সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমসহ ১২ জনের নামে অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলা

ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ২০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে দিনাজপুরের কোতয়ালী থানায় অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (পরিদর্শক) মো. মতিউর রহমান।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় যুক্তরাজ্য প্রবাসী দিনাজপুর শহরে মান্সিপাড়া মহল্লার আব্দুস সালাম তালুকদারের পুত্র ওলিউর রহমান নয়ন বাদী হয়ে সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ২০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছেন।’
মামলায় অপর উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- স্বেচ্ছাসেবক লীগের জেলা সভাপতি আবু ইবনে রজবী, আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান, রশিদুল ইসলাম, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড কর্মচারী সমিতির সভাপতি মাসুদ আলম, ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউর রহমান জিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা ও ঠিকাদার শাহ আলম, ধীমান সরকার, সাবেক পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মুক্তি বাবু ও যুব মহিলা লীগ নেত্রী সৈয়দা সেলিনা মমতাজসহ অজ্ঞাতনামা ২০ জন।
বাদী তার মামলায় অভিযোগ করেছেন, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি শহরের মুন্সিপাড়া লুৎফুন্নেসা টাওয়ারের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় নিজ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৎকালীন প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে উদ্বোধন করিয়েছিলেন। এ ঘটনায় আসামিরা তার উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
বাদীর অভিযোগ, ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে আসামিরা দলবদ্ধ হয়ে তার প্রতিষ্ঠানে এসে হুমকি দেয় এবং বলে, আসামি ইকবালুর রহিমকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো নেতাকে দিয়ে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করানো ঠিক হয়নি এবং এ জন্য তার কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি দুপুরে বাদী ওলিউর রহমান নয়নকে আসামিদের দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ায় তাকে অপহরণ করে আসামি আবু ইবনে রজবীর সদর উপজেলার বাঙ্গিবেচা ঘাটের পাশে তার রিসোর্টে নিয়ে গিয়ে আটক করে রাখে। পরে আসামিদের নির্যাতনে বাধ্য হয়ে বাদী ওই দিন বিকালে তার স্কুলের কর্মচারী সাক্ষী মিজানুর রহমান ও মিজানুর রহমান জুয়েলের মাধ্যমে আসামি রশিদুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান জিয়া ও ধীমান সরকারকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা হিসেবে পরিশোধ করেন।
আসামিরা চাঁদা পেয়ে অবশিষ্ট ৭০ লাখ টাকা স্বল্প সময়ের দেওয়ার অঙ্গীকারে ওলিউরকে ছেড়ে দেয়।
ওলিউর তার মামলায় অভিযোগ করেন, আসামি ইকবালুর রহিমের প্রভাবে পরবর্তীতে আসামি সৈয়দা সেলিনাল মমতাজ বাদী হয়ে তার কন্যাকে ভিকটিম সাজিয়ে ওলিউর রহমানের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেন। একটি নিয়মিত মামলা এবং অপরটি নারী নির্যাতন আইনে। এই মামলা দুটি অনেক অর্থের বিনিময়ে আপসে নিস্পত্তি করা হয়েছে।
এরপর ওলিউর রহমান নয়ন নিরাপত্তার অভাবে দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্য চলে যান। বর্তমানে দেশে মামলা দায়ের ও বিচারের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দেশে ফিরে বৃহস্পতিবার রাতে আসামিদের বিরুদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করেছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৮মার্চ/এজে)

মন্তব্য করুন