ত্রিপুরায় বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য সব হোটেল বন্ধ ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩
অ- অ+

ত্রিপুরা রাজ্যের সব হোটেল বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের হোটেল এসোসিয়েশন। অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, হোটেল বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য ঘর দেবে না। রেস্তরাঁ তাদের জন্য় কোনও খাবার দেবে না। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।

এর আগে ত্রিপুরার একটা বেসরকারি হাসপাতাল জানিয়েছিল বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসা করব না। কার্যত ভারতের পতাকার অপমান করেছেন বাংলাদেশিরা। তারপরেই এই সিদ্ধান্ত। এবার ত্রিপুরার হোটেল অ্যাসোসিয়েশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে কোনও পর্যটক ত্রিপুরায় এলে তাদের জন্য ত্রিপুরায় হোটেল দেওয়া হবে না।

অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সচিব সৈকত ব্যান্যার্জী বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন এবং সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যের সব হোটেল ও রেস্তোরাঁয় বাংলাদেশি নাগরিকদের পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। তবে যারা পূর্বে থেকে হোটেলের পরিষেবা নিচ্ছেন, তাদের শুধু থাকতে দেয়া হবে। অন্যদের পরিষেবা দেয়া হবে না। এছাড়া, সাময়িক সময়ের জন্য প্রত্যেক রেস্তোরাঁর সামনে স্টিকার লাগানো হবে। বাংলাদেশিদের ঢুকতে দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।

ত্রিপুরায় বাংলাদেশি মিশনের কাছে বিরাট মিছিল বের করেছিলেন সেখানকার বাসিন্দারা। হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে এই মিছিল। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলার প্রতিবাদে এই মিছিল।

এদিকে বাংলাদেশি মিশনের মধ্যে অন্তত ৫০জন প্রতিবাদকারী ঢুকে পড়েন। তাদের দেখে ভয় পেয়ে যান সেখানকার স্টাফরা। ভারত জানিয়েছেন, কূটনৈতিক কোনও সম্পত্তিতে আঘাত হানাটা ঠিক নয়।

তবে ত্রিপুরার হোটেল অ্যাসোসিয়েশের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ত্রিপুরাতেও ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। সেখানেও প্রতিবাদের ঝড় বইছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে ফুঁসছে ত্রিপুরার বাসিন্দারাও। একের পর এক প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হচ্ছে।

এর আগে বাংলাদেশে ভারতগামী বাসের উপর হামলা চালানো হয়েছিল। তা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন ত্রিপুরার মুখ্য়মন্ত্রী।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহা বলেছিলেন, শনিবার বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিশ্বরোডে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী বাসে যে হামলার কথা বলা হচ্ছে এবং দেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের দ্রুত সংশোধন করা উচিত, অন্যথায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা ভাবাই যায় না। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তারা যদি নিজেদের সংশোধন করে নেয় তাহলে তো ভালোই, নইলে আরো অনেক ঘটনা আছে বলে শুনেছি। আমি সেই তথ্যগুলি যাচাই করার পরে মন্তব্য করব, তবে সেখানে যা চলছে তা ভাল নয়, ’ জানিয়েছিলেন ত্রিপুরার মুখ্য়মন্ত্রী। সেখানকার (বাংলাদেশ) সংখ্যালঘুদের ওপর তাদের নৃশংসতা বিশ্ববাসী দেখছে। আমি আশা করি এই ঘটনাগুলি আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রীয় নেতারা পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা নিশ্চয়ই সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। ত্রিপুরা যেহেতু তিন দিক থেকে বাংলাদেশ দ্বারা বেষ্টিত, তাই আমরা বিএসএফ এবং ডিজিপির সঙ্গে কড়া নজরদারি নিয়ে আলোচনা করেছি।

ত্রিপুরার হোটেল পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ হওয়ায় বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত একটি বড়সড় প্রভাব ফেলতে পারে। দুই দেশের মানুষদের মধ্যে সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক যোগাযোগের ভিত্তি দীর্ঘদিনের। এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে উভয় দেশের প্রশাসনের মধ্যে আলোচনা হওয়া জরুরি।

(ঢাকাটাইমস/৩ ডিসেম্বর/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ভার্টিগো: কতটা ভয়ানক এ রোগ? চিকিৎসাই বা কী
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে ইউএনএইচসিআর
ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তার সিএসএএ ফেলোশিপ অর্জন
যুবদল সভাপতি মুন্নার বোনের ইন্তেকাল, বিএনপি মহাসচিবের শোক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা