতম ধনকুবেরের এই প্রমোদতরীও বিলাসিতায় মোড়া। সুইমিং পুল থেকে শুরু করে হেলিপ্যাড, কী নেই সেখানে!
সেই বাগদান পর্বে অতিথি তালিকায় বিল গেটস, লিওনার্দো দি’ক্যাপ্রিও এবং জর্ডনের রানি রানিয়ার মতো উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের নাম ছিল বলে জানা যায়।
লরেন সাঞ্চেজ এবং জেফ বেজোস তাদের এই সম্পর্ক নিয়ে বেশ খুশি। একাধিক সাক্ষাৎকারে দুজনের সেই সমীকরণ প্রকাশ পেয়েছে। একাধিক সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার পর বেজোসের হাত ধরে আরও এক বার থিতু হতে চাইছেন লরেন, এমনটাই জানিয়েছে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমগুলো।
নিউ মেক্সিকোয় ১৯৬৯ সালে লরেনের জন্ম। সেই হিসাব অনুযায়ী এখন তার বয়স ৫৫ বছর। লরেনের কর্মজীবন শুরু লস অ্যাঞ্জেলসের একটি টিভি চ্যানেলের ডেস্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে। কখনও টেলিভশনে সঞ্চালিকা, কখনও সাংবাদিক, এমনকি অভিনেত্রী হিসাবেও কাজ করেছেন লরেন।
এক বিখ্যাত ম্যাগাজিনের বিচারে বিশ্বের প্রথম ৫০ জন সুন্দরী মহিলার তালিকায় লরেন ছিলেন অন্যতম। নিউইয়র্কের একটি সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনের ‘হট বডিজ’ প্রতিবেদনেও লরেনের নাম ছিল।
২০১৬ সাল থেকেই লরেনের সঙ্গে পরিচয় জেফের। ক্রমে তারা একে অপরের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। জেফের আগে লরেনের জীবনে একাধিক পুরুষের প্রবেশ ঘটেছে।
তিন সন্তানের মা সাঞ্চেজ। তার প্রথম বিবাহের সন্তান নিক্কো, যার বয়স ২১। টনি গঞ্জালেজ সেই সন্তানের পিতা। বাকি দুই সন্তান সাঞ্চেজের দ্বিতীয় বিবাহের। প্যাট্রিক হোয়াইটসেলের সঙ্গে সংসার করার সময় জন্ম হয় ইভান ও এলার। ইভানের বয়স ১৮, এলা ১৬’র কিশোরী।
২০০৫ সালে প্রথম স্বামী টনির সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তার। নিক্কোর বয়স তখন মাত্র চার বছর। এরপর হলিউড এজেন্ট প্যাট্রিক হোয়াইটসেলকে বিয়ে করেন তিনি। ২০০৬ সালে ছেলে ইভান এবং ২০০৮ সালে মেয়ে ইলার জন্ম হয়।
২৫ বছর ধরে বেজ়োসের সঙ্গী ছিলেন ম্যাকেঞ্জি স্কট। জেফের সঙ্গে ম্যাকেঞ্জি ২৫ বছর দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন। জেফ এবং ম্যাকেঞ্জির বিচ্ছেদ ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দামি বিচ্ছেদ।
বেজোসেরও রয়েছে তিন সন্তান। প্রাক্তন স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি স্কটের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর গত বছরের মার্চ থেকে একটি বাড়ি ভাড়া করে সঙ্গী লরেনকে নিয়ে থাকছেন বেজোস। তার জন্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ভাড়া গুনতে হয় অ্যামাজ়ন কর্তাকে।
শুধু সম্পর্ক বা বিয়ে নয়, বিয়ের আগেই বিয়ে ভাঙার মূল্য কত হবে সে নিয়ে জোর চর্চা হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে। ‘প্রিনাপ’ নামের একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন দুজনেই। সেখানে বলা হয়েছে, বিয়ে না টিকলে বিশাল অঙ্কের একটি খোরপোশ পাবেন লরেন।
জেফের প্রাক্তন স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি স্কট এই বিবাহ বিচ্ছেদে প্রায় ৩১৪ কোটি ৩২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা খোরপোশ পেয়েছিলেন। সঙ্গে ছিল অ্যামাজনের যৌথ মালিকানার ২০০ লাখ শেয়ার। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তাই বিয়ের আগেই চুক্তি সেরে রেখেছেন জেফ।
জেফ বেজোসের মতো লরেন সাঞ্চেজও মহাকাশ অভিযান নিয়ে অত্যন্ত উৎসাহী। তিনি নিজে বিমান, হেলিকপ্টার চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আগামী দিনে জেফ বেজোসের মহাকাশ অভিযান সংস্থা ‘ব্লু অরিজিন’-এর সঙ্গে মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনাও সেরে ফেলেছেন।
(ঢাকাটাইমস/১৮নভেম্বর/এজে)
মন্তব্য করুন